চুনারুঘাটে স্বামী–স্ত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হত্যা না আত্বহত্যা ?

0
491
চুনারুঘাটে স্বামী–স্ত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হত্যা না আত্বহত্যা ?

মিজানুর রহমান,চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ) থেকেঃ  চুনারুঘাটে স্বামী–স্ত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে নানা গুঞ্জন, হত্যা না আত্বহত্যা ? এ নিয়ে আলোচনা সমালোচনা সর্বত্র। কিন্তু অনেকের সন্দেহের তীর ভাইয়ের দিকে!এ ঘটনায় মা-বাবা হারানো দুই শিশু সন্তানের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত!

উপজেলার দক্ষিন নরপতি (পুকুর ভাঙ্গা) গ্রামের  স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার নিয়ে  এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় দিন দিন বেড়েই চলছে। আত্মহত্যা না হত্যা এ নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন । চুনারুঘাটের একদল সাংবাদিক টিমের মাধ্যমে গতকাল সরেজমিনে ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকাবাসীর কাছ থেকে অনেক গোপনীয় তথ্য বের হয়ে আসছে। গত ৫ নভেম্বর উপজেলার নরপতি গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে আব্দুর রউফ (৩০) ও তার স্ত্রী আলেয়া আক্তার (২৮) এর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

একই ওড়না দিয়ে নিহত আঃ রউফ ও স্ত্রী  আলেয়ার ঝুলন্তের প্রাথমিক আলামত দেখে স্হানীয় এলাকাবাসী ও  পরিবারের কাছে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। আত্বহত্যার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেনই না এলাকাবাসী ও সুধী মহল। নিহত রউফ আলেয়ার রায়হান (৯) ও ফরহাদ (৫) নামে  ফুটফুটে দুটি পুত্র সন্তান রয়েছে। মা-বাবা হারানো দুটি পুত্র সন্তানের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত । কে দাড়াবে তাদের পাশে? ঘটনার দিন তারা একই ঘরের পাশের রুমেই প্রতিদিনের ন্যায় ঘুমিয়ে পড়ে। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে তাদের মা-বাবাকে ঝুলন্ত অবস্থা দেখে বড় ছেলে রায়হান বাড়ীর পাশে রাস্তায় গিয়ে লোকজন ও পরিবারকে জানালে  লোকজন ও পরিবার চুনারুঘাট থানা পুলিশকে খবর দেয়। 

পরে পুলিশ এসে স্বামী আঃ রউফকে ঝুলন্ত ও স্ত্রী আলেয়াকে পালংয়ের উপর গলায় একই ওড়না পেছানো বসা অবস্থায়  মৃত দেখতে পায়। সহকারী পুলিশ সুপার মাধবপুর (সার্কেল) মহসিন আল মুরাদের নেতৃত্বে একদল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হবিগঞ্জ মর্গে প্রেরন করেন।

এদিকে আলেয়াকে বসা অবস্থায় ওড়না পেছানো মৃত দেখে সন্দেহ যেন বাড়ছেই। বসা অবস্থায় আলেয়ার ওড়না পেছানো আত্বহত্যার কথা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না এলাকাবাসীও সুধীমহল।

এ দিকে নিহত রউফের ছোট ভাই রফিকুল ইসলাম চঞ্চলকে নিয়ে চলছে নানা আলোচনা সমালোচনা। অপর একটি সুত্র জানায়,নিহত আঃ রউফের সাথে বাড়ীর জমা জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে তার আপন ছোট ভাই রফিকুল ইসলাম চঞ্চল মিয়ার বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে স্হানীয় মুরুব্বিয়ানরা কয়েকবার শালীস বিচার করলে ও কোন সুরাহা হয়নি। এ জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়েই এ রকম দুর্ঘনা ঘটতে পারে বলে একটি মহলের ধারনা।

উল্লেখ্য,রফিকুল ইসলাম চঞ্চল ইতিপূর্বে মদ গাজাঁ, নারী কেলেঙ্কারিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত থাকার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে বলে স্হানীয় সুত্রে জানা যায়। নানান অপরাধে সে কয়েকবার তার অপকর্মের জন্য জেল ও কেটেছে। তার অসামাজিক ব্যবসাসহ বিভিন্ন ধরনের অপকর্মের দায় ভার সইতে না পেরে এলাকাবাসী মাইকিং করে চঞ্চলকে গ্রাম থেকে বিতারিতও করেছেন। পারিবারিক কিংবা যে কোন ধরনের মত-বিরোধ নিয়ে তার ভাই ও  ভাবীকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখতে পারে বলে অনেকেরই ধারনা। তবে চঞ্চলের বিরুদ্ধে ভয়ে এলাকার কেউই মুখ খুলতে রাজি নন।

চঞ্চল জানায়, গাজা ও নারীব্যবসাসহ আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে তা সত্য নয়। এলাকাবাসী আমাকে ষড়যন্ত্রকরে বিতারিত করেছিল।

চুনারুঘাট থানা অফিসার ইনর্চাজ মোঃ আলী আশরাফ জানান, এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। মেডিকেল (পিএম) রিপোর্ট আসার পর মূল রহস্য জানা যাবে। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। এলাকাবাসীর ধারনা পুলিশের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমেই বেরিয়ে আসবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।