চুনারুঘাটে মোবাইল কোর্টের হুমকী দিয়ে চাঁদা দাবী 

    0
    241
    চুনারুঘাট প্রতিনিধিঃ  সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস আতঙ্ক। দোকানপাট বন্ধ হয়ে যেতে পারে এমন শঙ্কায় গত কয়েকদিন ধরে বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বেচাকেনা। এ সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ীরা চাল,পেয়াজসহ বেশকিছু পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে বলে বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযোগ এসেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কয়েকটি বাজারে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। জরিমানা করেছে কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানকে।
    এমন সুযোগে সুযোগ সন্ধানী একটি চক্র মোবাইল কোর্ট পরিচালনা টিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই পরিচয়ে চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নাম ব্যবহার করে ভ্রাম্যমান আদালত নিয়ে ব্যবসয়ীদের কাছে চাঁদা দাবী করছে বলে অভিযোগ উঠেছে ।
    আজ শুক্রবার দুপুরে, ০১৭১৩১৬৬৬২১ নাম্বার থেকে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে মোবাইল কোর্ট আসিতেছে বলে জানায় মিষ্টি মেলার মালিক সুজিত দেব, মধুমেলার মালিক মোশাহিদ তালুকদার, শ্রী দুর্গা মিষ্টি দোকান মালিক নিরেশ চন্দ্র পালসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে। পাশাপাশি আপনাদেরকে মোটা অংকের টাকা জরিমানা করা হবে। এখনও সময় আছে ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাইল কোর্টে আসার আগে তাৎক্ষনিক যোগাযোগ করুণ। নতুবা মোটা অংকের জরিমানা এবং ব্যবসা প্রতিষ্টান বন্ধ করে দেয়ার হুমকী দেয়া হয়।
    কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই চুনারুঘাট ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরিচয়ে ০১৩১৫০৩৬০৯৭ নাম্বার থেকে ফোন দিয়ে শ্রী দুর্গা মিষ্টি দোকান মালিক নিরেশ চন্দ্র পাল, মিষ্টি মেলার মালিক সুজিত দেব, মধুমেলার মালিক মোশাহিদ তালুকদারসহ বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে জানায় আপনাদের দোকানে ভেজাল বেশি বড় অংকের জরিমানা দিতে হবে। এরই মধ্যে মিষ্টি মেলার মালিক সুজিত দেবের কাছ থেকে ০১৭১৩১৬৬৬২১ নাম্বারে ২ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে যায়।
    বিষয়টি বাজার ব্যবসায়ীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে সন্দেহের সৃষ্টি হয় এবং জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। তাৎক্ষনিক মধুমেলার মালিক মোশাহিদ তালুকদার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সত্যজিৎ রায় দাশ এর  সাথে যোগাযোগ করেন।
    উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভ্রাম্যমান আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট টিম থেকে কোন প্রকার ফোন করা হয়নি। উল্লেখিত নাম্বারে ভোক্তভুগীদের অভিযোগ করতে বলেন। এ প্রেক্ষিতে তিনি বলেন প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকালে পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত থাকবেন। ভ্রাম্যমান আদালত নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত হবে এক্ষেত্রে জরিমানা আদায় করে ডিসিআর (জরিমানা আদায়ের রশিদ) দিয়ে দোকান মালিককে বুঝিয়ে দেয়া হয়। কোন অবস্থাতেই ভ্রাম্যমান আদালত ব্যতীত কোন প্রতারক চক্র যদি ভ্রাম্যমান আদালতের নামে ফোন দেয় অথবা মোবাইল কোর্ট পরিচয় দিয়ে বাজারে আসে তাদের কোন প্রকার সন্দেহ হলে তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট থানার অফিসার ইনচার্জ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানাতে বলা হয়েছে।
    একই সাথে তিনি জনান যে, বাজার সিন্ডিকেটের সাথে যারা জড়িত তাদের প্রতি তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি দেন। বাজার সিন্ডিকেট করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন ইতিপূর্বে বিভিন্ন জায়গাতে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অফিসিয়াল মোবাইল নাম্বার ক্লোন করে অনেক সময় এধরনের প্রতারনা করতে দেখা গেছে।এইক্ষেত্রেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন স্ব-শরীরে ওনার অফিসে হাজির হয়ে এবিষয়ে সত্যতা যাচাই ও সকল ধরনের লেনদেন পরিহার করতে নির্দেশ প্রদান করেন।
    এ বিষয়ে চুনারুঘাট থানার ওসি (তদন্ত) চম্পক দাম বলেন, পুলিশ পরিচয়ে যদি কেহ ফোন করে থাকে তাহলে সে প্রকৃত পুলিশ কিনা বিষয়টি ভেরিফাই করা দরকার। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করলে সে যেই হোকনা কেন আমরা আইনগত ব্যবস্থা নিব।