চুনারুঘাটে মাদ্রাসা ট্রাস্টি বোর্ডের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

    0
    204

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২০অক্টোবর,চুনারুঘাট প্রতিনিধিঃ বর্তমান শিক্ষাবান্ধব সরকার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে স্বজনপ্রীতি ও অর্থলিপ্সার করালগ্রাস থেকে মুক্ত করে প্রকৃত যোগ্য শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১৬ ইং সাল থেকে এন.টি.আর.সি.এ এর মাধ্যমে নিয়োগ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। সরকার কর্তৃক গৃহীত যুগান্তকারী এ সিদ্ধান্ত দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মান উন্নয়নে এক মাইল ফলক হিসেবে প্রশংসিত হলেও কায়েমী স্বার্থবাদীরা এ সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে এই প্রক্রিয়াকে বিভিন্ন ভাবে বাধাগ্রস্থ করার হীন চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে আলহাজ্ব মৌলভী আব্দুল কাদির ট্রাষ্ট্রি বোর্ডের অধীনে পরিচালিত চুনারুঘাটের নুরমোহাম্মদপুর দারুল ইসলাম রহমানিয়া ফাযিল মাদ্রাসার ট্রাষ্টি বোর্ড দূর্নীতিতে বেসামাল হয়ে পড়েছে। এ যেন দেখার কেহ নেই!

    মাদ্রাসার কোড নং- ১৮৮৭০,ই.আই.আই.এন নং- ১২৯৪১১। ট্রাষ্ট্রি গভর্নিং বডি কর্তৃক পরিচালিত এই মাদ্রাসাটির সভাপতির বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতিসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সরকারের নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্ঠানটিতে চলছে সভাপতির ইচ্ছানীতিতে পরিচালনা করছেন প্রতিষ্ঠানটি। ফলে দিন দিন দূর্নীতিতে বেসামাল হয়ে পড়েছে উক্ত মাদ্রাসার গভর্নিং বডি। উক্ত মাদ্রাসায় একাধিক শূন্যপদ থাকা স্বত্তেও প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষ শূন্য পদের তথ্য সরকারকে সরবরাহ না করে নিজের ইচ্ছামতেই চালাচ্ছেন মাদ্রাসাটি। এর ফলে দিন দিন শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের দিকে পতিত হচ্ছে।

    এদিকে সরকার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ৩০ জুন ২০১৬ ইং তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে শূন্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এমন শূন্য পদের তালিকা ৬ জুন থেকে ২৫ জুন ২০১৬ ইং তারিখের মধ্যে সরকারকে সরবরাহ করার জন্য এন.টি.আর.সি.এ এর ওয়েব সাইটে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু অত্র প্রতিষ্ঠানটি এ নির্দেশ অমান্য করে। সর্বশেষ আগষ্ট ২০১৬ ইং তারিখে সরকার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পূর্বের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী যথা সময়ে শূন্য পদের তালিকা প্রদান করেনি তারা এর কারণ ব্যাখ্যাসহ শূন্য পদের তালিকা প্রদান করার জন্য বলা হয়।

    চুনারুঘাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ/তাহার প্রতিনিধিকে মিটিং এ আলোচনা করে জানিয়ে দেন। কিন্তু এর পরেও অত্র প্রতিষ্ঠান শূন্য পদের কোন তালিকা প্রদান করেনি। যে কারণে এন.টি.আর.সি.এ প্রকাশিত শূন্য পদধারী প্রতিষ্ঠানের তালিকায় অত্র প্রতিষ্ঠানের নাম নেই। অথচ প্রতিষ্ঠানটিতে ইংরেজি ও আরবি প্রভাষকের পদ ২০১৫ সাল হতে শূন্য রয়েছে। সহকারী শিক্ষক (শরীরচর্চা) পদটি শুরু থেকেই শূন্য রয়েছে। চুনারুঘাট উপজেলার বি ত চাকুরী প্রার্থীগণ অত্র প্রতিষ্ঠানের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে শূন্য পদের তালিকা সরকারকে সরবরাহ করার জন্য মৌখিকভাবে অনুরোধ করলেও তাহারা বিষয়টি না জানা ও না শোনার কৌশল অবলম্বন করেন।

    ওই ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানান ট্রাষ্টি গভর্নিং বডির সভাপতি হিসেবে যিনি দায়িত্ব পালন করছেন তিনি কুমিল্লা জেলার দেবীদ্বার উপজেলার সৈয়দপুর কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। জানা যায় সভাপতি সাহেবের ২য় ছেলে চলতি বছর কোন কারণবশতঃ বর্তমান নিয়োগে প্রার্থী হতে না পারায় অত্র মাদ্রাসার নিয়োগকে সভাপতি সাহেব তাহার প্রভাব বলে পরবর্তী বছরের জন্য রেখে দেন। উল্লেখ্য, গভর্নিং বডির হাতে এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে সভাপতি সাহেব নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার করে সর্বশেষ যে নিয়োগটি প্রদান করেছেন তা হল (আরবি প্রভাষক পদে) তাঁর বড় ছেলে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাওলানা আবু তাহের মোঃ ছালেহ উদ্দিন, তিনি আলহাজ্ব মৌলভী আব্দুল কাদির ট্রাষ্ট্রের সভাপতি হওয়ার পর হতে ট্রাষ্টের ক্ষমতা বলে মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভাপতি হয়েছেন। কোনো নির্বাচনী পদ্ধতিতে হননি। মাদরাসাটিতে এ পর্যন্ত গভর্নিং বডির সভাপতি পদে কোন নির্বাচন হয়নি। অভিভাবক সদস্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে সভাপতি সাহেব তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করে নির্বাচনী পদ্ধতিকে এড়িয়ে তার পছন্দের লোক দিয়ে পূর্ণ করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকে বলেন যে, মাদ্রাসাটি ট্রাষ্টের অধীনে আসার পর থেকে এ পর্যন্ত কোন অভিভাবক প্রতিনিধি পদের নির্বাচন হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যান্য ক্যাটাগরিতেও প্রায় একই অবস্থা বিরাজমান বলে অভিযোগ রয়েছে।

    খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষকদের চলমান শূন্যতাকে সভাপতি সাহেব তার পছন্দের লোক দিয়ে তার পছন্দের পদ্ধতিতে চালিয়ে যাচ্ছেন। মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীর নিকট থেকে জানা যায়, মোঃ আল আমিন নামে একজন শিক্ষক বিগত কয়েক মাস শিক্ষা দান করে আসছেন। বর্তমানে তিনি অত্র প্রতিষ্ঠানে কর্মরত নেই। ট্রাষ্টি বোর্ডের পরিচালকের দূর্নীতিতে জর্জরিত প্রতিষ্ঠানটি সরকারের পূর্ণাঙ্গ নীতিমালার আওতায় নিয়ে পরিচালনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছেন অভিভাবক ও এলাকার সচেতন মহল।