চিত্রে যে দুটি বস্তু শনাক্ত করছে সেগুলো অস্পষ্ট ?

    0
    232

    আমারসিলেট24ডটকম,২০মার্চঃ ২৩৯ আরোহীসহ মালয়েশিয়ার নিখোঁজ জেটলাইনারটির সম্ভাব্য ধ্বংসাবশেষের স্যাটেলাইট চিত্র পাওয়ার যে তথ্য দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া, তা নিয়ে চলছে নানা বিশ্লেষণ। অস্ট্রেলিয়ান ম্যারিটাইম সেইফটি অথরিটি (এএমএসএ) জানিয়েছে, উপগ্রহ চিত্রে যে দুটি বস্তু শনাক্ত করা হয়েছে, সেগুলো অস্পষ্ট। যে দুটি বস্তু দেখা গেছে, তার মধ্যে বড় টুকরোটির দৈর্ঘ্য ২৪ মিটার বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। এএমএসএ’র ইমার্জেন্সি রেসপন্স বিভাগের মহাব্যবস্থাপক জন ইয়াং বলছিলেন, বস্তুগুলির আকৃতি গ্রহণযোগ্য এবং সম্ভবত সেগুলো ঢেউয়ের কারণে পানির উপরিভাগে ডুবছে ও ভেসে উঠছে। এদিকে অস্ট্রেলিয়া ভারত মহাসাগরের দক্ষিণাংশে যে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করছে, সেখানে পানির গভীরতা বেশ কয়েক হাজার মিটার পর্যন্ত। সমুদ্রে শান্ত থাকলেও, দূরের বস্তু দেখতে সমস্যা হওয়ায় উদ্ধার তৎপরতার গতি মন্থর হতে পারে বলে জানিয়েছেন জন ইয়াং।

    অপরদিকে,অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবোট বলেছেন, স্যাটেলাইট চিত্রে দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে দুটি বস্তু দেখা গেছে। ওই বস্তু দুটি মালয়েশিয়ার নিখোঁজ যাত্রীবাহী বিমানের ধ্বংসাবশেষ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
    বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টে তিনি এ তথ্য জানান।অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী পার্লামেন্টে বলেন, “দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের ফ্লাইট এমএইচ৩৭০ অনুসন্ধানের বিষয়ে নতুন ও বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাওয়া গেছে। স্যাটেলাইট চিত্রের ভিত্তিতে এই অনুসন্ধানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সম্ভাব্য দুটি বস্তুর পেয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মেরিটাইম সেফটি অথরিটি (এএমএসএ)। স্যাটেলাইট চিত্র বিশ্লেষণ করে এই অনুসন্ধান-সংশ্লিষ্ট দুটি বস্তু চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।’
    স্যাটেলাইট চিত্রে ধরা পড়া ওই দুটি সম্ভাব্য ধ্বংসাবশেষের মধ্যে একটির আকৃতি ২৪ মিটার বলে জানিয়েছে এএমএসএ।
    উল্লেখ্য, বোয়িং ৭৭৭ কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিংয়ের উদ্দেশে যাত্রা করার পর ৮ মার্চ ভোরে এটি নিখোঁজ হয়।
    এদিকে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর মালয়েশিয়ার ভারপ্রাপ্ত পরিবহনমন্ত্রী হিসামউদ্দিন হুসাইন কুয়ালালমপুরে সাংবাদিকদের জানান, নিখোঁজ বিমান অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে এটি একটি নতুন দিক। তিনি বলেন, আমরা প্রথমদিন থেকেই বিমান অনুসন্ধানে কাজ করে যাচ্ছি। প্রত্যেকটি ঘটনা ও দিক খতিয়ে দেখছি। এবার আমি কেবল আশা করতে পারি, এটা একটা ইতিবাচক অগ্রগতি। প্রত্যেকটি নতুন দিকই একটি আশা। আমরা বিষয়টি পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে চাই।
    স্যাটেলাইট চিত্রে দেখতে পাওয়া ওই বস্তু দুটির অবস্থান নির্ণয়ে একটি ওরিয়ন বিমান সংশ্লিষ্ট এলাকায় পাঠানো হয়েছে বলে জানান অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী। আরও তিনটি বিমান যাচ্ছে। টনি অ্যাবোট জানান, স্যাটেলাইট চিত্রে দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে দুটি বস্তু দেখার বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাকের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।
    মালয়েশীয় প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করে অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই বস্তুগুলোর অবস্থান চিহ্নিত করা খুবই কঠিন কাজ হবে। তা ছাড়া নিখোঁজ হওয়া এমএইচ৩৭০ ফ্লাইট অনুসন্ধানের সঙ্গে ওই বস্তুগুলোর কোনো সংশ্লিষ্টতা নাও থাকতে পারে।
    মালয়েশিয়ার আহ্বানে দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে বিমান অনুসন্ধানে নামে অস্ট্রেলিয়া।
    এর আগেও নিখোঁজ বিমানের সম্ভাব্য ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার খবর বের হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তদন্তে তা ভুল প্রমাণিত হয়।
    মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটটি ২৩৯ জন আরোহী নিয়ে ৮ মার্চ ভোরে নিখোঁজ হয়। মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে চীনের বেইজিংয়ের উদ্দেশে যাত্রার এক ঘণ্টা পর এটির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
    বিমানটিকে খুঁজে বের করতে ব্যাপক অভিযান চলছে। এতে ২৬টি দেশ অংশ নিয়েছে বলে মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ বলেছে। স্থল, নৌ ও আকাশপথে চালানো হচ্ছে এ অভিযান।