চিকিৎসকরা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বসেই হাতিয়ে নিচ্ছেন লক্ষ লক্ষ টাকা

    0
    260

    “জৈন্তাপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিজিটাল হাজিরা,নিজ চেম্বারে ব্যস্ত চিকিৎসক, কর্মস্থল ফাঁকা, ভোগান্তিতে রোগী ও স্বজনরা”


    রেজওয়ান করিম সাব্বির, জৈন্তাপুর (সিলেট) প্রতিনিধি: অনিয়ম ও দূর্নিতির মাধ্যমে জৈন্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চললেও কর্তৃপক্ষ নিরব ভূমিকা পালন করছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সরকারি কোয়ার্টাসে বসেই হাতিয়ে নিচ্ছেন শ্রমজীবি শ্রমিকের ঘাম ঝরানো কষ্টের লক্ষ লক্ষ টাকা। ৫০ শষ্যার হাসপাতালে উন্নিত করা হলেও প্রশাসনিক অনুমতি না থাকায় অব্যবহৃত অবস্থায় আছে নতুন ভবনটি।
    সরেজমিনে যানা যায়- জৈন্তাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স দীর্ঘ দিন হতে নানা অনিয়ম ও দূর্নিতি কর্মকান্ড চলেছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরো এরিয়া পরিনত হয়েছে আর্বজনার ভাগার ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে সেই ১০-১৫ বৎসরের পুরোনে বেড। সরকারী নিয়মানুযায়ী সকাল ৮টা থেকে মেডিক্যালে রোগী দেখার কথা থাকলেও তা কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ। সন্ধ্যা হতে না হতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়ে উঠে মাদক সেবীদের নিরাপদ আস্থানায়। নিজপাট ইউনিয়নের বাসিন্ধা চিকিৎসা নিতে আসা শাহেদ আহমদ জানান- আমার বোনকে নিয়ে আমি ও আমার মা সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসি, দুপর ১২টা পযর্ন্ত কোন ডাক্তার না পেয়ে বাধ্য হয়ে বোনকে হাসাপাতলে রেখেই এই চিকিৎসককে প্রাইভেটের ফি দিয়ে সেবা নিতে হয়েছে। কামরাঙ্গীখেল এলাকার বাসিন্ধা আব্দুল্লাহ জানান- আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ঘুরে যান- আমার ছেলেটিকে সকালে হাসপাতালে ভর্তি করেছি, কিন্তু সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত একজন ডাক্তার পেলাম না।
    জৈন্তাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মাওলানা আলী আহমদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে স্যাটাস লিখেন- জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স “৫০শয্যায় উন্নিত হলে, উন্নিত হয়নি চিকিৎসা সেবার মান ও পরিবেশের” তিনি আরও লিখেন সকাল ১১টায় ভর্তি হলেও বিকাল ৩টা পর্যন্ত কোন ডাক্তার এসে রোগী দেখে নাই। নার্সদের সাথে তিনি আলাপকালে জানতে পারেন বিকালের পর ডাক্তার রোগী দেখবে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবেশ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ফেইসবুক স্যাটাস দেন।
    অনেকেই জানান ডাক্তার উজ্জ্বল কান্তি দত্ত জৈন্তাপুরে যোগদানের পর থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও নাজুক পরিস্থিতি ধারন করেছে। তিনি নিজেও রোগী দেখতে ব্যস্থ দিন কাটান চেম্বারে। এছাড়া বিভিন্ন সময় থাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাহিরে চিকিৎসা সেবা দিতে পাওয়া যায়। যেখানে অফিস প্রধান আউটডোর ও প্রাইভেট চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্থ দিন পার করছেন সেখানে অন্যান্য চিকিৎসদের পাওয়া দুরহ।
    সরজমিনে গিয়ে মেডিকেলের পরিসংখ্যানবিদের সাথে কথা বলে জানা যায় মেডিকেলে বর্তমানে ৭জন ডাক্তার কর্মরত আছেন তারা সকাল ৮টা হতে ২টা পর্যন্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী দেখেন। ৭জন ডাক্তার এর মধ্যে ১জন মিটিং আরও ২জন ট্রেনিং রয়েছেন। অন্যান্যরা নিজেদের চেম্বারে রোগী দেখন। তিনি আরোও জানান মেডিকেলে বসানো হয়েছে ডিজিটাল হাজিরা, যেখানে ডাক্তাররা হাজিরা দিয়ে চলে নিজ চেম্বারে রোগী দেখার কাজে। জরুরী বিভাগের রুটিনে দেখা যায় ২৪ঘন্টা কোন না কোন ডাক্তারের ডিউটি খাতায় হাজিরা রয়েছে বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
    স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা উজ্জ্বল কান্তি দত্তের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন- তিনি জরুরী মিটিং রয়েছেন কোন তথ্য জানতে আপনি সুবল চন্দ্র বর্মন কাছে ফোন দিন।
    সুবল চন্দ্র বর্মন কাছে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে চিকিৎসকের সহকারী বলেন স্যার (সুবল চন্দ্র বর্মণ) চেম্বারে আছেন। চেম্বারে গিয়ে দেখা গেল সুসজ্জিত চেয়ার টেবিল পড়ে রয়েছে কিন্তু স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কোথাও চিকিৎসক নেই।