চা’য়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গলে প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের ভিড়

    0
    309

    বিক্রমজিত বর্ধন: মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার দর্শনীয় স্থানগুলোতে বেশী ভিড় করেছেন প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকরা। ঈদের আনন্দকে উপভোগ করতে প্রকৃতির পরশ নিতে এবং প্রকৃতির বুকে নীজেকে উজার করে দেওয়ার মজাই আলাদা। তাইতো যানজট আর কোলাহলমুক্ত পরিবেশে ঈদের আনন্দকে উপভোগ করতে পর্যটন নগরী ও চায়ের রাজধানী প্রকৃতির লীলাভূমি খ্যাত শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জের সংরক্ষিত বনাঞ্চল নিয়ে গড়ে ওঠা লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ প্রতিটি পর্যটন স্পটগুলো হাজারও পর্যটকদের ভিড়ে উৎসবমুখর।

    আনন্দের এই দিনগুলিতে দূর-দূরান্ত থেকে বাস,মিনিবাস, প্রাইভেটকারে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসছেন বধ্যভূমী-৭১,লাউয়াছড়া,বিটিআর আই,নীলকন্ঠ চা কেবিন, মাধবপুর লেইক, হামহাম জলপ্রপাত সহ শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলার দর্শনীয় স্থান গুলোতে।

    শনিবার ঈদের চতুর্থ দিন সারাদিন ঘুরে বিভিন্ন পর্যটন এলাকায় ভ্রমণপিপাসুদের এমন চিত্র দেখা যায়।

    এদিকে ছুটিতে নির্মল সবুজের স্বাদ নিতে চায়ের রাজধানী শ্রীমঙ্গলের বিটিআরআই, মাধবপুর লেইক,বধ্যভূমি, লাউয়াছড়া ও নীলকন্ঠের ১০কালার চা বিমোহিত করেছে পর্যটকদের। শুধু তাই নয়, জেলার বড়লেখা উপজেলার পাথাড়িয়া পাহাড়ের গা বেয়ে নেমে আসা দেশের দীর্ঘতম জলপ্রপাত মাধবকু-ে বছরের অন্যান্য ছুটির সময়ের মতোই এবারের ঈদের ছুটিতে নেমেছে পর্যটকদের ঢল। অনেকে ছুটে এসেছেন যানজট আর কোলাহলমুক্ত পরিবেশে ঈদের আনন্দকে উপভোগ করতে।

    দিনভর গভীর সবুজ অরণ্যের বুকে কখনও বৃষ্টি, কখনও রোদের লুকচুরি খেলায় যেন নুতন মাত্রা যোগ করেছে পর্যটকদের। চিরহরিৎ সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে কিংবা বৃক্ষের ডালের দিকে ছিল হাজারও ভ্রমণ পিপাসুদের নির্বাক দৃষ্টি। যদি একটি বারের জন্য হলেও শোনা যায় বিলুপ্ত প্রাণী উল্লুকের ডাক কিংবা গাছের ডালে দেখা যায় লজ্জাবতী অথবা চশমাপরা হনুমান। তবে নিরব এ স্থানে এতো লোকের সমাগম দেখে মাঝেমধ্যে দু’একটা চশমাপড়া হনুমান ছাড়া তেমন কোনও প্রাণী দেখতে পাননি পর্যটকরা।

    সবাই দলবেঁধে দিনভর ঘুরে বেড়িয়েছেন। দেখেছেন বিরল প্রজাতির গাছ আফ্রিকান টিকওক, সারি সারি ডুমুর, লটকন, সেগুন, আমলকি, জলপাইসহ নানা প্রজাতির বৃক্ষাদি। তবে দীর্ঘদিন যাবৎ রাস্তার সংস্কার কাজ না করায় সড়ক গুলোতে খানাখন্দ থাকায় যাতায়াতে অসুবিধা পোহাতে হচ্ছে পর্যটকদের। ঢাকা থেকে বন্ধুদের সাথে শ্রীমঙ্গলের চা বাগানে বেড়াতে এসে একথা জানালেন অনেকেই।

    রাস্তাঘাট বেশি ভাঙাচোরা থাকায় ইচ্ছে থাকলেও অনেক জায়গায় বেড়াতে যাওয়া হচ্ছে না। গাড়ির ড্রাইভারও যেতে চান না, মাঝপথে গাড়ী বিকল হয় যাওয়ার ভয়ে। অনেক পর্যটক একই কথা বলেছেন। স্থানীয় কয়েকজন রিসোর্ট ও দোকানি জানান, শুধুমাত্র রাস্তাঘাটে গর্ত ও খানাখন্দের কারণে গত বছরের চেয়ে এ বছর ভ্রমণপিপাসুর পরিমাণ খুবই কম।

    এদিকে বিগত বছরের চেয়ে এবছর ঈদের ছুটির দিনগুলিতে পর্যটকের সমাগম অনেক বেশি হয়েছে এবং ঈদের ছুটি থাকা পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক পর্যটকের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছেন সেখানকার কর্মকর্তারা। তাছাড়া লাউয়াছড়ায় বেড়াতে আসা পর্যটকদের দিকনির্দেশনা, বিনোদন ও নিরাপত্তা দিতে রয়েছেন পর্যটক পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও পুলিশ সেখানে সার্বক্ষণিকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে পর্যটক পুলিশের এক সাব ইন্সপেক্টরএর সাথে কথা বলে জানা যায়।

    ভ্রমণকে নিরাপদ ও নিরবিচ্ছিন্ন করতে আমাদের রয়েছে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা বলয়। লেমন গার্ডেন রিসোর্ট এর সত্ত্বাধীকারী মোঃ সেলিম আহমেদ বলেন মৌলভীবাজারে আসা ভ্রমণপিপাসু মানুষদের রয়েছে লেমন গার্ডেন রিসোর্ট এর প্রতি দারুণ আগ্রহ। আমরা সেভাবে বুকিং নিচ্ছি এবং আমাদের সেবার মান সম্পর্কে আমরা যথেষ্ট নজরদারী ও খুব সচেষ্ট বলে মনে করি।

    চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের পাশাপাশি মানুষ দারুন আগ্রহ নিয়ে সিলেটমুখী হচ্ছে। এজন্যে আমরা আশাবাদী। গ্রাহকদের পর্যাপ্ত সুবিধা দিতে আমরা বিভিন্ন ব্যবস্থা নিয়েছি।

    আশা করি মৌলভীবাজারে পর্যটকরা বেড়াতে এসে নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যে ঘোরাঘুরি করতে পারবেন।