চট্টগ্রামে শহীদ লিয়াকত আলীর ৩৩তম শাহাদাৎ বার্ষিকী অনুষ্ঠিত

    0
    238

    * ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে হত্যাকা- বন্ধ হবে না- আলমগীর ইসলাম বঈদী।
    * সত্যের সৈনিকদের হত্যা করে ছাত্রসেনার অগ্রযাত্রাকে দমানো যাবে না- মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম।

    সুখী, সমৃদ্ধ, সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আজ ভুলন্ঠিত। সড়কে লাশের মিছিল, বাতাসে মানুষের পোড়া মাংসের গন্ধ। খুন, ধর্ষণ, ছিনতাই, সন্ত্রাস, রাহাজানিতে অতিষ্ট জনসমাজ। লিয়াকত, হালিম, নুসরাত, তনু, মিতু, তাসফিয়া, নঈমদের রক্তের স্রোতে ভাসছে বাংলাদেশ। বিচার নাই, বিচারের বাণী কাঁদছে নীরব-নিভৃতে। যেই স্বপ্ন নিয়ে ৭১-এ বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল, সেই স্বপ্নভঙ্গের দ্বারপ্রান্তে যেন বাংলাদেশ! এই অসুস্থ বাংলাদেশ সুস্থ করতে প্রয়োজন আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা। এজন্য প্রয়োজ সচেতন নাগরিকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

    শহীদ লিয়াকত আলী (রহ.)’র ৩৩ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আজ ১৩ এপ্রিল’১৯ শনিবার সন্ধ্যা ৬ টায় মোমিন রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রনেতা রেজাউল করিম ইয়াসিনের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন, ইসলামী ফ্রন্ট চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর ইসলাম বঈদী। প্রধান আলোচক ছিলেন ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম। উদ্বোধক ছিলেন ইসলামী ফ্রন্ট নেতা মুহাম্মদ বেলাল হোসেন। মুহাম্মদ আমির হোসেনের পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য দেন, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান। আলোচনা সভায় মহানগর সম্পাদকমন্ডলীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মুহাম্মদ শিহাব, মুহাম্মদ হুমায়ুন কবির, মোয়াজ্জেম হোসেন মাসুম, মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান বাহার, মাহফুজুর রহমান, মুহাম্মদ জামশেদ, মুহাম্মদ শওকতুল করিম প্রমুখ।
    প্রধান অতিথি আলমগীর বঈদী বলেন, ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা না হলে হত্যাকা- বন্ধ হবে না। অন্যায় করে অপরাধীরা পার পেলে অন্যায়-অনাচার বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক। তাই দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পর্যন্ত যৌন নিপীড়ন, ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটছে। এমনকি ফেনীর নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার লোমহর্ষক ঘটনা অপরাধীদের পাপের ষোলকলা পূর্ণ করছে। এখন তাদের প্রতিরোধের পালা।
    প্রধান আলোচক ফরিদুল ইসলাম বলেন, শহীদ লিয়াকত আলীকে ১৯৮৬ সালের ১০ এপ্রিল চট্টগ্রাম কমার্স কলেজে ছাত্রসেনার নবীন বরণ থেকে বের হওয়ার সময় জামাত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা ছুরিকাঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। তারা চেয়েছিল সত্যের সৈনিক লিয়াকতকে হত্যা করে ছাত্রসেনার অহিংস আন্দোলনকে রুখে দিতে। কিন্তু পারেনি, পারবেও না। সত্যের সৈনিকদের হত্যা করে ছাত্রসেনার অগ্রযাত্রাকে দমানো যাবে না। লিয়াকতের পূর্বে ছাত্রসেনা কর্মী আবদুল মোস্তফা হালিমকে ১৯৮৪ সালে রাঙ্গুনিয়ায়, নুরুল আমিন রফিককে ১৯৮৫ সালে হাটহাজারীতে হত্যা করে উগ্রবাদি জামাতি-জঙ্গি-কওমী গোষ্ঠি। এমনকি এরপরও নঈম উদ্দীন রাউজান মুন্সীরঘাটায়, জিতু মিয়াকে হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে, আবু ছাদেককে চট্টগ্রামের পটিয়ায় হত্যা করে। তবুও ছাত্রসেনাকে দমানো যায় নি। বছরের পর বছর বিচারের দাবি করা হলে এসব হত্যাকা-ে সরকারের পদস্থ ব্যক্তিদের আশ্বাস ছিল, কিন্তু কোন হত্যাকা-ের বিচার হয় নি। বিচারহীনতা বা বিচারে দীর্ঘসূত্রীতার ফলে ন্যায় বিচার সম্ভব হয় নি। এভাবে দেশে জুলুমবাজদের রাজত্ব চলছে। তাই দেশে প্রতিটি প্রান্থে লাশের মিছিল বাড়ে, কয়েকদিন প্রতিবাদ হয়। প্রতিবাদ বন্ধ হলে প্রশাসনও চুপ হয়ে যায়। আবার রক্তপিপাসু অপরাধীরা অন্যকোন মা-বাবার কোল খালি করে। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না। যতক্ষণ পর্যন্ত সামাজিক-রাজনৈতিকভাবে জালেমদের প্রতিহত করা হবে না এ চক্র থেকে জাতি মুক্তি পাবে না।