গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে

    0
    248

    অতিথির সারিতে ঠাঁই হয়নি স্থানীয় নেতৃবৃন্দদের !

     

    আলী হোসেন রাজন,মৌলভীবাজার,গোয়াইনঘাট থেকে ফিরেঃ  উত্তর সিলেটের সর্ববৃহৎ বিদ্যাপীঠের নাম গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজ। কলেজটি ২ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪ সালে গোয়াইনঘাট উপজেলা সদরের সন্নিকটে পিরিজপুর গ্রামের পূর্ব মাঠে প্রতিষ্ঠিত হয়। গোয়াইনঘাট উপজেলা বাসির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্টিত হয় গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজ।

    প্রতিষ্টাকালীন সময়ে উপজেলার একমাত্র কলেজটি কালের বিবর্তনে গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রধান কলেজ হিসেবে নিজের নাম সবার উপরে রেখেছে। তৎকালীন সময়ে গোয়াইনঘাট উপজেলায় আটটি ইউনিয়ন ছিলো। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান গনের মধ্যে আব্দুস সামাদ (কুটু)  মিয়া, আব্দুল হাকিম চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফুর রহমান লেবু, হাজী সিরাজ উদ্দিন, লুৎফুল হক খোকন, মাষ্টার আব্দুন নুর,প্রয়াত বশির আহমদ চৌধুরী, হাজী মদরিছ আলীকে নিয়ে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মনির উদ্দিন গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজ প্রতিষ্টার লক্ষ্যে মতবিনিময় করেন।

    নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের পাশাপাশি গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষানুরাগী ব্যাক্তিবর্গ সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও উপজেলার সচেতন মহলের সাথে ব্যায়াপক আলোচনা পর্যালোচনার পর পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের পিরিজপুর গ্রামের ময়নুল মেম্বার সাহেবের উদ্ধেগে অন্যান্য ভূমিদাতাদের নিয়ে,পিরিজপুর গ্রামের পশ্চিম মাঠে ও সালুটিকর – গোয়াইনঘাট সড়কের উত্তর পার্শ্বে গোয়াইনঘাট কলেজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করা হয়। সিলেট -৪ (চার) আসনের সংসদ সদস্য,প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের প্রতিষ্টাকালীন সময় থেকে অদ্যাবধি পর্যন্ত সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।

    ইমরান আহমদের কঠোর পরিশ্রম, আর্থিক ব্যায় ও তার হাত ধরেই ১৯৯৭ সালে কলেজটি এমপিও ভুক্তি লাভ করে।স্বচ্ছতা, জবাব দিহিতা, কঠোর পরিশ্রম,ও তার ব্যাক্তিগত ক্লিন ইমেজের কারনেই ২০১৫ সালের ২৬ জুলাই কলেজটি জাতীয় করন হয়। ২০১৮ সালের ৮ আগস্ট কলেজটি সরকারি করণ হয়।কলেজটির প্রতিষ্টালগ্ন থেকে এমপিও ভুক্তি, জাতীয় করণ, সরকারি করণ ও দৃষ্টি নন্দন একাডেমিক ভবন নির্মাণসহ প্রতিটি উন্নয়ন পরিক্রমায় সর্বোচ্চ অবদান রেখে ইমরান আহমদ সফলতার স্বাক্ষর রেখেছেন।

    কলেজটির উন্নয়নে সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী প্রয়াত এম,সাইফুর রহমানের অবদানও অস্বীকার করার মতো নয়। তিনিও গোয়াইনঘাট কলেজকে ভাল বাসতেন।

    এছাড়াও সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিমসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের দৃষ্টিতে গোয়াইনঘাট কলেজকে নিয়ে আসার জন্য কঠোর পরিশ্রম রয়েছে ইউএনও মনির উদ্দিন। এছাড়াও গোয়াইনঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ ইব্রাহিম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ গোলাম কিবরিয়া হেলাল, উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি প্রয়াত মোঃ সিরাজ উদ্দিন, উপজেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি মো ওসমান গনী, সূফী সোহেল আহমদ, ,সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট জামাল উদ্দিনসহ গোয়াইনঘাট উপজেলার শতাধিক জনপ্রতিনিধি, শিক্ষানুরাগী ও সমাজ সেবী মানুষের কঠোর পরিশ্রমের ফসল গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজ।

    গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের প্রতিটি ইটের সাথে মিশে আছে গোয়াইনঘাটের জনপ্রতিনিধি,রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষানুরাগী ব্যাক্তিবর্গসহ সাধারণ মানুষের রক্তঝরানো ঘাম। গোয়াইনঘাট কলেজ প্রতিষ্টায় অবদান রাখতে তৎকালীন গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যানগন অতি উৎসাহী হয়ে নিজ নিজ ইউনিয়নের সাধারণ বরাদ্দের সিংহভাগ অংশ গোয়াইনঘাট কলেজের উন্নয়ন কাজের জন্য হস্তান্তর করতেন। সমাগত ২৫ জানুয়ারি গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজ প্রতিষ্টার ২৫ বছর পূর্ণ হতে চলেছে। কলেজ কতৃপক্ষ ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে উদযাপন করেছেন রজতজয়ন্তী। জম কালো আয়োজনে উদযাপিত হবে পুরো অনুষ্ঠান।

    একাধিক মন্ত্রীসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদ-পদবীদারী কর্মকর্তার অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদের সভাপতিত্বে। এতে পরিকল্পনা মন্ত্রী এম,এ,মান্নান, শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদার,সংসদ সদ্স্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি,শামীমা আক্তার খানম, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ডক্টর হারুন অর রশিদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি অধ্যাপক ড নাসরিন আহমদ,পরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সিলেট অঞ্চল প্রফেসর হারুন অর রশিদ, সিলেটের জেলা প্রশাসক,এম,কাজী এমদাদুল ইসলাম, সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন।

    স্থানীয় ও জাতীয় নেতৃবৃন্দসহ জেলা পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা গোয়াইনঘাট কলেজের রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হলেও অতিথির সারিতে ঠাঁই হয়নি কলেজ প্রতিষ্টার অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা গোয়াইনঘাট উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার মোঃ মনির উদ্দিনসহ উপজেলার অভিভাবক নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি,উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দসহ গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রায় চার লাখ মানুষের স্থানীয় কোন নেতা বা কর্মীর।

    এই বিষয়টি গোয়াইঘাটের সর্বত্র এখন আলোচিত ও সমালোচিত এবং জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। গোয়াইনঘাট সরকারি কলেজের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে উদযাপন করা হচ্ছে রজতজয়ন্তী উৎসব। উৎসবের যেমন শেষ নেই তেমনি এলাকা জুড়ে আলোচনা ও সমালচনারও শেষ নেই।