গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডে ৫ রোগীর মৃত্যু

    0
    222

    রাজধানীর গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক নারীসহ পাঁচ রোগীর মৃত্যু হয়েছে।

    বুধবার রাতে হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

    ফায়ার সার্ভিস কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার কামরুল হাসান জানান, রাত ৯টা ৫৫ মিনিটে ইউনাইটেড হাসপাতালের নিচতলায় আগুন লাগার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিট সেখানে ছুটে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। আগুনে এক নারীসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।

    নিহতরা হলেন, ভারনন অ্যান্থনী পল (৭৪), মো. মাহবুব (৫০), মো. মনির হোসেন (৭৫), খোদেজা বেগম (৭০) ও রিয়াজ উল আলম (৪৫)।

    শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) বিস্ফোরিত হয়ে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

    অপরদিকে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তারা জানান, হাসপাতালের মূল ভবনের বাইরে অস্থায়ীভাবে একটি করোনা ইউনিট তৈরি করা হয়েছিল। করোনা উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের সেখানে আইসোলেশনে রাখা হয়েছিল। বর্ধিত ওই অংশেই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

    তারা জানান, খবর পেয়ে ফায়ার কর্মীরা পৌঁছে আগুণ নিয়ন্ত্রণে নিতে সক্ষম হন। পরে ঘটনাস্থল থেকে এক নারী ও চার পুরুষের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তাৎক্ষণিকভাবে আহত কাউকে পাওয়া যায়নি। তদন্তের পর ঘটনাটির ব্যাপারে বিস্তারিত বলা যাবে।

    ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন সংবাদমাধ্যমকে জানান, আমরা ৯টা ৫৫ মিনিটে খবর পাই এবং ১০টা ৪ মিনিটে আমাদের প্রথম ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

    তিনি জানান, হাসপাতালের বর্ধিত অংশের আইসোলেশন ইউনিটে আগুন লাগে। হাসপাতালের মূল ভবনে কোনো সমস্যা নেই। অগুনের কারণ জানতে তদন্ত চলছে বলে জানান তিনি।

    এদিকে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, আগুন লাগে রাত সোয়া ৯টার পরপরই। প্রথমে হাসপাতালের কর্মী নিজেরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে ব্যর্থ হয়ে তারা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন।

    ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, করোনা আসোলেশন ইউনিটে স্যানিটাজারসহ অন্যান্য দাহ্য পদার্থ ছিল। রাত ৯টা ৪৮ মিনিটে প্রথমে এক রোগীর স্বজন ৯৯৯ এ ফোন করে আগুনের খবর দেন। পরে ভাটারা থানা পুলিশ বিষয়টি ফায়ার সার্ভিসকে জানায়। তারা এসে আগুন নেভায়।

    কোথা থেকে আগুনের সূত্রপাত জানতেচাইলে তিনি বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস সঠিক কারণ এখনো জানাতে পারেনি। তবে প্রাথমিকভাবে বলেছে, এখানে এসি ছিল এবং এসির স্পার্কিং থেকে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তাছাড়া এখানে যেসব উপাদান ছিল, সবই দাহ্য পদার্থ। এখানে স্যানিটাইজার ছিল, স্যানিটাইজারগুলো দাহ্য পদার্থ। সে কারণে খুব অল্প সময়ে আগুন একটা বড় রূপ নেয়।’

    নিহতদের মধ্যে ৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ছিলেন। বাকি দুইজনের রিপোর্ট এখনো আসেনি বলে জানা গেছে। তারা সবাই করোনা ইউনিটে প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ ওমর ফারুকের তত্ত্বাবধানে ছিলেন।

    নিহত ভারনন অ্যান্থনী পল, মো. মাহবুব ও খোদেজা বেগম এই হাসপাতালে ভর্তি হন গত ২৫ মে। এছাড়া মো. মনির হোসেন ১৬ মে ও রিয়াজ উল আলম ২৭ মে এই হাসপাতালে ভর্তি হন।

    ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের জানিয়েছে, নিহত ৫ জন আইসোলেশন ইউনিটে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন।