গণমাধ্যমে নারী ও পুরুষ সমঅংশগ্রহণ ও অধিকার নিশ্চিতে

    0
    252

    নারীর জন্য গণমাধ্যম বিষয়ক ১৫ দিনব্যাপী একটি প্রচারাভিযান শুরু করছে বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি)।

    গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানে নারী-পুরুষ সমতা, নারীর সম-উপস্থাপন ও ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকরণে সকলকে নিজ নিজ ভূমিকা রাখতে উদ্বুদ্ধ করার লক্ষ্যে ৮ মার্চ, ২০২০ আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে নারীর জন্য গণমাধ্যম বিষয়ক ১৫ দিনব্যাপী একটি প্রচারাভিযান শুরু করছে বাংলাদেশ এনজিওস নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশন (বিএনএনআরসি) ।

    চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে গণমাধ্যমে নারীর অন্তর্ভুক্তি, অবস্থা ও অবস্থানে সমতা-এই প্রতিপাদ্যে সারাদেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম তথা সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালসমূহকে বিবেচনায় রেখে ৮ মার্চ থেকে ২২ মার্চ, ২০২০ পর্যন্ত ১৫ দিনব্যাপী এই প্রচারাভিযান পরিচালিত হবে। ৪৫টি প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট বেসরকারী ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এই প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণ করছে।

    প্রচারাভিযানের উদ্দেশ্য হলো গণমাধ্যমে নারীদের কাজের ধরণ, অবস্থান ও উপস্থাপনে নারীর যথোপযুক্ত মূল্যায়ন বিবেচনায় তাদের পুরুষ সহকর্মীসহ সকলের গতানুগতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ও কার্যকর ভূমিকা পালনে পারস্পরিক সংলাপ আয়োজনে উৎসাহিত করা।

    ৮ মার্চ, ২০২০, জাতিসংঘ ঘোষিত ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’। মার্চ মাস বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে স্মরণীয়, এই মার্চ মাসেই শুরু হয়েছিলো মহান মুক্তিযুদ্ধ। ১৯২০ সালের এ মাসের ১৭ তারিখেই জন্ম নিয়েছিলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই এ বছর রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জন্ম-শতবার্ষিকী ‘মুজিব বর্ষ’। আর এ জন্যই বছরের আন্তর্জাতিক নারী দিবস একটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। মুজিব বর্ষে শপথ নিয়ে গণমাধ্যমে নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করতে হবে।

    সারা বিশ্বে গণমাধ্যম উন্নয়ন নিয়ে কর্মরত সংগঠনগুলোর নারী সাংবাদিকদের বিষয়ে নানাবিধ উদ্যোগ ও কর্মপ্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও নারী সাংবাদিকদের সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা একটি বড় চ্যালেঞ্জ এবং এখনো দুঃস্বপ্ন। ‘গ্লোবাল জেন্ডার গ্যাপ ইনডেক্স’ অনুযায়ী বর্তমান সমাজে নারী-পুরুষের অসমতা এতই প্রবল যা সমতায়ন করতে গেলে প্রায় ১০৮ বছর সময় লেগে যাবে। এ জন্য নারী-পুরুষের সমতায় বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্ম বিশেষ করে নারীদের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষায় প্রণোদনাসহ সুযোগ সৃষ্টি করা জরুরি। তাই গণমাধ্যমে নারীদের প্রতি সংবেদনশীল তথ্য ও সংবাদ পরিবেশন এখন সময়ের দাবি।

    গণমাধ্যম, তথ্য এবং বিনোদন শিল্পে কর্মরত নারীদের অন্তর্ভুক্তি, অবস্থা ও অবস্থানে সমতা বিষয়ে ব্যাপক নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। গণমাধ্যমে কর্মরত নারীদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে নিজেদেরকে রি-স্কিলিং (Re-skilling), আপ-স্কিলিং (Up-skilling) ও ডি-স্কিলিং (De-skilling) করতে হবে।

    প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যম তথা- জাতীয় ও আ লিক সংবাদপত্র, রেডিও, টেলিভিশন এবং অনলাইন নিউজ পোর্টালসমূহের কার্যালয়ে বিশেষ আলোচনা ও পর্যালোচনা সভা এবং কমিউনিটি রেডিও এলাকায় সংবাদপত্র, রেডিও ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে কর্মরত নারী সাংবাদিকদের অবস্থা ও অবস্থান এবং সাফল্য, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।

    নারী ও পুরুষ সমতা একটি মানবাধিকার, তাই মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানমালায়ও এর অনুশীলনে সকলের কার্যকরী উদ্যোগ এখন সময়ের দাবি।

    নারী-পুরুষের সমতা বা সর্বজনীন মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান ও গণমাধ্যম কর্মী উভয়েরই গুরুত্বপূর্ণ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা রয়েছে। উক্ত প্রচারাভিযানের মাধ্যমে গণমাধ্যমের সম্পাদক, মালিকপক্ষসহ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট সকলকে  নিম্নোক্ত আহবান জানানো হচ্ছে:

    প্রতিটি গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানে ইউনেসকো কর্তৃক তৈরিকৃত  Media Development Indicator (MDI) Ges Gender Sensitive Indicator for Media (GSIM) অনুশীলন; গণমাধ্যম, তথ্য এবং বিনোদন সেক্টরে কর্মরত সাংবাদিকদের বিশেষ করে নারীদের চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দ্রুত রি-স্কিলিং (Re-skilling), আপ-স্কিলিং (Up-skilling) ও ডি-স্কিলিং (De-skilling) করণে উদ্যোগ গ্রহণ; চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন করে গণমাধ্যম ব্যবস্থাপনা ও গণমাধ্যমে ব্যবসায়িক মডেল প্রবর্তনে উদ্যোগ গ্রহণ; গণমাধ্যমে কর্মরত নারীর অন্তর্ভুক্তি, অবস্থা ও অবস্থানে সমতা যাচাই এর লক্ষ্যে গবেষণা এবং এর ফলাফল ও সুপারিশমালার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ; প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং রিপোর্টার্স ইউনিটিসমূহে পদ/পদবী এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে নারী ও পুরুষ গণমাধ্যম কর্মীদের সমঅংশগ্রহণ ও অধিকার নিশ্চিতকরণে অনুশীলন; প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে কর্মরত সংবাদকর্মীদের নারী-পুরুষের অসমতা বিষয়ক প্রচলিত ধ্যান-ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করে বিজ্ঞাপনসহ প্রতিবেদন ও সংবাদ পরিবেশনে শক্তিশালী ভূমিকা রাখা।
    এই প্রচারাভিযানের জন্য একটি ওয়েবসাইট খোলা হয়েছে (www.media4women.bnnrc.net) । প্রেস বার্তা