গণমাধ্যমের যে অধিকার আছে,এনজিওর সেটা নেইঃসুরঞ্জিত সেন

    0
    204

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,১৯অক্টোবরঃআওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বিদ্বেষমূলক বা রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্যের জন‌্য বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার নিবন্ধন বাতিলের বিধান রেখে সংসদে পাস হওয়া আইনের বিরোধিতার সমালোচনা করে বলেছেন, ‘গণমাধ্যমের যে অধিকার আছে, এনজিওর সেটা নেই। ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন নাগরিকের জন্য। এনজিও এখানে অনেক ইনফিরিওয়র।’

    গত ৫ অক্টোবর বিলটি পাসের পর এনজিওগুলোসহ তাদের অর্থায়নকারী বিভিন্ন দেশের অব‌্যাহত সমালোচনার মধ্যে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের মিডিয়া সেন্টারে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। গত বছর সংসদকে নিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানের এক বক্তব্যে তীব্র অসন্তোষ জানানোর পর প্রক্রিয়াধীন ওই আইনে বিদ্বেষমূলক বা রাষ্ট্রবিরোধী বক্তবে‌্যর জন‌্য নিবন্ধন বাতিলের ওই ধারাটি যুক্ত করেছিল সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের নেতৃত্বাধীন সংসদীয় কমিটি। ওই ধারাটিসহ আইনটি (বৈদেশিক অনুদান (স্বেচ্ছাসেবামূলক কার্যক্রম) রেগুলেশন বিল-২০১৬) গত ৫ অক্টোবর সংসদে পাস হয়।
    নতুন আইনে বলা হয়েছে- কোনো এনজিও বা ব্যক্তি এই আইনের কোনো বিধান লঙ্ঘন করলে এবং সংবিধান ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিদ্বেষমূলক বা অশালীন মন্তব্য করলে বা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। আইন অমান্য করলে যে কোনো সময় নিবন্ধন বাতিল বা স্থগিত করা যাবে। এনজিওতে বিদেশি উপদেষ্টা নিয়োগের ক্ষেত্রেও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা ছাড় নিতে হবে।
    এই আইন পাস হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন করে বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানান। গত ৯ সেপ্টেম্বর ওই সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল বলেন, ‘আইনের অনুচ্ছেদ-১৪ সংবিধান স্বীকৃত চিন্তা, মত, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতা এবং সংবিধান প্রদত্ত মৌলিক অধিকার খর্ব করার ঝুঁকি সৃষ্টি করবে।’
    তার মনে হয়েছে, বেসরকারি সংস্থাগুলোর বৈদেশিক অনুদান সংগ্রহ ও ব্যবহারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার নামে সরকার মূলত স্বেচ্ছাসেবামূলক উদ্যোগকে ‘নিরুত্সাহিত করা এবং এনজিও কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করতেই’ বেশি আগ্রহী। এই আইনে সম্মতি না দিতে বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা রাষ্ট্রপতির কাছে আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নও আইনটির বিরোধিতা করছে। তবে রাষ্ট্রপতি গত ১৩ অক্টোবর বিলটিতে স্বাক্ষর করেন।
    সাংবাদিক সম্মেলনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘একটা সার্বভৌম সংসদকে তো কোনো ফরেন বডি গালি দিতে পারে না। তাহলে সার্বভৌমত্ব থাকে না। পৃথিবীর কোথাও এটা নেই। কাজ করতে হলে এই আইনের অধীনে করতে হবে।’
    গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে প্রবীণ এই রাজনীতিক বলেন, ‘এনজিও সাধারণ আইনের দ্বারা জন্ম নিয়েছে। কিন্তু গণমাধ্যমকে সংবিধানের অধীনে একটা আইনের মাধ্যমে স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। তোমরা (গণমাধ্যম) বলতে পার। তোমাদের মানবাধিকারের প্রটেকশন আছে। কোনো ফরেন বডির তো সেটা নেই। একজন নাগরিক মত প্রকাশ করে অনেক কথা বলবে। সেটা তার অধিকার। এনজিও আইনের অধীনে কাজ করবে।’
    এনজিওগুলোর উদ্দেশে তিনি বলেন, যদি বিরোধী দলের মতো কথা বলতেই হয় তাহলে অপজিশনে যাও। সংসদে পাস হওয়া নতুন আইন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটা নতুন কোনো আইন না। ’৭৮ সালে একবার পরে ’৮২ সালে মার্শাল ল’ দিয়ে এটা করা হয়েছিল। সেটাকেই আমরা নতুন কিছু করেছি।’ইত্তেফাক