গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য আমাদেরকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবেঃমির্জা ফখরুল

0
391
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য আমাদেরকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবেঃমির্জা ফখরুল
গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য আমাদেরকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবেঃমির্জা ফখরুল

আমারসিলেট ডেস্কঃ  বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ক্ষমতাসীন সরকারকে “ফ্যাসিস্ট সরকার” আখ্যায়িত করে অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতায় থাকার বড় কৌশল হচ্ছে গোটা সমাজে, গোটা রাষ্ট্রে একটি ভীতির ত্রাসের সঞ্চার করা, সব দিক দিয়ে দেশ পরিচালনায় ব্যর্থ অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার সেভাবেই এখন পর্যন্ত ক্ষমতায় টিকে রয়েছে।

আজ বুধবার ২০ এপ্রিল রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ‘গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শহীদ, গুম ও নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের মাঝে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার’ বিতরণের জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

তিনি বলেন, গুম-খুনের প্রতিবাদে আমরা আন্দোলন করেছি। গুম হয়ে যাওয়া পরিবার গুলো আন্দোলন করেছে। এমনকি অনেকে হিউম্যান রাইটস কমিশনে জেনেভা পর্যন্ত গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেভাবে কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা করতে পারেনি। তবে এরা বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে, তা হলো র‍্যাবের ৭ জন কর্মকর্তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর নিষেধাজ্ঞা। তার প্রমাণ হচ্ছে ইউএস হিউম্যান রাইটসের যে রিপোর্ট, সেই রিপোর্টসে প্রত্যেকটি ঘটনায় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরা। একই সঙ্গে দেশে কোনো বিচারব্যবস্থা নেই, সম্পূর্ণভাবে হরণ করা হয়েছে। সেটার প্রমাণ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তাকে কারাগারের নেওয়ার বিষয়ে সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিকভাবে উল্লেখ করা।

ফখরুল বলেন, সরকার আজকে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে এবং এই ব্যর্থ সরকার রাষ্ট্রকে দাঁড় করাতে চায়। কোথাও তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। আজকে যে বিষয়টি সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে, তা হলো কোথাও তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই। আজকে পুলিশকে জবাবদিহি করতে হয় না। অন্যান্য ডিপার্টমেন্টগুলো আছে, সেখানে কোনো জবাবদিহি করতে হয় না। চুরি করে, দুর্নীতি করে, সেখানেও কোনো জবাবদিহি করতে হয় না।

তিনি বলেন, নিউমার্কেটের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে পুলিশ প্রায় তিন ঘণ্টা নিষ্ক্রিয় ছিল। কোন কারণে আপনারা নিষ্ক্রিয় ছিলেন? দেশের মানুষ নিহত হবে সে কারণে? একটি সমস্যা তৈরি হবে সে কারণে? যখন বিএনপির ছোট-খাটো একটি কর্মসূচিকে প্রতিরোধ করার জন্য মুহূর্তের মধ্যে হাজার হাজার পুলিশ সেখানে জড়ো হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার সহধর্মিণী ডা. জোবাইদা রহমানের ১৫ বছরের আগের দুদকের একটি মামলা গতকাল রুজু করা হয়েছে। ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের একটি মামলাও একইভাবে রুজু করা হয়েছে। যোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। ‘বাংলাদেশে এখন ছদ্মবেশী একদলীয় শাসনব্যবস্থা চলছে। এখন তাদের (আওয়ামী লীগ) লক্ষ্য আগামীকাল নির্বাচনে কী করে তারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেবে, কী করে তারা আবার ক্ষমতায় আসবে। সেই লক্ষ্যে তারা সব কাজ করা শুরু করেছে।’

তিনি বলেন, আমাদের যারা খুন হয়েছে, তাদের আমরা ফিরে পাবো না। তাদের পরিবার কষ্ট পাচ্ছে। আর যারা গুম হয়েছে, তাদের পরিবার আরও বেশি কষ্ট পাচ্ছে। কারণ তারা জানে না তাকে খুন করা হয়েছে নাকি বেঁচে আছে। এই মুহূর্তে আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়ানো এবং জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা। এই ভয়াবহ দানবীয় শক্তি, এই অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে একটি বাসযোগ্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য আমাদেরকে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এটার কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশ সবসময় তাদের আন্দোলনের মধ্যদিয়ে এসব কিছু অর্জন করেছে। অনুষ্ঠানে ৬টি পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বিজয় কান্তি সরকার, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।