খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ৬ মার্চ মানববন্ধন

    0
    302

    বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে ৬ মার্চ মানববন্ধন করবে বিএনপি। ওই দিন বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হবে।

    আজ সোমবার বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ ঘোষণা দেন।

    রিজভী জানান, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ। অবৈধ ক্ষমতার মত্ততায় বিনা চিকিৎসায় খালেদা জিয়াকে পরিত্যক্ত কারাগারে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসহীন স্যাঁতসেঁতে অন্ধকার প্রকোষ্ঠে বন্দী করে রাখা হয়েছে। তাঁকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় কারাগারে ফেলে রেখে চরমতম মানসিক ও শারীরিক শাস্তি দিচ্ছে।

    বিএনপির এই নেতা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া  হাঁটতে পারছেন না। পা ফুলে গেছে। হাত অবশ। পুরানো রোগগুলো বেড়ে গেছে। চোখেও প্রচণ্ড ব্যথা। নির্যাতন সহ্য করতে গিয়ে তাঁর পূর্বের অসুস্থতা এখন আরও গুরুতর রূপ ধারণ করেছে। সারভাইক্যাল স্পন্ডিলোসিসের জন্য কাঁধে প্রচণ্ড ব্যথা, হিপ-জয়েন্টেও ব্যথার মাত্রা প্রচণ্ড। ঝুঁকিপূর্ণ শরীর। বিএনপির এই নেতা বলেন, তারা প্রতিমুহূর্তে দলীয় চেয়ারপারসনকে নিয়ে আশঙ্কায় আছেন।

    রিজভী ক্ষোভের সাথে বলেন, সরকারের একজন মন্ত্রীর জন্য বিদেশ থেকে চিকিৎসক আনা হচ্ছে অথচ তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে কারাগারে আটকে রেখে সুচিকিৎসা পর্যন্ত দেয়া হচ্ছে না ।

    খালেদা জিয়াকে জামিনে মুক্তি দেওয়া এবং  পছন্দমতো বিশেষায়িত হাসপাতালে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানান রিজভী ।

    এর আগে গতকাল রবিবার নাইকো মামলার শুনানিতে বেগম খালেদা জিয়াকে হুইলচেয়ারে করে পুরান ঢাকার অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালতে হাজির করা হয়। এসময় আদালতে উপস্থিত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বেগম খালেদা জিয়া কুশল জানতে চাইলে তিনি নিজেই বলেছেন,  ‘ভালো নেই। শরীরটা ভালো যাচ্ছে না।’

    আদালতকে উদ্দেশ্য করে বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, আগের তারিখে  আদালতে আসার জন্য আমি রেডি ছিলাম। আমাকে আনা হয়নি। অথচ বলা হয়েছে, আমি নাকি ঘুমিয়ে ছিলাম। তাই আমাকে আদালতে আনা যায়নি। এই তথ্য সঠিক নয়।

    এ প্রসংগে বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাক্তার জাফরুল্লাহ চৌধুরী রেডিও তেহরানকে বলেন, বেগম জিয়ার অনেকগুলি অসুস্থতার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কারাগারে তার মানসিক যন্ত্রণা। তাকে কারাগারের বাইরে এনে চিকিৎসা দেয়া দরকার।

    এদিকে,  কারাবন্দি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও নাশকতার অভিযোগে দায়ের করা ১১ মামলার শুনানীর দিন আগামী ১৬ এপ্রিল ধার্য করেছেন আদালত। ওই দিন আদালতে খালেদা জিয়াকে সশরীরে হাজির করারও নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

    আজ সোমবার সকালে রাজধানীর পুরান ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে অবস্থিত ঢাকা মহানগর দায়রা জজ ইমরুল কায়েশ এই আদেশ দেন।

    খালেদা জিয়ার আইনজীবী  অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদিন মেজবাহ জানান, বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা এসব মামলার অধিকাংশই উচ্চ আদালতের আদেশে স্থগিত রয়েছে। এ বিষয়টি  উল্লেখ করে আদালতের কাছে সময়ের আবেদন করা হয়। আদালত আমাদের সময়ের আবেদন মঞ্জুর করেন।

    এই ১১ মামলার মধ্যে ১০টি মামলা অভিযোগ গঠনের বিষয়ে শুনানির জন্য ছিল । আর যাত্রাবাড়ী থানার একটি হত্যা মামলা অভিযোগপত্র গ্রহণের বিষয়ে শুনানির জন্য আজকের দিন (৪ মার্চ) ধার্য ছিল।

    এ মামলাগুলো পুরান ঢাকার নিম্ন আদালতে বিচারাধীন ছিল। গত বছরের ৮ জানুয়ারি আইন মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে এই ১১ মামলাসহ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত  ১৪টি মামলা বকশীবাজারে স্থাপিত বিশেষ  আদালতে স্থানান্তর করা হয়।পার্সটুডে