ক্ষুধা মুক্তির অজুহাতে ড্যান্ডি’র নেশায় পথ শিশুরা,প্রশাসনের প্রতি পুনর্বাসনের আহ্বান

0
879
ক্ষুধা মুক্তির অজুহাতে ড্যান্ডি’র নেশায় পথ শিশুরা,প্রশাসনের প্রতি পুনর্বাসনের আহ্বান
ক্ষুধা মুক্তির অজুহাতে ড্যান্ডি’র নেশায় পথ শিশুরা,প্রশাসনের প্রতি পুনর্বাসনের আহ্বান

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি: যে বয়সে শিশুরা বই খাতা কলম নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কথা খেলাধুলা করার কথা সেই সময়ে এই পথশিশুরা ড্যান্ডি নামের মরণ নেশায় আসক্ত হচ্ছে ক্ষুধা থেকে মুক্ত হতে। এইসব শিশুরা নেশার টাকা যোগাড় করতে চুরিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এ দিকে অসাধু বিক্রেতারা অধিক মুনাফার লোভে পথ শিশুদের কাছে এসব নেশাজাতে ব্যবহৃত দ্রব্য বিক্রি করছে। ‘ড্যান্ডি’ নামে এই নেশা করার দ্রব্যটি রাবার, চামড়াজাত দ্রব্য বা জুতা ও ফার্নিচারের বিভিন্ন জিনিস তৈরিতে ব্যবহৃত এক ধরনের আঠা জাতিয় দ্রব্য। যা ৮০ থেকে ১৪০ টাকায় শহরের বিভিন্ন হার্ডওয়ারের দোকানে সলিউশন নামে এসব আটা বিক্রি করা হয়। পথ শিশুদের ‘‘ড্যান্ডি’’ নামে নেশা থেকে রক্ষা করতে আইনগতভাবে সংশোধনের ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শহরের সচেতনমহল।
সরেজমিন দেখা যায়, পথ শিশুরা পৌর শহরের মৌলভীবাজার রোড, কালিঘাট রোড, স্টেশন রোড, কলেজ রোড, রেলওয়ে স্টেশন, হবিগঞ্জ রোডস্থ সোনালী মার্কেটের সম্মুখস্থ মাঠে। এদের সাধারণত বয়স ৮ থেকে ১২ বছর। দেখা যায়,পলিথিনের ব্যাগ হাতে নিয়ে কিছুক্ষণ পরপর মুখের কাছে নিয়ে নাক-মুখ পলিথিনের ব্যাগে ঢুকিয়ে শ্বাস টেনে যাচ্ছে।
মরণ নেশা ‘’ড্যান্ডি’’ তে আসক্ত কয়েকজন পথশিশুর সাথে আলোচনা করে জানা যায়, পলিথিনের ব্যাগে এই আটালু জাতিয় সলিউশন ঢুকিয়ে কিছুক্ষণ ঝাঁকিয়ে এতে নাক-মুখ দিয়ে শ্বাস টানতে হয়। এতে তারা কিছুক্ষণ আরাম অনুভব করে, পরবর্তীতে তাদের ক্ষুধা লাগে না বলে তারা দাবী করে। ‘ড্যান্ডি’ তে আসক্ত হয়ে আবার চুরি করে জেল কাঁটছেন অনেকেই। ড্যান্ডিতে আসক্ত পথশিশু জাকির (ছদ্ম নাম)জানায়, আমরা এই ড্যান্ডি বিভিন্ন হার্ডওয়ারের দোকান থেকে ড্যান্ডি ছোট্টি ৮০টাকা বড়টির ১৪০টাকা কিনে আনি, আগে কালিঘাট ভাঙ্গারির দোকানের বসে কাইতাম, এখন মাঝে মধ্যে যাই। সেখানে গিয়ে খায়। ড্যান্ডি খাইলে মাথা ঘুরে ক্ষুধা লাগে না।
ড্যান্ডি’তে আসক্ত সাজিম (ছদ্ম নাম) জানায়, আগে আমরা ভিক্ষা করতাম, এখন আমাদের মানুষ ভিক্ষা দেয় না, তাই লেবু আনারসের গাড়ি থেকে লেবু আনারস চুরি করি, এসব বিক্রি করে আমরা প্রতি দিন ৬/৭শ টাকা পাই। আমাদের বড় ভাই আসেন, আমরা তাকে চুরির ভাগ দিতে হয়। ভাগ না দিলে সে আমাদের মারে।
সচেতনমহল জানান,এই পথশিশুরা না বুঝে ‘ড্যান্ডি’ নামের মরন নেশায় জড়িয়ে পড়েছে। তাদের এই পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, শিশুরা ড্যান্ডির টাকার যোগাড় করতে চুরিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। এসব শিশুদের ভবিষৎতে ব্রেইনে সমস্যা দেখা দিবে। এটা এক ধরনের অ্যালকোহল ও অন্যান্য যৌগের সমষ্টি। এ নেশার ফলে এসব শিশু নানা রোগে আক্রান্তসহ দ্রুত কিডনি বিকল হয়ে মৃত্যুর মুখে পতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।