করোনা ইস্যুতে তাবলিগ সদস্যদের ‘বলির পাঁঠা’ করা হয়েছিল

    0
    241

    “তারা এখানে এসেছিল ভারতের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, আতিথেয়তা এবং ভারতীয় খাবারের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে”

    ভারতের মহারাষ্ট্রের বম্বে হাইকোর্ট বহুলালোচিত তাবলিগ জামাত ইস্যুতে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে। শনিবার গণমাধ্যমে প্রকাশ, আদালত দিল্লির নিজামুদ্দিন মার্কাজে তাবলিগ জামাতের অনুষ্ঠানে শামিল হওয়া ২৯ বিদেশি নাগরিকের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত এফআইআর বাতিল করে দিয়েছে। আদালত বলেছে, করোনা ইস্যুতে অহেতুক বিদেশি তাবলিগ সদস্যদের ‘বলির পাঁঠা’ করা হয়েছে।

    কোভিড-১৯ ছড়ানোর জন্য দায়ী করা হয়েছিল ওইসব তাবলিগ সদস্যদের। রাজনৈতিকভাবে চাপের মুখে পড়ে সেই সময় তাঁদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করে মহারাষ্ট্র সরকার।

    আদালত জানায়, গণমাধ্যমে মার্কাজে শামিল হওয়া বিদেশিদের নিয়ে বড় প্রচারণা চালানো হয়েছিল এবং এমন একটি চিত্র তৈরি করা হয়েছিল যে কোভিড-১৯ রোগের ভাইরাস ছড়ানোর জন্য এরাই দায়ী। একপ্রকার এসব বিদেশিদের নিপীড়ন করা হয়েছে।

    বিদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে পর্যটন ভিসার শর্ত লঙ্ঘন করে তাবলিগ জামায়াতের কর্মসূচীতে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারা, মহামারী রোগ আইন, মহারাষ্ট্র পুলিশ আইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন এবং বিদেশি আইনের বিভিন্ন ধারায় মামলা করা হয়েছিল। বিদেশি নাগরিক ছাড়াও পুলিশ ছয় ভারতীয় নাগরিক এবং মসজিদে আবেদকদেরকে আশ্রয় দেওয়ার দায়ে মসজিদের ট্রাস্টিদের বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছিল।

    পুলিশের দাবি, তাঁরা গোপন তথ্য পেয়েছিল যে ওই লোকেরা বিভিন্ন এলাকার মসজিদে অবস্থান করছে এবং লকডাউন বিধি লঙ্ঘন করে নামাজ পড়ছে। এরপরে সমস্ত আবেদনকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল।

    যদিও আদালতে আবেদনকারীরা বলেন, তারা বৈধ ভিসা নিয়ে ভারতে এসেছিলেন, যা ভারত সরকার জারি করেছিল এবং তারা এখানে এসেছিল ভারতের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, আতিথেয়তা এবং ভারতীয় খাবারের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে। তারা বিমানবন্দরে পৌঁছলে স্ক্রিনিং ও কোভিড-১৯ ভাইরাসের পরীক্ষা করা হয়েছিল। নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেতিবাচক আসার পরেই তাদেরকে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে আসতে দেওয়া হয়েছিল।

    তারা বলেন, এমনকি তারা জেলা পুলিশ সুপারকে আহমেদনগর জেলায় পৌঁছানোর তথ্যও জানিয়েছিলেন। কিন্তু ২৩ মার্চ লকডাউনের কারণে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল, হোটেল এবং লজগুলো বন্ধ ছিল, যার কারণে মসজিদগুলোতে তাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল। তারা জেলা প্রশাসকের আদেশ লঙ্ঘনের মতো কোনও অবৈধ কাজ করেননি বলেও জানান।

    অবশেষে বিদেশিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য এখন সংশ্লিষ্টদের অনুশোচনা করার সময় এসেছে এবং যে ক্ষতি হয়েছে তা সংশোধন করার জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলেও আদালতের পক্ষ থেকে মন্তব্য করা হয়েছে।পার্সটুডে