কমলগঞ্জ পৌর মেয়রের হস্তক্ষেপে ২১৩ শিক্ষার্থী ক্লাসে

    0
    216

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,২৪মে,শাব্বির এলাহী,কমলগঞ্জ,মৌলভীবাজারঃ মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে প্রায় ৭ দিন ধরে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার অনিয়মের কারণে বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী প্রায় শুণ্য হয়ে পড়ছিল। বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবরটি দেখার পর কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়রের হস্তক্ষেপে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসন ও অভিভাবকদের নিয়ে জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপজেলা শিক্ষা অফিসার অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে তড়িৎ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে আবার বিদ্যালয়ের ২১৩ শিক্ষার্থী ক্লাসে যেতে শুরু করেছে। অচলাবস্থা নিরসন হয়ে ফিরে এসেছে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ। ঘটনাটি ঘটেছে পতনঊষার ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গুঞ্জরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

    এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, পতনঊষার ইউনিয়নের গুঞ্জরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মনোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে উপজেলা শিক্ষা অফিস ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত আবেদন করেও অভিযুক্ত শিক্ষিকার বিরুদ্ধে কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করায় অভিভাবকরা প্রতিবাদে তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে যাওয়া বন্ধ করে দেন। এই খবরটি বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারের পর গত সোমবার (২২ মে) সন্ধ্যায় বিষয়টি কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মো. জুয়েল আহমদের দৃষ্টিগোচর হয়। তিনি বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার গকুল চন্দ্র দেবনাথ, গুঞ্জরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এসএমসি ও স্থানীয় সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে। পৌর মেয়রের দেয়া তারিখ অনুযায়ী গত মঙ্গলবার (২৩ মে) বিকেল ৪টায় গুঞ্জরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এসএমসি ও অভিভাবকদের সাথে একটি জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

    বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মো. জুয়েল আহমদ। গুঞ্জরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এসএমসির সভাপতি আরজদ আলীর সভাপতিত্বে ও পতনঊষার ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান নারায়ণ মল্লিক সাগরের স ালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা শিক্ষা অফিসার গকুল চন্দ্র দেবনাথ, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার জয় কুমার হাজরা, সাংবাদিক মুজিবুর রহমান রঞ্জু, কমলগঞ্জ প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ, কমলগঞ্জ রিপোটার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন, সাংবাদিক আসহাবুর ইসলাম শাওন, ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মর্তুজ আলী। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন যুবলীগ নেতা আবুল বশর জিল্লুল, সাবেক ইউপি সদস্য জমসেদ আলী, এসএমসি’র সহ সভাপতি ইলিয়াছ আলী, অভিভাবক সদস্য নুরজাহান বেগম প্রমুখ।

    কমলগঞ্জ পৌর মেয়রের উদ্যোগে বিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিরসনের লক্ষ্যে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা প্রশাসন ও অভিভাবকদের নিয়ে জরুরী বৈঠকে উপজেলা শিক্ষা অফিসার অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে তড়িৎ প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার থেকে আবার বিদ্যালয়ের ২১৩ শিক্ষার্থী ক্লাসে যেতে শুরু করেছে। অচলাবস্থা নিরসন হয়ে ফিরে এসেছে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ।

    সভায় প্রধান অতিথি কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো. জুয়েল আহমদ তাঁর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রচন্ড গরম থেকে রক্ষার জন্য ৪টি সিলিং ফ্যান বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন।

    এলাকাবাসী জানান, গুঞ্জরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে অবসরে চলে গেলে ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন এই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা মনোয়ারা বেগম। এর আগে তিনি শ্রীসূর্য্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের থাকাকালে শিক্ষিকা সালমা বেগমের সাথে বৈরী আচরণসহ একজন পুরুষ শিক্ষককে শারিরিকভাবে লা না করেন।

    এ ঘটনায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এই বিতর্কিত শিক্ষিকাকে শাস্তিমূলক বদলী করেন গুঞ্জরকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এখানে আসার পর থেকেও প্রধান শিক্ষকের সাথে বনিবনা না হওয়ার শুরু দুরত্বের সৃষ্টি হয়। তিনি নিজ ইচ্ছা খুশি মত বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করেন। ক্লাস বাদ দিয়ে বারান্দায় বসে মোবাইলে ফেইসবুক নিয়ে সারক্ষণ ব্যস্ত থাকতেন।  এছাড়া গত ২৪ এপ্রিল তারিখে ১ম সাময়িক পরীক্ষার প্রথম দিনই কোন শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন না। পরে দপ্তরী দ্বারাই ১ম থেকে ৫ম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের এক সাথে পরীক্ষা নেওয়া হয়ছিল।

    এছাড়া ৩০ এপ্রিল তারিখের সকালের পরীক্ষা না নিয়ে একটি বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্টানে চলে যান। খবর পেয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে কাউকে না পেয়ে লিখিতভাবে শোকজ করেন।