“হলুদ ফুল আর সবুজ গাছে এক অপরূপ দৃশ্য যা দেখে পথিকের ছবি তোলার কৌতূহল”
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষক সৈয়দ জামাল হোসেন। ১ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন তিনি। ইতোমধ্যেই গাছে ফুল ধরতে শুরু করেছে। এক একটি ফুল যেন হাসিমুখে সূর্যের আলো ছড়াচ্ছে।
চারিদিকে হলুদ ফুল আর সবুজ গাছে সে এক অপরূপ দৃশ্য। প্রতিদিন আশপাশের এলাকা থেকে সৌন্দর্য পিয়াসু মানুষ সূর্যমুখী ফুলের ক্ষেত দেখতে আসছে। অনেকেই ফুলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন সেলফি নিচ্ছেন।নিজ নিজ ফেইসবুক ওয়ালে লাগিয়ে দিচ্ছেন এই হলুদ ফুল আর সবুজ গাছের এক অপরূপ দৃশ্য। ফুলের এই সৌন্দর্যে পিছিয়ে নেই পরিবেশ বান্ধব মৌমাছিরা। ফুল জুড়ে উড়ে বেড়াচ্ছে মৌমাছির দল, এ যেন ফুল প্রেমিকার আঙ্গিনায় ফুল প্রেমিকের উল্লাস।
কমলগঞ্জ পৌর এলাকার কামারগাও গ্রামের মৃত সৈয়দ আবুল হোসেনের ছেলে সৈয়দ জামাল হোসেন (৩৮)। তিনি টানা ২ বারের পৌর কাউন্সিলর। জনপ্রতিনিধিত্বের পাশাপাশি তিনি কৃষিকাজও করেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়ে এ বছর পানিশালা গ্রামে ১ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সূর্যমুখী ফুলের চাষ করেছেন তিনি।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, অল্প সময়ে কম পরিশ্রমে ফসল উৎপাদন ও ভালো দাম পাওয়া যায় বলে কৃষকরা এখন সূর্যমুখী চাষ করছেন। প্রতি বিঘা জমিতে ১ কেজি বীজ দিতে হয়। দেড় ফুট অন্তর অন্তর একটি করে বীজ বপন করতে হয়। একটি সারি থেকে আরেকটি সারির দূরত্ব রাখতে হয় দেড় ফুট। মাত্র ৮৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে বীজ বপন থেকে শুরু করে বীজ উৎপাদন করা সম্ভব। প্রতি একর জমিতে সব খরচ বাদ দিয়ে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা লাভ হয়। যা অন্য কোনো ফসলের চেয়ে কম পরিশ্রমে ভালো আয়।
কৃষক জামাল হোসেন (পৌর কাউন্সিলর) বলেন, ‘উপজেলা কৃষি অফিসারের পরামর্শে ১ বিঘা জমি লিজ নিয়ে সূর্যমুখীর চাষ শুরু করেছেন তিনি। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আশা করছেন ভালো আয় হবে। তিনি আশা করছেন ১ বিঘায় ৬ থেকে ৭ মণ ফলন পাওয়া যাবে। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে কমলগঞ্জ পৌরসভার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কনক লাল সিংহ বলেন, ‘সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে বিনামূল্যে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ছয় থেকে সাড়ে ছয় মণ সূর্যমুখী ফুলের বীজ পাওয়া যাবে। কৃষকদের স্বাবলম্বী করতেই সূর্যমুখী ফুল চাষে উৎসাহিত করা হয়েছে। যদি সফল হওয়া যায় আগামীতে সূর্যমুখীর চাষ অনেক বাড়বে।’
উল্লেখ্য,সূর্যমুখীর বীজে লিনোলিক এসিড বিদ্যমান থাকার ফলে এতে উন্নতমানের তৈল থাকে। সূর্যমুখীর তেলের ভেষজগুণ সম্পর্কে জানা যায় এটি হৃদরোগীদের জন্য খুবই উপকারী।
তাছাড়া সূর্যমুখীর খৈল গরু ও মহিষের উৎকৃষ্টমানের খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর বীজ ছাড়ানোর পর মাথাগুলো গরুর খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা যায়। গাছ ও পুষ্পস্তবক জ্বালানী হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সূর্যমুখী সাধারণত সব মাটিতেই জন্মে। তবে দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে বেশী উপযোগী।