কমলগঞ্জে প্রবাসীর টাকা আত্মসাৎ করে লাখপতি

    0
    408

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৭জানুয়ারী,কমলগঞ্জ প্রতিনিধিঃ   মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে এক প্রবাসীর হাড়ভাঙা পরিশ্রমের টাকা আত্মসাৎ করে নিজে সম্পদশালী হয়েছেন এক সময়ের দিনমজুর জনৈক মাহবুব আলী। বুধবার (১৭জানুয়ারী) দুপুরে আদমপুর ইউনিয়নের কোনাগাঁও গ্্রামে সরজমিন গিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিনব প্রতারণা চোখে পড়লো। এলাকাবাসীর সাথে  আলাপ করে জানা যায়, মৃত তাবার উদ্দিনের পূত্র হামিদ উদ্দিন (৩৬) প্রতিবেশী মৃত আব্দুল গফুরের পূত্র মাহবুব আলীর সাথে স্থানীয় খাসিয়া পুঞ্জিতে দিন মজুরের কাজ করতো।১৫/১৬বছর আগে বড় ভাইয়ের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্য(দুবাই) গিয়ে ভাল বেতনে কাজ শুরু করে। কয়েক বছর পর তার বাবা মারা গেলে মাহবুব আলী অভিভাবক হিসেবে দেশে হামিদের পরিবারের দেখাশুনা শুরু করেন। সে সুবাদে ঘনিষ্টতা আরও বেড়ে যায়।

    এক পর্যায়ে হামিদকে জমি কিনে দেবার আশা দিয়ে ২০০৮ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আট বছর ধরে নিজের মোবাইল নাম্বারে(০১৭৩২৫৫৯৪৩২) বিকাশ ও  ব্যক্তিগত ব্যাংক একাউন্ট ( হিসাব নং ৬৫৬৪৭/ পূবালী ব্যাংক, আদমপুর বাজার শাখা)এর মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে  প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ টাকার যোগান দিতে হামিদ উদ্দিন একটানা ১৫/১৬ বছর পরিবার পরিজন ও স্বদেশের মায়া ছেড়ে মরুভূমিতে অমানুষিক পরিশ্রম করেছেন। এমনকি নিজের বাবা মারা গেলেও দেশে এসে তাকে দেখতে পারেন নি। কিন্তু তার মা ও ভাইয়েরা মাহবুব আলীর কাছে জমি ক্রয়ের খবর ও টাকার কথা জানতে চাইলে তিনি নানা টালবাহানা করেন। রেজাউদ্দিন, জুম্মা মিয়া,কেরামত আলী,ইসলাম মিয়া প্রমূখের সাথে আলাপকালে জানা যায়,এ নিয়ে এলাকায় একাধিকবার সালিশ বৈঠকও হয়েছে। মাহবুব আলী হামিদের কাছ থেকে এক লক্ষ টাকা নেওয়া ও সালিশ বৈঠকের কথা স্বীকার করলেও  বাকী টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেন।   হামিদ উদ্দিনের বিধবা মা জয়গুন বিবি,ভাই জুমের আলী  বিলাপ করে বলেন, সংসারে সুখের জন্য অনেক আশায় বুক বেঁধে নাড়ি ছেঁড়া ধনকে বিদেশ পাঠিয়েছি। সে খেয়ে না খেয়ে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে হাডভাঙা পরিশ্রমে রোজগার টাকা জমিয়ে বিশ্বাস করে প্রতারক মাহবুব আলীর কাছে সমস্ত স য় তুলে দিয়েছে। কিন্তু আজ চোখের পানি আর অন্যের জমিতে নিজের ভাঙা একটি কুঁড়েঘর ছাড়া কিছুই নেই।

    অথচ মাহবুব আলী হামিদের টাকায় দিনমজুর থেকে লাখপতি। বাড়ীঘর ও জমিজমা সহায় সম্পদ সবই করেছে। সুবিচারের আশায় জয়গুন বিবি   কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে ৯ জানুয়ারী  লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কিন্তু সাতদিন পেরিয়ে গেলেও এ বিষয়ে কোন সূরাহা না হওয়ায় হতাশ তিনি।

    এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, বিষয়টি তদন্ত ক্রমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আদমপুর ইউপি  চেয়ারম্যানকে দায়িত্ব প্রদান করেছি। তিনি ব্যর্থ হলে প্রতারক মাহবুবের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে।