কমলগঞ্জে নিখোঁজের ২ ঘন্টা পর শিশু ছাত্রীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার !

0
536
কমলগঞ্জে নিখোঁজের ২ ঘন্টা পর শিশু ছাত্রীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার !
নিহত ফাতেমা জান্নাত মৌ (৬)

শাব্বির এলাহী,কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধিঃ  মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের কেছুলুটি গ্রামে নিখোঁজের ২ ঘন্টা পর ঘরের পিছনের গর্ত থেকে ৬ বছর বয়সী ১ম শ্রেণির ছাত্রীর গলাকাটা ও ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

কেছুলুটি গ্রাম থেকে বুধবার (৯ মার্চ ২০২২) বিকলে ৫ টায় নিখোঁজ হলে সন্ধ্যা ৭টায় তার লাশ পাওয়া যায়। নিহত ফাতেমা জান্নাত মৌ (৬) কেছুলুটি গ্রামের ফরিদ মিয়ার মেয়ে ও কেছুলুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী।

এ ঘটনায় কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। রাতেই সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল সার্কেল) শহীদুল হক মুন্সী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

বৃহস্পতিবার ১০ মার্চ সকাল থেকে পুলিশ, র‍্যাব, পিবিআই, সিআইডিসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তৎপর রয়েছে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।নিহত স্কুল ছাত্রী ফাতেমা জান্নাতের বাবা ফরিদ মিয়া বলেন, তার মেয়ে ফাতেমা জান্নাতকে বুধবার ৯ মার্চ আছরের নামাজের পর বিকেল ৫টা থেকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক খোঁজাখোঁজির পর সন্ধ্যা ৭টায় তাদের বসত ঘরের পিছনের একটি ছোট মাটির গর্তে তার গলাকাটা, পেটের ভুড়ি বের হওয়া ও ক্ষত বিক্ষত  লাশ পাওয়া যায়।

এ সময় কেছুলুটি গ্রামটি বিদ্যুৎবিহীন ছিল। ঘটনাটি শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়িকে অবহিত করলে রাত সাড়ে ৭টায় পরিদর্শক (তদন্ত) মোশারফ হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশের সুরতহাল তৈরী করে লাশ উদ্ধার করেন। বৃহস্পতিবার সকালে নিহত লাশের ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেন। নিহতের পিতা স’মিল কর্মী ফরিদ মিয়া বলেন, তার অবুঝ শিশুকে কে বা কারা নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে অবিলম্বে দায়ীদের খোঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে বলেন, এভাবে যেন কোন মায়ের বুক খালি না হয়।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন কেছুলুটি গ্রামে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ঘটনার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে।  ৩ ভাই ও ২ বোনের মধ্যে ফাতেমা জান্নাত মৌ সবার ছোট। সে কেছুলুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী।  হত্যাকান্ডের কারণ জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপ পরিদর্শক সোহেল রানা বলেন,  সুর্নির্দিষ্ট কারো সংশ্লিষ্টতা এখনও পাওয়া যায়নি, তবে পারিবারিক বিরোধ বা ব্যক্তিগত বিরোধসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জোর তদন্ত চলছে। খুব শিঘ্রই জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে সক্ষম হব।

শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) মোশারফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এটা নিশ্চিত, এটি একটি হত্যাকান্ড। তবে তদন্তের পরই বিস্তারিত বলা যাবে। ঘটনা উদ্ঘাটনে পুলিশসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার তদন্ত চলছে। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য বৃহস্পতিবার সকালে মৌলভীবাজার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহত স্কুল ছাত্রীর মা রুবি আক্তার ওরপে রেলী বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার সকালে কমলগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।