কমলগঞ্জে অবৈধ দু’টি চা কারখানার সন্ধান আটক ৩

    0
    317

    আমারসিলেট 24ডটকম , ১৪ সেপ্টেম্বর, শাব্বির এলাহী  : শাব্বির এলাহী মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় পুলিশি অভিযানে দু’টি অবৈধ চা পাতা প্রস্তুতের কারখানার সন্ধান পাওয়া গেছে।  বাগান থেকে চোরাই চা পাতা দিয়ে কারখানায় নিয়ে চা প্রস্তুতের দায়ে গত বৃহস্পতিবার(১২সেপ্টেম্বর) রাত ২টায় দুই মহিলাসহ ৩ জনকে পুলিশ আটক করে। আটককৃতদের স্বীকারোক্তিতে গতকাল শুক্রবার অবৈধ চা কারখানা ও সংলগ্ন গুদাম থেকে প্রচুর পরিমানে তৈরী চা পাতা জব্দ জব্দ করা হয়।কমলগঞ্জ থানা সূত্রে জানা যায়, সাম্প্রতিক সময়ে কমলগঞ্জের বিভিন্ন চা বাগান থেকে চোরচক্র রাতের আঁধারে কাচা পাতা চুরি করছে। আর এসব চোরাই কাঁচা চা পাতা দিয়ে চা প্রস্তুতের জন্য অবৈধ চা কারখানাও গড়ে উঠছে।

    এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টায় কমলগঞ্জ থানার ওসি নিহার রঞ্জন নাথ, এসআই চম্পক ধাম ও এসআই নূর মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল আলীনগর ইউনিয়নের আলীনগর বস্তি থেকে রিনি বেগম(৩৪),তার ভাই তাহের মিয়া(৪৫) ও জমরুন নেছা(৩৫) নামক তিন জনকে আটক করে। আটককৃতদের কমলগঞ্জ থানায় নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে আলীনগর বস্তিতে চা পাতা প্রস্তুতের দু’টি অবৈধ কারখানার তথ্য জানা যায়।

    কমলগঞ্জ থানার ওসি নিহার রঞ্জন নাথ এ প্রতিনিধিকে জানান, বৃহস্পতিবার রাতে আটক তিনজনের স্বীকারোক্তিতে গতকাল শুক্রবার বেলা ১২ টায় এসআই  মোঃ কুদ্দুছ মিয়া,এসআই চম্পক ধাম,এসআই নূর মিয়া ও এসআই হারুন মিয়ার নেতৃত্বে আলীনগর বস্তিতে বিশেষ অভিযান চলে। এ অভিযানে আটক রিনি বেগমের আলিশ্বান বাড়ির পিছনে একটি অবৈধ চা কারখানা ও পলাতক জয়নাল মিয়ার বাড়িতে আরও একটি অবৈধ চা কারখানার খোঁজে পাওয়া যায়।

    এসব কারখানায় চা প্রস্তুতের জন্য ইট  দিয়ে তৈরী বড় আকারের দু’টি চুলা ছাড়াও অবৈধ চা কারখানার সামনে ও পিছনে প্রস্তুতকৃত চা পাতা শুকানোর জন্য পাকা ঢালাই করা উঠানও রয়েছে।শুক্রবার অভিযানকালে এ দু’টি পাকা করা উঠানে প্রচুর পরিমাণে চা পাতা পাওয়া যায়। আটক রিনি বেগমের  পাকা বাড়ির কয়েকটি কক্ষ থেকে কমপক্ষে ৫০০ কেজি চা পাতা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া অবৈধভাবে চা পাতা প্রস্তুতে ব্যবহৃত বড় একটি কড়াই, বেশ কয়েকটি চালনী, ঢালা জব্দ করা হয়।

    নাম প্রকাশ অনিচ্ছুক গ্রামবাসীরা জানান, দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এ দু’টি অবৈধ কারখানায় চোরাই চা পাতা দিয়ে চা পাতা উৎপাদন করা হচ্ছিল। আগে ঢেকিতে ছেটে চা পাতা প্রস্তুত করা হলেও এখন রাইসমিল ও আটার মিলে শুকনো চা পাতা গুড়া করা হয়। বিষয়টি পুলিশের একটি মহলের জানা থাকলেও তা প্রতিরোধে কোন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানায় মৌলভীবাজারের গোয়েন্দা(ডিবি) পুলিশের এক কর্মকর্তা এক সপ্তাহ আগে আলীনগর বস্তিতে অবৈধ চা কারখানায় এসে আর্থিক সুবিধা গ্রহন করে চলে গেছেন।

    বিষয়টি কমলগঞ্জ থানার পুলিশকে অবহিত করায় বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার দুপুরে আলীনগর বস্তিতে দুই দফা অভিযান চালিয়ে অবৈধ চা কারখানার সন্ধান বের করে সরঞ্জামসহ এ কারখানায় উৎপাদিত প্রচুর পরিমাণে চা পাতা জব্দ করা হয়।উল্লেখ্য চা বাগান থেকে কাঁচা চা পাতা চুরি করে ট্রাকযোগে পাচারকালে ৩১ আগষ্ট ভোর ৫ টায় এ এসপি(কুলাউড়া সার্কেল) আলমগীর হোসেন ট্রাকসহ শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের একজন সদস্যসহ ২জনকে আটক করেছিলেন। কমলগঞ্জ থানার ওসি জানান, এ অভিযানে দু’টি অবৈধ চা কারাখানার সন্ধান লাভ করে তা গুড়িয়ে দেওয়া হয়।  অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান। এ ঘটনায় কোন চা বাগান নিজেরা মামলা না করলেও পুলিশ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবে।