ওরা আমার স্বামীকে কোরআন পড়া অবস্থায় মেরে ফেলেছে

    0
    278

    “ওরা আমার স্বামীকে কোরাণ পড়া অবস্থায় পূর্ব পরিকল্পনা করে মেরে ফেলেছে, আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই, ৪৮ ঘন্টায়ও থানায় মামলা হয়নি”

    নড়াইল প্রতিনিধিঃ ৪৮ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও নড়াইলের কামাল প্রতাপগ্রামের রাজ্জাক মলি¬ক (৭৫) হত্যা ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়নি। সোমবার সন্ধ্যায় মাগরিবের নামাজের পর জায়নামাজে বসে কোরাণ শরীফ পড়া অবস্থায় অবস্থায় ওই বৃদ্ধ খুন হন। তিনি সদর উপজেলার বাঁশগ্রাম ইউনিয়নের কামালপ্রতাপ গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বাঁশগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য।

    পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রাজ্জাক মলি¬ক সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ির পূর্ব পাশের ঘরে মাগরিবের নামাজ আদায় করেন। এরপর তিনি জায়নামাজে বসে কোরাণ পড়ছিলেন। তার স্ত্রী পাশের বাড়ি পানি আনতে গেলে ওই সময় দুর্বৃত্তরা ঘরে ঢুকে কুপিয়ে হত্যা করে তাঁকে।

    রাজ্জাক মল্লিকের ছোট ছেলে রফিকুল বলেন, আমাদের এখানে তিন গ্রাম নিয়ে দলাদলি  আছে, আমার বাবা  এলাকার মুরর্বি হওয়ায় তার কথা একটি গ্রুপের লোকজন শুনতো, সেই কারনে  এলাকায় একটি হত্যা ঘটনায় আমাদের বাড়ী ভাংচুর চালায় অপর গ্রুপ,পরে ঐ হত্যা মামলায় আমাদের আসামী করে। তারাই আমার বাবাকে আমার ছোট ছেলের সামনে কোরণ শরীফ পড়া অবস্থায় জায়নামাজের পর খুন করেছে, আমার ছেলে ছোট হলেও সে কয়েকজনকে চিনেছে,নাম এখন বলবো না, মামলায় এজাহারে সব জানতে পারবেন। আমরা আমার বাবার হত্যার বিচার চাই।

    রাজ্জাক মল্লিকের স্ত্রী হাসনাহেনা (৬২) বলেন,আমার স্বামী নামাজ পড়ার পর প্রতিদিন কোরআন শরীফ পড়ে থাকেন। কোরআন শরীফ পড়াকালে তার গলা শুকিয়ে যায়। আমি তার জন্য প্রতিবেশি গিয়াসের বাড়ি থেকে পানি আনতে যাই। কিছু সময় পর আমার পুতা ছেলে এশারক (৬) দৌড়ে এস বলে দাদাকে কারা যেন কুপায়ে মারে ফেলতিছে। চিৎকার করতে করতে ঘরে গিয়ে দেখি সব শেষ। আমার চিৎকারে প্রতিবেশিরা ছুটে আসে। তিনি দাবি করেন,আমাগে শত্রুরাই আমার স্বামীকে মেরে ফেলিছে। গ্রামে দলাদলির কারণে আমার দুই ছেলেই বাড়ি ছাড়া, গ্রামেএকটা মার্ডারের পর আমার বাড়ীঘর সব ভেঙ্গে ফেলেছে,ছেলেদের নামে মামলা দিয়েছে,তাই তারা লোহাগড়ায় বাসা ভাড়া করে বসবাস করে। তারাই আমার স্বামীকে মেরে ফেলেছে, আমি স্বামী হত্যার বিচার চাই।

    জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদের নামে পুলিশ বুধবার সন্ধ্যায় রাজ্জাক মলি¬কের বড় ছেলে রবিউল মল্লিক,কামলা প্রতাপ গ্রামের রসিদ মল্লিকের ছেলে নাজমুল হোসেন এবং আমাদা গ্রামের অহিদার খানের ছেলে নাইচ খানকে থানায় নিয়ে গেছে। এখনো পুলিশ হেফাজতে রয়েছে তারা।

    এ ব্যাপরে সদর থানার ওসি মো.ইলিয়াছ হোসেন জানান,হত্যার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাজ্জাক মল্লিকের বড় ছেলে রবিউল মল্লিক,কামলা প্রতাপ গ্রামের আকবর হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন এবং আমাদা গ্রামের অহিদার খানের ছেলে নাইচ খানকে থানায় আনা হয়েছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,এখনো থানায় কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। তিনি বলেন,হত্যা ঘটনার তদন্তের স্বার্থে কিছু বলা যাবে না।