ঐতিহাসিক জেলহত্যা দিবস আজ

    0
    414

    আমার সিলেট  24 ডটকম,০৩নভেম্বরঃ আজ ৩ নভেম্বর রবিবার, ঐতিহাসিক জেলহত্যা দিবস। যথাযোগ্য মর্যাদা ও বিস্তারিত কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে অন্যান্য বছরের মতো এবারও সারাদেশে পালিত হবে শোকাবহ এ দিবসটি। বাঙালি জাতির মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী এ চার জাতীয় নেতা সৈয়দ  নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এ এইচ এম কামারুজ্জামান এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে যথাযথ শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে দেশের ইতিহাসের অন্যতম বর্বরোচিত এই কালো অধ্যায়টিকে স্মরণ করবে আজ । ১৯৭৫ সালের এই দিনে এ চার জাতীয় নেতাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা আলাদা বাণী দিয়েছেন।
    দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির অংশ হিসেবে দুপুর দুইটায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এক বিবৃতিতে জেলহত্যা দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে পালনের জন্য আওয়ামী লীগের সব শাখা এবং সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সকল নেতা কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
    এর আগে আজ সকালে বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের সর্বত্র শাখা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ, কালো ব্যাজ ধারণ ও কালো পতাকা উত্তোলন এবং বঙ্গবন্ধু ভবনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হবে। সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদ ও জাতীয় নেতাদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, ফাতেহা পাঠ, মিলাদ মাহফিল ও মোনাজাত করা হবে। রাজশাহীতে এ এইচ এম কামারুজ্জামান-এর কবরেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অনুরূপ শ্রদ্ধা জানানো হবে।
    ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যের সঙ্গে নির্মমভাবে হত্যা করার পর এ চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ, এ এইচ এম কামারুজ্জামান এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকান্ডের পর তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সেলের অভ্যন্তরে জাতীয় এ চার নেতাকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভার সবচাইতে ঘৃণিত ও বিশ্বাসঘাতক সদস্য হিসেবে পরিচিত এবং তৎকালীন স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোস্তাক আহমদের প্ররোচণায় একশ্রেণীর উচ্চাভিলাসী মধ্যম সারির জুনিয়র সেনা কর্মকর্তারা এ নির্মম হত্যাকান্ড ঘটায়।
    দেশের এ চার শ্রেষ্ঠ সন্তানকে ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডের পর কারাগারে পাঠিয়ে ষড়যন্ত্রকারীরা প্রথমে গুলি এবং পরে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। জাতীয় এ চার নেতা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তানী সামরিক জান্তার হাতে আটক বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও নেতৃত্ব দান করেন।
    বঙ্গবন্ধুর আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ঘোষণার পর পরই পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে জাতির জনককে তার ঐতিহাসিক ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। পরে দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময় সৈয়দ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
    মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ সরকারের মুজিবনগর সরকারের সমধিক পরিচিত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাজউদ্দিন আহমেদ একটি স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় কোটি কোটি বাঙালীর স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর অপর ঘনিষ্ঠ সহযোগী এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলী আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতি ও কৌশল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।