এ মাসে ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন,অভিযুক্তদের চলছে লবিং

    0
    283

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৫মে,ডেস্ক নিউজঃ  চলতি মাসের ১১ ও ১২ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ছাত্রলীগের ২৯তম জাতীয় সম্মেলন। সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা। সংগঠনের শীর্ষ পদে যেতে ছাত্রনেতারা চালিয়ে যাচ্ছেন জোর লবিং ও তদবির। তবে সেই দৌড়ে কোন অংশেই পিছিয়ে নেই বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্তরা। তারাও সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্বে যেতে।

    জানা যায়, পদ প্রত্যাশীরা বিভিন্নভাবে তাদের যোগ্যতা এবং দলের জন্য ত্যাগকে সামনে এনে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এদিকে সঠিক নেতৃত্ব বাছাই করতে নড়ে চড়ে বসেছেন তবে ছাত্রলীগের কাউন্সিলের সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। তারা বলছেন, ছাত্রলীগের ত্যাগী এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী, মেধাবী এবং সংগঠনের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত এমন নেতাকর্মীরাই ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আসবেন।

    অন্যদিকে বিতর্কিত ও অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে ছাত্রলীগের নীতি নির্ধারকরা। তারা বলছেন, কোন ভাবেই যাতে অনুপ্রবেশকারীদের জায়গা না হয় সেজন্য বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্ট এবং পারিবারিক ব্রাকগ্রাউন্ড যাচাই করা হবে। অতীতে কেউ যদি ছাত্রদল বা শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকে তাদেরকে কোনভাবেই ছাত্রলীগে প্রবেশ করতে দেয়া হবে না।

    ২০১৭ সালে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ছাত্রলীগ নেতাদের উদ্দেশ করে কাদের বলেছিলেন ২০১৭ সালের অঙ্গীকার, অনুপ্রবেশকারী ও পরগাছামুক্ত ছাত্রলীগ চাই। এই পরগাছা ও অনুপ্রবেশকারীরা হচ্ছে ছাত্রলীগের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রধান বাধা। তিনি বলেন, আপনার এক ভাগ, আরেকজনের আরেক ভাগ। এই জনের এই গ্রুপ। আরেকজনের আরেক গ্রুপ। এই গ্রুপের ভাগাভাগি ছাত্রলীগে চলবে না, চলতে দেওয়া যাবে না।

    তবে কেন্দ্রীয় সম্মেলনের ঠিক আগ মুহূর্তে সেই বিতর্কিত, অনুপ্রবেশকারী ও পরগাছাদের দৌড়ঝাপ চলছে চোখে পড়ার মত। অনেক প্রার্থীর বিরুদ্ধে চাদাবাজি, ছিনতাই, টেন্ডারবাজি এবং মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে, কারো কারো বিরুদ্ধে বিয়ে বা চাকুরীর অভিযোগ রয়েছে। আবার এমন অনেক প্রার্থী রয়েছেন যাদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী নয় এমন ছাত্রসংগঠন থেকে অনুপ্রবেশের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে।

    ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দিদার মোহাম্মদ নিজামুল ইসলাম। তিনিও ছাত্রলীগের শীর্ষ পদ পেতে চালাচ্ছেন লবিং এবং তদবির। তার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও মাদকের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে। তিনি যখন এসএম হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন, তখন থেকেই মাদক কেনাবেচায় যুক্ত হন।

    এছাড়া ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বায়েজিদ আহম্মেদ খানের বিরুদ্ধেও রয়েছে শিক্ষাভবনে টেন্ডারবাজি ও বিয়ের অভিযোগ রয়েছে। তিনিও ছাত্রলগের শীর্ষপদে যেতে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন।

    আগামী সম্মেলনে শীর্ষ নেতৃত্বে যেতে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন বর্তমান দফতর সম্পাদক দেলোয়ার শাহাজাদা। তার বিরুদ্ধে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির পদধারী এক নেত্রীর সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্ক থাকার অভিযোগ রয়েছে।

    ছাত্রদলের রাজনীতি করার অভিযোগ রয়েছে ছাত্রলীগের পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুল্লাহ বিপ্লবের নামে। জানা যায়, ছাত্রলীগ সভাপতির ঘনিষ্টতার সূত্র ধরে তিনি বর্তমান কমিটির পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে মনোনিত। পূর্বে ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে হাজী মুহম্মদ মহসীন হল থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল তাকে।

    ছাত্রদল করার আরো অভিযোগ রয়েছে প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম শামীম এবং ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক শেখ সাগর আহম্মেদের বিরুদ্ধ। ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত সাগর এবং মাজহারুল ইসলাম শামীম ৫ জানুয়ারী নির্বাচনের পরে রাজনীতিতে সক্রিয় হন।

    এসব অভিযোগের বিষয়ের জানতে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন বলেন, কোন ধরণের অপরাধীদের ছাত্রলীগে জায়গা হবে না। প্রার্থীদের বায়োডাটা পর্যালোনার ভিত্তিতে কমিটি করা হবে। সুতরাং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ডখ্যাত ছাত্রলীগের কমিটিতে অভিযুক্তদের ঠাঁই পাওয়ার কোন সুযোগ নেই। এসব অভিযোগের বিষয়ের জানতে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি।আলোকিত বাংলাদেশ