র‍্যাব-৯ সিলেট থেকে এএসপি আনোয়ার শামিম ঢাকায়

    0
    279

    নিজস্ব প্রতিনিধিঃ র‍্যাব-৯ সিলেট থেকে এএসপি আনোয়ার শামিম ঢাকায় চলে গেছেন।এটাই স্বাভাবিক, সরকারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরী করলে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে এবং দেশ ও জাতির কল্যাণে কর্মক্ষেত্র পরিবর্তন নতুন কিছু নয়।তবে র‍্যাব-৯ সিলেট এর এএসপি আনোয়ার হোসেন শামিমের বিদায় অন্যান্য বিদায়ের মতো নয় এর কিছুটা চিত্র ভিন্ন।তিনি প্রশাসনের কর্মকর্তা ছাড়াও এমন একজন জনপ্রিয় কর্মবীর নেটিজেন,হাজারো নেটিজেন তার কর্মকাণ্ডে এতটায় ভক্ত যে তার ফেইসবুকের কমেন্ট গুলোর পোস্ট মর্টেম ছাড়া বুঝা মুশকিল।

    সংবাদ সংগ্রহের প্রয়োজনে বিভিন্ন স্থানে তার সাথে সাক্ষাতের সূত্রে তার গুনের মধ্যে সবচেয়ে বড় যে গুনটি লক্ষ্য করা গেছে তা হচ্ছে, সে কথা দিয়ে কথা রাখে,মানুষকে সম্মান করে।আর এই গুন তাকে সবসময় সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মনে আজীবন স্থান করে রাখবে। নিম্নে তার নিজের ফেইসবুক থেকে  একটি স্ট্যাটাস উল্লেখ করছি যা পড়েই তার সম্পর্কে ধারনা করা সহজ হবে।

    Md. Anwar Hossan     এই আইডিতে তিনি যা বলেছেন তা হুবহু কপি করে দেওয়া হলো। 

          

                                                                           “অবশেষে বিদায় সিলেট!”

    “র‍্যাব-৯ এ দীর্ঘ দুই বছর কর্মরত থাকাকালীন শ্রীমঙ্গল র‍্যাব ক্যাম্পসহ বেশ কয়েকটি ক্যাম্পের কমান্ডার, করোনা রেসপন্স টিমের টিম লিডার, র‍্যাব-৯ এর অপারেশন অফিসারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনের পর শেষপর্যন্ত বিদায় সিলেট। আজ থেকে নতুন পরিচয়, নতুন গন্তব্য র‍্যাব সদর দপ্তর, ঢাকা।

    আমার জন্য বিষয়টা যুগপৎ হরিষে বিষাদ অনুভূতির। বেশ কিছুদিন আগে র‍্যাব-৯ এর সম্মানিত অধিনায়ক স্যার আমাকে করোনা রেসপন্স টিমের সভাপতি হিসেবে মনোনীত করার মাধ্যমে যে গুরুদায়িত্ব আমার কাঁধে তুলে নিয়েছিলাম, তার প্রথম ফল এসেছে গতকাল গভীর রাতে। ১৩ জন পজিটিভের মধ্যে সকলেরই নেগেটিভ ফল এসেছে। আগামীকাল আরো বেশ কয়েকজনের দ্বিতীয় টেস্ট, আশা করি তারাও আমাদের জন্য মঙ্গল বারতাই বয়ে নিয়ে আসবেন।

    চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি/মার্চে যখন বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাব হয়, আমি তখন শ্রীমঙ্গল র‍্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার। এরপর সেখান থেকে নিয়ে এসে আমাকে করা হয় র‍্যাব-৯ এর মহাগুরুত্বপূর্ণ করোনা রেসপন্স এন্ড ম্যানেজমেন্ট টিমের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। এই দায়িত্বে থেকে আমি গত বেশ কিছু দিন সরাসরি করোনা রোগীদের নিয়ে ডিল করার সুযোগ পেয়েছি। তাদের চিকিৎসাসহ সার্বিক দেখভালের দায়িত্ব বর্তেছিলো এই অধমের কাঁধেই। অধিনায়ক মহোদয়কে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ যে, এই সেন্সিটিভ দায়িত্বটি প্রতিপালনে তিনি আমার ওপর ভরসা রেখেছিলেন। কতটা সফল বা ব্যর্থ হয়েছি, সেই মূল্যায়নে যাব না। শুধু এটুকুই বলবো, প্রথম লটে পজিটিভ হওয়া ১৩ জনের মধ্যে ১৩ জনই দ্বিতীয় টেস্টে নেগেটিভ হওয়া আমার এবং আমার টিমের জন্য অনেক বড় স্বস্তির বিষয় হয়ে আবির্ভূত হয়েছিলো।

    স্বস্তির বিপরীতে খারাপ লাগছে আমার রোগীদের জন্য। তারা আমাকে মিস করবেন কিনা জানি না, কিন্তু র‍্যাব-৯ এর শেষ রোগীটি সুস্থ হবার আগ পর্যন্ত আমি তাদের কথা ভাবব, প্রতিমুহূর্তে তাদের কথা মনে করব। আর সিলেটের এই দুই বছরে অসংখ্য ভাই, বন্ধু, শুভার্থীর (নাম উল্লেখ করলাম না) ভালবাসা, সমর্থন পেয়েছি, আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। আপনারা আমার ওপর এমন নিঃশর্ত আস্থা, বিশ্বাস ও সহযোগিতা বজায় রেখেছিলেন বলেই আমি জীবনের সিলেট অধ্যায়ে অর্জনের খাতায় সামান্য কিছু হলেও যোগ করতে পেরেছি।

    র‍্যাব-এর ঊর্ধ্বতন স্যারদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা, তাঁরা জরুরিভাবে হেলিকপ্টার পাঠিয়ে আমাকে আজ বিকেলেই ঢাকায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছেন।
    সবাই ভাল থাকবেন। ভাল থাকুক পুণ্যভূমি সিলেট। স্বাগতম ঢাকা।”