উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর আয়োজনে কমলগঞ্জে লোকজ উৎসব

    0
    290

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৪ফেব্রুয়ারি,কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:   “উৎসবের রঙে বাঁধি প্রাণের দোতরা” এই শ্লোগানকে ধারণ করে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের ঐতিহাসিক কৃষক বিদ্রোহের স্মৃতিবিজড়িত ১নং ভানুবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে দিনব্যাপী লোকজ উৎসব-২০১৮ অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে উৎসব উদ্বোধন করেন রমজান আলী বয়াতি ও মৌলভীবাজারে জেলা উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর সভাপতি এড. ডাডলী ড্যারিক প্রেন্টিস।
    দিনব্যাপী এ আয়োজনে ছিল কানামাছি, বউচি, ফুলগুটি, দড়ি লাফ, গাজীর গান, পূথিঁপাঠ, ধামাইলসহ লোকজ খেলাধুলা, নাচ, গান, পালা, লোকজ বাদ্য ও লোকশিল্পের প্রদর্শনী, লোক-গান, উদীচীর শিল্পীদের নানা পরিবেশনা এবং স্থানীয় লোক শিল্পীদের পরিবেশনায় লোকজ গান, নাচ ও নাটক।
    বেলা ৩টায় লোকজ উৎসব উদযাপন কমিটির আহবায়ক আহমদ সিরাজের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জহর লাল দত্তের স ালনায় লোকজ উৎসব -২০১৮ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নেন লোক গবেষক ও সাবেক জেলা সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি মাহফুজুর রহমান, সাহিত্যিক আকমল হোসেন (নিপু), কমলগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মো: জুয়েল আহমেদ, জেলা পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মো: হেলাল উদ্দিন, জেলা উদীচীর সভাপতি এড. ডাডলী ড্যারিক প্রেন্টিস, সাধারন সম্পাদক আব্দুল হাফিজ চৌধুরী (হিমু), অধ্যক্ষ মো: নুরুল ইসলাম, সাংবাদিক মুজিবুর রহমান রঞ্জু, কমলগঞ্জ উদীচীর সভাপতি অধ্যাপিকা মঞ্জুশ্রী রায়, সাধারন সম্পাদক প্রনীত রঞ্জন দেবনাথ, ১নং ভানুবিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাজী মো: জয়নাল আবেদীন, নারী নেত্রী শিক্ষিকা বিলকিছ বেগম প্রমুখ।
    আয়োজকদের কথায় বাংলার লোক-সংস্কৃতির সবচেয়ে শক্তিশালী উপাদান তার অসাম্প্রদায়িক চরিত্র। ফসল বোনার গান, ফসল তোলার গান, মাঝি-মাল্লার গান, নকিশকাঁথা, গ্রাম্য মেলা, পালা-পার্বন প্রভৃতি সবকিছুই ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের সম্পদ ছিল। আগে সম্প্রদায়গত বিভেদ থাকলেও তা কখনোই আগ্রাসী বা বিদ্বেষপূর্ণ ছিল না। পুঁজির ক্রমবিকাশ এবং বৈষম্যমূলক সমাজব্যবস্থার কারণে গ্রামীন সমাজ কাঠামো ভেঙ্গে পড়েছে। গ্রামীণ জনজীবন ও আবহে গড়ে ওঠা লোকজ সংস্কৃতির চর্চাও ক্ষীয়মান। এ সুযোগে, মৌলবাদ ও জঙ্গীবাদ ধর্মপ্রাণ মানুষের মনোজগতকে দখল করার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। গ্রামীণ জীবনের অসাম্প্রদায়িকতার উজ্জ্বল নিদর্শন হিসেবে লোক-সংস্কৃতির সচেতন চর্চা এবং প্রয়োগের মাধ্যমে মৌলবাদ-জঙ্গীবাদকে প্রতিহত করা সম্ভব বলে মনে করে উদীচী।
    লোক-সংস্কৃতির মাধ্যমে মানুষের চিন্তাকাঠামো থেকে সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্পকে দূর করা এবং মৌলবাদ-জঙ্গীবাদকে প্রতিহত করার দৃঢ় প্রত্যয়ে কমলগঞ্জের প্রত্যন্ত গ্রাম ভানুবিলে উদীচী মৌলভীবাজার জেলা সংসদ এ উৎসব আয়োজন করে। এ উৎসবে মাধ্যমে গ্রাম ও নগরের মানুষের মেলবন্ধন আরো দৃঢ় হয়ে দিনব্যাপী ছিল মহা মিলনমেলা।