ইরানের সঙ্গে ছয় জাতিগোষ্ঠীর চূড়ান্ত পরমাণু চুক্তির রূপরেখা

    2
    362

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৩এপ্রিলঃ ইরানের সঙ্গে ছয় জাতিগোষ্ঠীর চূড়ান্ত পরমাণু চুক্তির রূপরেখায় তেহরানের পরমাণু তৎপরতার প্রতি স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। রূপরেখা  অনুযায়ী- নাতাঞ্জ, ফোরদো, ইস্পাহান এবং আরাকসহ ইরানের কোনো পরমাণু স্থাপনা বা পরমাণু তৎপরতা বন্ধ বা স্থগিত করা হবে না। বরং ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার কর্মসূচি অব্যাহত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।

    ইরান ও ছয়জাতিগোষ্ঠীর যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পরমাণু সংক্রান্ত  চূড়ান্ত চুক্তি ১০ বছরের জন্য কার্যকর থাকবে। এতে, নাতাঞ্জ পরমাণু স্থাপনায়  পাঁচ হাজারের বেশি সেন্টিফিউজ ৩.৬৭ মাত্রা সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম তৈরির তৎপরতা অব্যাহত রাখবে ইরান। এ কেন্দ্রের বাড়তি যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ সংগ্রহ করবে। এর বদলে ইরানকে বরাদ্দকৃত মাত্রায় সৃমদ্ধ করার কাজে ব্যবহৃত নতুন যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হবে। ইরানের বর্তমান সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদের বিনিময়ে পরমাণু জ্বালানি চক্র তৈরিতে ব্যবহৃত উপাদান উৎপাদন করতে দেয়া হবে কিংবা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ইউরেনিয়াম বদলে নিতে পারবে ইরান। এ ছাড়া, এতে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি চক্রের শিল্পখাতে উৎপাদনও নিশ্চিত করা হয়।

    সমঝোতা চুক্তিতে বলা হয়, ইরান অত্যাধুনিক সেন্ট্রিফিউজ নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখবে। ১০ বছরের জন্য আইআর-৪, আইআর-৫, আইআর-৬ এবং আইআর-৮ যন্ত্র নিয়ে এ গবেষণা অব্যাহত রাখা হবে।

    যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফোরদো পরমাণু স্থাপনাকে পরমাণু বিজ্ঞান ও পদার্থবিদ্যার গবেষণাগারে পরিণত করা হবে। এ কেন্দ্রে এক হাজার সেন্টিফিউজ রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। ফোরদো’র দু’সারি সেন্ট্রিফিউজ তৎপরতা বজায় রাখবে। ছয় জাতিগোষ্ঠীর সহায়তায় ফোরদোর অর্ধেককে অত্যাধুনিক পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে রূপান্তর করা হবে। এ ছাড়া, এ কেন্দ্রে স্থিতিশীল আইসোটোপ উৎপাদন করা হবে।  শিল্প, কৃষি এবং ওষুধখাতে এ আইসোটোপের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

    এ ছাড়া, আরাকের ভারি পানির পরমাণু চুল্লিও থাকবে। তবে তার আধুনিকায়ন এবং নতুন করে নকশা করা হবে। নতুন করে নকশা প্রণয়ন করার মাধ্যমে এ কেন্দ্রে কর্মতৎপরতা বাড়বে তবে প্লুটোনিয়াম উৎপাদনের মাত্রা কমবে।

    কিছু সম্পূরক প্রোটোকলও বাস্তবায়িত করবে ইরান। এটি একান্তভাবেই স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়েই করবে ইরান। ইরানের সরকার ও সংসদ সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এই প্রোটোকল বাস্তাবায়িত করবে।

    সমঝোতায় বলা হয়েছে, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা সংক্রান্ত সকল ইশতেহার প্রত্যাহার এবং আমেরিকা, ব্রিটেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবরোধগুলো তুলে নেওয়া হবে। পাশাপাশি আর নতুন কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ হবে না।

    সুইজারল্যান্ডের লোজেন শহরে টানা আট দিনব্যাপী আলোচনার পর গতকাল ইরানের সঙ্গে ছয় জাতিগোষ্ঠীর চূড়ান্ত পরমাণু চুক্তির বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে।

    পরে এক সংসবাদ সম্মেলেন যৌথ বিবৃতি পাঠ করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোগেরিনি।ইরনা