আ’লীগের অনেক এমপির পছন্দ বিএনপি-জামায়াত,কেন?

    0
    317

    অভিযোগ,টাকার বিনিময়ে এমপিদের বিএনপি-জামায়াত ভালোবাসার কারণে তৃণমূল নেতারা বঞ্চিত! প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের এক নেতা এই ঘটনা জানান।

    জনৈক ইউপি চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা গিয়েছিলেন এলাকার এমপির কাছে। দলের এমপির কাছে তার তদবির ছিল ছেলের চাকরি। চেয়ারম্যানের কথা শুনে এমপি বললেন, ক্যাসিনো কাণ্ডের পর এখনতো চারদিকে বেশ কড়া-কড়ি। মেধা তালিকায় থেকেও অনেকের চাকরি হয় না। তারপরও আমি দেখব। কিছুদিন পর খবর এলো তার ছেলের চাকরি হয়নি। বিষয়টি মেনেই নিয়েছিলেন ওই আওয়ামী লীগ নেতা। কিন্তু পরে যা শুনলেন তা কোনো ভাবেই মানতে পারছিলেন না।

    চাকরি হয়েছে এলাকায় বিএনপি পরিবার বলে খ্যাত একজনের ছেলের। একটু খোঁজ নিয়েই জানতে পারলেন বিস্তারিত। এমপি সাহেব ওই পরিবারের ছেলের জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করেছেন। পরিবার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বলে সার্টিফাই করেছেন। আবার গোয়েন্দা সংস্থা যখন ভেরিফাই করতে গেছে সেখানেও ম্যানেজ করে সব ঠিক করেছেন এমপি। বিএনপি পরিবারের জন্য আওয়ামী লীগের এমপির ভালোবাসার উৎস হলো টাকা। বড় অঙ্কের টাকা নিয়ে বিএনপির ছেলেকে সরকারি চাকরি নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের এমপি।

    প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের এক নেতা এই ঘটনা জানান।

    দলের কাউন্সিলের আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে সভা করেছেন। সভায় উপস্থিত সব নেতৃবৃন্দের বক্তব্য শোনা সম্ভব হয়নি আওয়ামী লীগ সভাপতির। তখন প্রধানমন্ত্রী তৃণমূলের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আপনাদের এলাকার যার যা সমস্যা লিখে খামে ভরে নির্দিষ্ট বক্সে জমা দিয়ে যাবেন। তৃণমূলের নেতারা লিখিতভাবে তাদের অভিযোগের কথা জমা দিয়ে যান। উল্লেখিত ঘটনাটি একজনের লেখায় পাওয়া যায়।

    আর এমন অভিযোগ একটি নয়, অসংখ্য। বেশির ভাগ উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগ কর্মীদের কাছ থেকে টাকা খেতে পারে না বলে তাদের পছন্দ করেন না অনেক এমপি। এমপিদের পছন্দ বিএনপি-জামায়াত, কারণ তাদের কাছ থেকে নানা সুবিধা পাওয়া যায়। চাকরির তদবির (ডিও) করে বিএনপি-জামায়াতের জন্য। আবার চাকরির তদবির করতে গেলে গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট লাগে। তখন গোয়েন্দা সংস্থাকে ম্যানেজ করার কথা বলে আলাদা করে টাকা নেন এমপিরা।

    শুধু চাকরির তদবিরই নয়, ব্যবসা দেওয়ার ক্ষেত্রেও আওয়ামী লীগের অনেক এমপির পছন্দ বিএনপি-জামায়াত। কারণ আওয়ামী লীগের লোকজনের কাছ থেকে টাকা চাইতে পারেন না তারা। এই এমপিরা নিজে ব্যবসা নিয়ে জামায়াত-বিএনপির কাছে অর্থের বিনিময়ে তুলে দেন।

    এখানেই শেষ নয়। বিএনপি-জামায়াত থেকে আরও আয়ের উৎস আছে এমপিদের। বিএনপি-জামায়াতের লোকেরা গ্রেপ্তার হলে তাদের জন্য থানা-পুলিশ তদবির করছেন অনেক এমপি। অর্থের বিনিময়ে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীদের কোর্টে জামিনের ব্যবস্থাও করছেন এই এমপিরা।

    আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতারা দেখা যায় এমপিদের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেন, যুক্তি-ত’র্ক করেন। এই কারণে অনেক এমপি তো তৃণমূলের নেতাদের কথা বলার সুযোগই দেন না। এমপির সাক্ষাতই পান না অনেক তৃণমূল নেতা।

    জানা গেছে, প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকা থেকে উল্লেখিত অভিযোগগুলো এসেছে। সাম্প্রতিক যত নিয়োগ হয়েছে তাতে অনেক বিএনপি-জামায়াতপন্থী চাকরি পেয়েছে বলে অভিযোগ করেন অনেক তৃণমূল নেতা।

    তৃণমূলের একাধিক নেতা বলেন, এমপিদের কাছে বিএনপি-জামায়াতের লোকেরা টাকা নিয়ে যায়। তাদের কথা গোপন রাখা হয়। চাকরি পাওয়ার সময় টাকা দেওয়া লোকরাই পায়। এমপিরা টেন্ডার-ব্যবসা বিক্রি করে বিএনপি জামায়াতের কাছে। নিজেদের লোক তো আর টাকা দিবে না।

    দীর্ঘদিন টানা ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু টাকার বিনিময়ে এমপিদের বিএনপি-জামায়াত ভালোবাসার কারণে তৃণমূল নেতারা বঞ্চিতই রয়ে গেছেন। অথচ ক্ষমতায় না থেকেও বহাল তবিয়তে আছে বিএনপি-জামায়াতের লোকেরা। somoy ekhon এর বিশেষ প্রতিনিধি।