আরেকটা কারণ ড.কামাল হোসনের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস:মওদুদ

    0
    250

    বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন,আওয়ামীলীগ সরকারের অধীনে বিএনপি একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেছে তিন কারনে। একটা বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে নির্বাচনে গিয়েছি। যদি নির্বাচনে না যেতাম তাহলে আপনারাই বলতেন,না গিয়ে ভুল করেছেন। আরেকটি কারণ হলো, নির্বাচনে গেলে আমাদের নেতাকর্মীরা বের হয়ে আসতে পারবে। মানুষের কাছে যেতে পারবে। আরেকটা কারণ ছিল ড. কামাল হোসনের প্রতি অন্ধ বিশ্বাস ছিল। নির্বাচনে এতোটা খারাপ অবস্থা হবে তা ধারণায় ছিল না।নির্বাচনের আগের রাতে পৃথিবীর ইতিহাসকে কলংকিত করে ভোট ডাকাতি হবে তা আমরা চিন্তা করিনি।

    সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আইনজীবী ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত ‘বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।আইনজীবী ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সুব্রত চৌধুরী, ব্যারিস্টার আমিনুল হক, জগলুল হায়দার আফ্রিক, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অ্যাড. মাসুদ আহমেদ তালুকদার, আজাদ মাহবুব, শাহ আহমেদ বাদল, অলিউর রহমান খান, খোরশেদ মিয়া আলম, মনির হোসেন, সাইদুর রহমান প্রমুখ।

    মওদুদ বলেন, আমাদের একজন প্রার্থীকেও ৯০ ভাগ সুষ্ঠুভাবে প্রচারণা চালাতে দেয়া হয়নি। প্রার্থী ও নেতাকর্মীদের বাড়ির পাশে বোমা ফাটিয়েছে, ভয়ভীতি ছড়িয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে, যেন তারা ভোটকেন্দ্রে না যায়। গেলে বাড়ি জ্বালিয়ে দেবে, ছেলেদের জেলে পাঠাবে। এ নির্বাচনে সরকার পুলিশকে ক্যাশ টাকা দিয়েছে। আগে আমরা প্রার্থীরা ক্যাশ টাকা দিতাম। কিন্তু সরকার যে পুলিশকে ক্যাশ টাকা দেয়, সেটা আগে জানা ছিল না। এটা হাতে কলমে প্রমাণ করা যাবে না। তবে কথাগুলো শতভাগ সত্য।

    বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মওদুদ আহমদ বলেন, গত সপ্তাহে দেখা হয়েছে নেত্রীর সঙ্গে। তার শরীর খুবই নরম হয়ে গেছে। কিন্তু মনোবল শক্ত। দুই হাতে ব্যথা। ফুলে গেছে। পা’টা মাটিতে রাখা সম্ভব হয় না। আজকে এক বছর হয়ে গেছে তাঁর কারাবন্দির।বাংলাদেশের তিন বারের প্রধানমন্ত্রীকে একটি ছোট্ট, ভিত্তিহীন কারণে সাজা দেয়া হয়েছে। এই মামলায় ৭ দিনের বেশি জেলে থাকার কথা নয়। অথচ হাইকোর্টে জামিনের পরও তাকে দুই মাস জেল খানায় থাকতে হলো। তাকে এরপর ছোট ছোট মামলায় শোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়। কুমিল্লা, নড়াইল আর ঢাকার তিনটি মামলায় তাকে শোন অ্যারেস্ট দেখানো। এরপর চলে গেলো নিম্ন আদালতে। নিম্ন আদালত তো পুরোপুরি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। সুপ্রিমকোর্টের কোনো এখতিয়ার নাই বললেই চলে।আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। যেহেতু আদালতের মাধ্যমে সম্ভব নয়। তাই আন্দোলন। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য আন্দোলন আরও বেগবান করতে হবে। আর এ আন্দোলন সফল করার জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মওদুদ বলেন, আন্দোলন বললেই আন্দোলন হবে না। আমাদের নেতাকর্মীরা যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে, যাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়েছে, যাদের হত্যা করেছে। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।যারা আন্দোলন করবে তারা তো দাঁড়াতে পারে না। আন্দোলন যাদেরকে নিয়ে করবেন তাদেরকে পুনর্বাসন করতে হবে। তাদের মধ্যে আস্থা, বিশ্বাস ফিরিয়ে আনেন। তাদেরকে আমাদের সঙ্গে একত্রিত করেন। তাহলে তারা বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আন্দোলন করবে। এই দুঃসময়ে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদেরকে এবং তরুণদের নেতৃত্বে নিয়ে আসতে হবে। এই পুনর্বাসন যদি আমরা করতে পারি তাহলে সম্ভব। এই সরকার যে শূণ্যতা সৃষ্টি করেছে তা আর তখন থাকবে না। সরকার বেশিদিন আনন্দে থাকতে পারবে না। কোনো না কোনো সময়ে আন্দোলন হবে, সরকারের পতন হবে।

    জমির উদ্দিন সরকার বলেন, আমরা এমন অবস্থায় আছি, আইনের মধ্য দিয়েও খালেদা জিয়া মুক্ত করা যাবে না, বেআইনি ভাবেও না। তাই আমাদেরকে মাঝামাঝি কিছু একটা করে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

    সুব্রত চৌধুরী বলেন, আন্দোলন সংগ্রাম ছাড়া কোনো মুক্তি নাই, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নাই। ১৬ কোটি মানুষের মুক্তি নাই। এ লক্ষ্যে প্রতিদিন আন্দোলন হবে প্রতি সপ্তাহে আন্দোলন হবে। আর সেই আন্দোলন করেই আমাদের বিজয় ছিনিয়ে আনতে হবে।জয়নুল আবেদীন বলেন, বিএনপি শক্তিশালী না হলে আইনজীবী সংগঠন শক্তিশালী হয় না। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি, অনেকবার দেখেছি আইনিভাবে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। এখন আমাদের উচিৎ ঐক্যবদ্ধ হওয়া, ঐক্যবদ্ধ না হলে যতোই আন্দোলন কর্মসূচি দেন কোনো লাভ হবে না। আমরা আমি না হয়ে আমরা সকলে আমরা হতে হবে।ইত্তেফাক