নিজস্ব প্রতিনিধি,মৌলভীবাজারঃ মৌলভীবাজারে সম্প্রতি ৫ খুনের রেশ খাটতে না খাটতেই ঘটে গেল আরেকটি হত্যা কাণ্ড! জেলার সদর উপজেলার হিলালপুর এলাকায় পূর্ব শত্রুতার বদলা নিতে রাজন আহমদ রাজা নামের এক যুবককে রাস্তা থেকে ধরে বাড়িতে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষ ।
মঙ্গলবার (২১শে জানুয়ারি) সকাল ৯টার দিকে দিকে এই নির্মম ঘটনাটি ঘটে।রাজন সদর উপজেলার বুদ্ধিমন্তপুর এলাকার আশিক মিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে। সে শহরের সুলতানপুরে বসবাস করতেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসির সূত্রে জানা যায়, সকাল ৯টার দিকে এলাকায় পীর হিসেবে পরিচিত পীর আজাদ পার্শ্ববর্তী এলাকা বালিকান্দি কেয়াঘাট থেকে রাজনকে ধরে হিলালপুরস্থ কথিত পীর আজাদের নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। এ সময় পীর আজাদ ও তার সহযোগীরা ধারালো দেশীয় অস্ত্রদিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে রাজনকে। হত্যার পর পীর আজাদের সহযোগীদের মাধ্যমে একটি সিএনজি অটো রিক্সায় করে নিহত রাজনের মরদেহ মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে পীর আজাদ বাড়িতে তালা দিয়ে স্ব-পরিবারে পালিয়ে যায়।
সরেজমিন মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা হাসপালে গিয়ে দেখা যায়,নিহত রাজনের ৫ বছরের একটি কন্যা শিশু সন্তান এবং ৭ ও ৯ বছরের দুটি শিশু সন্তান রয়েছে। তারা বাবার শোকে অঝোরে কাঁদছে, কেউ তাদেরকে শান্ত করতে পারছেনা। এ সময় নিহত রাজনের স্ত্রীকে বার বার মূর্ছা যেতে দেখা যায়, ঘটনার বীভৎসতায় হাসপাতালে উপস্থিত দর্শনার্থীদের বাক্রুদ্ধ থাকতে দেখা যায়।
হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে,আজ সকাল ৯টা ১০ মিনিট থেকে ৯টা ২০ মিনিটের ভেতর ৪ যুবক মিলে এক যুবককে জরুরি বিভাগে রেখে পালিয়ে যায়। পরে তাকে মৃত বলে জানা যায়।আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছি, কিন্তু তেমন ভাল করে বুঝা যাচ্ছেনা। পুলিশের হাতে সিসিটিভি ফুটেজ দেওয়া হবে বলে সুত্রে জানা গেছে।
নির্মম এই ঘটনার ব্যাপারে মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন বলেন, নিহত রাজন পীর আজাদের ছোট ভাই রুবেল হত্যার এজহারভুক্ত ৮নং আসামী।বর্তমানে সে জামিনে ছিল। এঘটনার পর এলাকায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে পরিস্তিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে যাতে আর কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে পুলিশ সতর্ক রয়েছে বলে জানান তিনি।মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে একটি সুত্রে জানা গেছে।
উল্লেখ্য গত রোববার বড়লেখা উপজেলার পাল্লারতল চা বাগান এলাকায় ভোরে একই স্থানে ঘটে গেল ভয়াবহ ৪ হত্যাকাণ্ড। ৪ সিরিজ খুনের ঘটনায় আতংক কাটেনি এখনো এলাকার জনগণের।
ওইদিন চারজনকে নৃশংসভাবে হত্যা করে ঘাতকের আত্মহত্যার ঘটনায় বাগানের নিরীহ চা শ্রমিকরা এখনো ভীত।