আন্তর্জাতিক পিস কিপিং-উন্নয়নের জন্য বাংলাদেশ রোল মডেল

    0
    201

    – জিএসসির সভায় ডঃ মোমেন

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৬মে,সৈয়দ শাহ সেলিম আহমেদঃ জাতি সংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ডঃ আব্দুল মোমেন বলেছেন, বিশ্ব শান্তি রক্ষা, স্বল্পোন্নত দেশের দারিদ্র দূরীকরণ, উন্নয়ন, নারীর সক্ষমতা ও ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এক নয়া রোল মডেল। দেশের ভিতরে যেমন ছোট খাটো অঘটন ছাড়া সরকার বেশ কিছু ভালো ভালো কাজ করছে, ঠিক একই ভাবে আমরা জাতি সংঘে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত নীতির ফলেই ভাবমূর্তি তুলে ধরতে পারছি। তিনি ২৪শে মে ২০১৫ লন্ডনের আট্রিয়াম হলে গ্রেটার সিলেট ডেভেলপম্যান্ট কাউন্সিল ইন ইউকে আয়োজিত বার্ষিক সাধাঁরণ সভা ও ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন।

    ডঃ মোমেন বলেন, আপনারা প্রবাসীরা সব চাইতে অগ্রবর্তী এবং নতুন নতুন চিন্তা ও ডায়নামিক ব্যবসায়িক প্রস্তাবনা নিয়ে সামনে এগিয়ে আসেন। আপনারা প্রবাসীরাই দেশের রেমিট্যান্সে গতি স ার করে রাখছেন। এ সময় তিনি উপস্থিত প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এক তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে দেশে ৮১ লক্ষ হেক্টর চাষ যোগ্য জমি অনাবাদী রয়ে আছে, যার মধ্যে ৮০% আপনাদের প্রবাসীদের। আপনারা উদ্যোগী হয়ে নতুন নতুন ইনোভেশন ব্যবসায়ীক প্রস্তাবনা নিয়ে আসেন। কারণ আপনাদের দ্বারাই সম্ভব। কিন্তু কি ভাবে করবেন আমি এই মুহুর্তে জানিনা, আপনারা আমাকে পরামর্শ দিন কিভাবে করা যায়। যদিও দেশের ব্যুরোক্রেসী এ ক্ষেত্রে প্রধান বাধা সেই সাথে আছে করাপশন। তবে একবার যদি সেই বাধা অতিক্রম করে দাঁড়িয়ে যান তাহলে আর কোন সমস্যা থাকবেনা। এ ক্ষেত্রে তিনি নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন।

    ডঃ মোমেন বলেন, ১৯৭৩ সালে আমি যখন এই লন্ডনে আসি, তখন আপনারা এই প্রবাসীরা আমাকে বুদ্ধি দিয়েছিলেন, যার ফলশ্রুতিতে আপনাদের পরামর্শেই আমি ৭৪-৭৫ সর্ব প্রথম ওয়েজ আর্নার স্কীম চালুর ব্যবস্থা করেছিলাম। এবারও পরামর্শ দিন এই অনাবাদী বিশাল জমি কিভাবে দেশের জন্য কাজে লাগানো যায়। এতে আপনারা নিজেরা, পরিবার পরিজন, আত্মীয়স্বজন এবং একই সাথে দেশ উপকৃত হবে।

    ডঃ মোমেন বিএনপিরও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন তারা যদিও মিথ্যে বলে, তাতে আমাদের লাভ হয়। তাদের মিথ্যা প্রচারের ফলে আমাদের কাজ একটু বেড়ে যায়। এ প্রসঙ্গে হেফাজতের ফটো শপ আর ছয় কংক্রেস ম্যানের সই জাল করে বিবৃতির কথা তুলে ধরেন।

    ডঃ মোমেন বলেন, ক্লাইমেট চেইঞ্জের বিপদ থেকে গরীব দেশ গুলোকে রক্ষার জন্য আপনারা ক্যাম্পেইন শুরু করতে পারেন সচেতনা ও ধনীদেশগুলোর নজর কাড়া এবং সেই সাথে ক্লাইমেট চ্যাঞ্জের ফলে ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোতে তহবিল যথাযথ ভাবে প্রদানের জন্য।

    এর আগে বিভিন্ন বক্তারা এবং সর্বশেষে সংগঠনের পক্ষ থেকে  বিভিন্ন দাবী দাওয়া বাংলাদেশ সরকার ও ব্রিটিশ সরকারের কাছে তুলে ধরা হয়। সভায় বক্তারা দীর্ঘ ২২ বছর যাবত এই সংগঠনের মাধ্যমে প্রবাসীদের দাবী দাওয়া আদায়ে অগ্রনী ভূমিকা রাখায় সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান অনুষ্ঠানে আসা  বিভিন্ন  সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে।

    সংগঠনের চেয়ারপার্সন নূরুল ইসলাম মাহবুব এর সভাপতিত্বে ও জেনারেল সেক্রেটারী সৈয়দ আব্দুল কাইয়ুম কায়ছার ও জয়েন্ট সেক্রেটারী মকিস মনসুর আহমদ এর যৌথ পরিচালনায় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ব্রিটেনে বাংলাদেশে ডেপুটি হাইকমিশনার খন্দকার মোহাম্মদ তালহা, বাংলাদেশ বিমানের কান্ট্রি ম্যানেজার  মো: শফিকুল ইসলাম, হাই কমিশনের ফাষ্ট সেক্রেটারী মো: সায়েম আহমদ, সংগঠনের পেট্রন ড. হাসনাত এম হোসেইন, প্রবীণ সাংবাদিক, কমিউনিটির নেতা কে এম আবু তাহের চৌধুরী, আলহাজ্ব নাসির আহমদ, ব্যান্ট কাউন্সিলের ডেপুটি মেয়র কাউন্সিরার পারভেজ  আহমদ, সংগঠনের ট্রেজারার ফিরোজ খান, কারী এওয়ার্ড এর প্রতিষ্ঠাতা এনাম আলী এমবিই, বিসিএর সাধারণ সম্পাদক এম এ মুনিম, বিবিসিসির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো: নূর, সাবেক সভাপতি শাহগীর বখত ফারুক, এনআরবির চেয়ারম্যান শেকিল চৌধুরী, সংগঠনের সাবেক চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী  মনসব আলী জেপি, ব্যারিষ্টার আতাউর রহমান, সাবেক  সাধারণ সম্পাদক মির্জা আসহাব বেগ, মুক্তিযোদ্ধা এম এ মান্নান, মিয়া মনিরুল আলম, যুক্তরাজ্য আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজিদুর রহমান ফারুক, জালালাবাদ এসোসিয়েশন ইটালীর সভাপতি ওলিউর রহমান শামীম, জিএসসি মৌলভী বাজার জেলার সভাপতি ডাঃ সাদিক আহমদ, জিএসসি সাউথ ইষ্ট রিজিওনের সভাপতি সভাপতি মো: ইসবাহ উদ্দিন, সাধারণ স্পাদক ড. মুজিবুর রহমান, কাউন্সিলার আসাদুর রহমান, লন্ডন ট্রেনিং সেন্টারের আব্দুল হক হাবিব, ক্যানারী ওয়ার্ফ  এর জাকির খান, বিবিসিএ এর সেক্রেটারী শাহনুর খান, তৌফিক আলী মিনার প্রমুখ।

    সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত মাওলানা সিদ্দিকুর রহমান চৌধুরী।

    সভায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট সেক্রেটারী মকিস মনসুর আহমদ প্রস্তাবগুলি পাঠ করার পর সর্বসম্মতিক্রমে ৮টি প্রস্তাব গৃহিত হয়। প্রস্তাবগুলি হচ্ছে- ঢাকাস্থ বৃটিশ হাইকমিশনকে দিল্লীতে স্থানান্তরের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে  ঢাকায় পুন:স্থাপন, প্রবাসী বাংলাদেশীদের  প্রবাস থেকে বাংলাদেশের ভোটার তালিকায় অন্তভূক্ত করা, অনতিবিলম্বে সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট চালু ও ওসমানী বিমানবন্দরে রিফুয়েলিং স্টেশন চালু করা, ঢাকা ও সিলেট বিমানবন্দরে প্রবাসী যাত্রীদের হয়রানী বন্ধ এবং বিমানযাত্রীদের হয়রানী বন্ধ, প্রবাসীদের সহায় সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানানো হয়।

    এছাড়া বৃটিশ সরকারের কঠোর ইমিগ্রেশন নীতির সমালোচনা করে রেষ্টুরেন্টগুলোতে ঘনঘন রেইড ও স্টাফ সংকট দূরিকরনে বৃটিশ সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়।