আত্রাই হানাদার মুক্ত দিবস

    0
    250

    নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মহাত্মা গান্ধীর স্মৃতি বিজড়িত এলাকা আত্রাই উপজেলা। এই উপজেলা মূলত উত্তরবঙ্গের মধ্য মৎস্য ও শষ্য ভান্ডার হিসেবে পরিচিত। বাঙ্গালী জাতির স্বাধীনতা সংগ্রামের চুড়ান্ত বিজয়ের দিন ১৬ ডিসেম্বরের বাকী আর ২দিন। ১৯৭১ সালের ১৪ডিসেম্বর আত্রাই বাসীর জন্য একটি স্মরনীয় দিন। ১৯৭১ এর আজকের এই দিনে নওগাঁর আত্রাই উপজেলা হানাদার মুক্ত হয়।

    স্বাধীনতার সংগ্রামে সাড়া দিয়ে সারা দেশের ন্যায় এই উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা মাতৃভূমিকে শত্রু মুক্ত করার লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের ৯মাস রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর নওগাঁর আত্রাই উপজেলাবাসী আজকের এ দিনে শত্রুমুক্ত হয়ে বিজয় উল্লাস আর “জয় বাংলা,বাংলার জয়” জয়ধ্বনিতে প্রকম্পিত করে তুলেছিল উপজেলার আকাশ-বাতাস। এ এলাকা পাক হানাদার মুক্ত করতে অসংখ্য জীবন বলিদান এবং কত অসহায় মা বোনের ইজ্জত লুন্ঠন করেছিল সেই ভয়াবহ দিনে তার সঠিক পরিসংখ্যান কেউ জানে না। এছাড়াও পঙ্গুত্বের অভিশাপ আর মা-বাবা, স্বামী, স্ত্রী, ভাই, বোন হারানো অসহ্য যন্ত্রনা নিয়ে এখনও অনেক নারী-পুরুষ বেঁচে আছে। স্বাধীনতার এত বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ তাদের খোজ-খবর রাখেনি।

    সাবেক এমপি ও মুক্তিযোদ্ধা ওহিদুর রহমান বলেন, সেই সময় চলাচলের জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভালো ছিলো না। রেলপথই ছিলো সহজ ভাবে চলাচলের জন্য সুবিধাজনক বাহন। তাই আমরা বুদ্ধি করে ৭১সালের ৬সেপ্টেম্বরে আত্রাই-সান্তাহার অংশের সাহাগোলা নামক স্থানে সাহাগোলা রেল ব্রিজটি ধ্বংস করে দিই। এতে করে নাটোর থেকে পাক-বাহিনীর সেনা বহনকারী একটি স্পেশাল ট্রেন রাতে লাইট বন্ধ করে ওই ভাঙ্গা ব্রিজ দিয়ে যাওয়ার সময় ট্রেনটি ওই ব্রিজের নিচে পড়ে যায়।

    এতে করে পানিতে ডুবে অনেক পাক-সেনা নিহত হয়। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় জয় ছিলো। এরপর পাক-বাহিনীরা যুদ্ধে আমাদের সঙ্গে না পেরে নাটোরের অভিমুখে পালিয়ে যায়। পরে মুজিব বাহিনী ও মুক্তিকামী জনতা রাত ২টায় প্রথমে থানায় পদার্পণ করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে। আর আমরা এভাবেই অনেকটা কম পরিশ্রম ও কম হানাহানির মাধ্যমে ১৪ডিসেম্বর আত্রাই উপজেলাকে হানাদার মুক্ত করি।