আত্মকর্মসংস্থানে যুব সমাজের ভূমিকা ও করণীয়

    0
    607

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,২৩নভেম্বরঃ    যুব সমাজ হচ্ছে দেশ ও জাতির অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি । এই শক্তির সঠিক ব্যবহারে দেশ উন্নত হয়, জাতিসত্ত্বার বিকাশ ঘটে, সমাজ জীবনের সকল জটিলতার অবসান হয় । সামাজিক পরিবর্তন সাধনে সম্ভবপর হয়ে ওঠে । তাই দেখা যায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে তার পেছনে এই যুব সমাজেই মোক্ষম ভূমিকা পালন করছে । জাতীয় অগ্রগতি তথা সার্বিক উন্নয়নে যুব সমাজেই ব্যাপক ভূমিকা পালন করছে। সর্বোচ্চ ডিগ্রীধারীদের থেকে শুরু করে অক্ষর জ্ঞানহীন হাজার হাজার লোক বেকারত্বের অসহনীয় দুর্দশায় দিনাতিপাত করছে । ফলে একটি শূন্যপদে একজন নিয়োগের জন্যে আবেদন পত্র চাওয়া হলে হাজার খানেক আবেদন পত্র জমা হতে দেখা যায়। আবার এই বেকারত্ব এক ধরণের হতাশার জন্ম দেয়। মাদকাশক্তি, ব্যাভিচার, জুয়া, চুরি, ডাকাতি ইত্যাদির জন্মও বেকারত্ব থেকে। তাছাড়া বিপথে গমন বা অপরাধমূলক সংগঠনে জড়িয়ে পড়া এবং কুরআন ও হাদিসের সঠিক জ্ঞান না থাকা।
    ব্যাভিচার হচ্ছে ধর্মীয়, সামাজিক ও আদর্শিক সকল মাপকাঠিতেই একটি জঘন্য অপরাধ। বহুকাল থেকেই সব ধর্ম ও দেশেই এটি অন্যায় বলেই বিবেচিত হয়ে আসছে। ইসলাম এ অপরাধকে সর্বাধিক ঘৃণিত বিবেচনা করে।
    জুয়ায় অভ্যস্ত ব্যাক্তি ক্রমান্বয়ে উপার্জনের ব্যাপারে অলস, উদাসীন ও নিস্পৃহ হয়ে যায়। তার একমাত্র চিন্তা থাকে বসে বসে অসৎ উপায় অবলম্বন করে অন্যের মাল হাতিয়ে নেওয়া যাতে কোনো ধরণের পরিশ্রমের প্রয়োজন না হয়। এভাবে দিনে দিনে তারা অলস হয়ে পড়ে ফলে তারা দেশ ও জাতির উন্নয়নে কোনো অবদান রাখতে পারে না। জুয়া খেলার বহু ক্ষতির দিক রয়েছে জুয়াও মদের মতো পরস্পরের মধ্যে বিশৃংঙ্খলা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করে । কেননা খেলায় পরাজিত ব্যাক্তি স্বাভাবিকভাবেই জয়ী ব্যাক্তি প্রতি হিংসা ও বিদ্বেষ পোষণ করে এবং শত্রু হয়ে দাঁড়ায়। খেলায় জয়-পরাজয়ের এক পর্যায়ে মারামারি এমনকি হত্যাকান্ড পর্যন্ত সংঘঠিত হতে দেখা যায়।
    এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, যে হাজার হাজার লোক বেকার । তার একটা বড় অংশ হচ্ছে যুব সমাজ । মাদকাসক্ত বা বিপদগামীর মধ্যেও সংখ্যাগরিষ্ঠ হচ্ছে এই যুব সমাজ । দেশ ও জাতির অন্যতম প্রধান চালিকা শক্তি যে যুব সমাজ, তাদের দৈন্যদশা সত্যি বেদনাদায়ক।
    এখন আসা যাক স্বেচ্ছাকর্মী সংস্থানের বিষয়ে এটা প্রমাণিত সত্য যে, কাজ থাকলে গতি থাকে । যেখানে হতাশার কোন অবকাশ থাকে না। আমার মতে মোটেও আত্মসমর্পণ করা যাবে না । আত্মসমর্পণ মানেই তো হেরে যাওয়া। জীবন থেকে নির্বাসিত হওয়া আত্মসমর্পণ না করে যা করা যায় তা হচ্ছে আল্লাহর ওপর ভরসা করে নিজের উদ্যেগে কর্মসংস্থান করা ,যাকে এক কথায় বলা যায় – আত্মকর্মসংস্থান। এভাবে নিজেদের কর্মের ব্যবস্থা করে হতাশকে পরাস্ত করা সম্ভব; অন্যদিকে তেমনি নিজেদের শ্রম ও সেবা দিয়ে দেশ ও জাতিকে উন্নত করা সম্ভব । আল্লাহর উপর ভরসা করে ধৈর্য্যের সহিত রিজিকের মালিক আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার সাহায্য চাইতে হবে। সব সময় তিনটি বিষয়ের আমল করতে হবে যা ১. হারাম ও নাজায়েজ বিষয়বস্তুগুলো থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে। ২. আল্লাহর ইবাদত ও আনুগত্যে নিজেকে বাধ্য করা এবং ৩. যে কোনো বিপদে-আপদে ধৈর্য্যধারণ করা। যারা ধৈর্য্য ধারণ করে, আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালা তাদেরকে সাহায্য করেন। আল কুরআনুল কারিমে আল্লাহু সুবহানাহু তায়ালা বলেন – “হে মুমিনগণ, তোমরা ধের্য্য ও সালাতের মাধ্যমে ( আল্লাহর নিকট) সাহায্য প্রার্থণা করো। নিশ্চয় আল্লাহ ধের্য্যশীলদের সাথে আছেন।” ( সুরাতুল বাকারা, ০২:১৫৩) মানুষের জীবনে কখনো সুখ আসে আবার কখনো দুঃখ আসে। প্রতিকূল সকল অবস্থায় তাকে সবর করতে হবে। আজকের যুবকেরা সৎ ও যোগ্য হয়ে আগামীর সুখী ও সমৃদ্ধি বাংলাদেশ গড়বে এই প্রত্যাশা আজকের সমাজের। লেখকঃসাংবাদিক ও কলামিষ্ট,আবদুল বাছেত (মিলন)