“আত্বার জাগরনই মহানতার সৃষ্টি”

    1
    308

    আমারসিলেট 24ডটকম , ১৫ সেপ্টেম্বর  :

     

    “আত্বার জাগরনই মহানতার সৃষ্টি”
    জালাল আহমেদ জয়

    মাটি মাংসে দেহ গড়া মানুষ আমরা সবাই ।মায়ের শত সাধনা আর ১০ মাস ১০ দিন
    কষ্টের ফলে আমাদের এই পৃথিবীতে আসা । যখন একটা শিশু মায়ের কোলে আসে
    পরিবারে সবার মুখে হাসি ফুটে ।বিশেষ করে সবচেয়ে খুশি হন তার মা-বাবা।সেই
    কচি শিশুটিকে বড় করে তোলা পর্যন্ত; মা-বাবা অনেক কিছুই ত্যাগ করে থাকেন
    । তখন তাদের জীবনে একটাই চাওয়া থাকে যে,
    তাদের সন্তান যেন মানুষের মত মানুষ হতে পারে।আমাদের সমাজে পিতা-মাতার
    কষ্টে গড়া সন্তান যখন বড় হয়।
    তখন দেখা যায় যে,
    তারা বিয়ের পর আলাদা হয়ে যায়।কিন্তু তারা এটি অনুধাবণ করতে পারে না যে ,
    যে মা-বাবার কষ্টের বিনিময়ে তার এতটুকু সাফল্যে।সেখানে তার পিতা-মাতার
    কথা যেন মূল্যহীন হয় দাড়ায়।প্রথাগত শিক্ষা-ব্যাবস্থায় বি বি এ, বি এ,
    অনার্স অথবা পি এইচ ডি ডিগ্রী লাভ করে অনেকেই বড় আসন অর্জিত করতে পারেন
    ।তবে এটিকে শুধু সার্টিফিকেট-গত জ্ঞান বলা যায়।
    আত্বা-সাধনের জ্ঞান নয়।
    আত্বা মানুষের অদৃশ্য একটি বস্তু।যাহা শত-শত ডিগ্রী লাভ করলেও অর্জন করা যায় না।
    বিবেকের আলোয় নিজেকে প্রশ্নবিদ্ধ করে,সেই প্রশ্নের উত্তর নিজেকেই খুজে
    বের করার কৌশল আত্বা-সাধনের মাধ্যম।যাহা অতি সহজে পাওয়া যায় না।
    আর ও একটি কথা হলো আমরা স্বপ্নে যাহা ভাবি,বাস্তবে তাহার সাথে কোন মিল
    ঘটে না। মনুষ্যত্ব আর আত্বা দুটোই একসূত্রে গাঁথা।একজন ব্যাক্তির যদি
    অন্যজনের প্রতি তার হৃদয় ভালোবাসা/মায়া/শ্রদ্ধাবোধ না জাগে তাহলে তার
    মধ্যে মনুষ্যত্ব লক্ষ করা যায় না।
    আবার ,
    একটি মানুষের দেহ থেকে যখন আত্বা সড়িয়ে নেয়া হয় তখন তার বেচে থাকার
    আর কোন মাধ্যম থাকেনা।
    কিন্তু,
    একজন গুণী,আদর্শবান,নৈতিক ,মহৎ,সর্বাপেক্ষা আলোচিত হতে হলে আত্বার-সাধনের
    মাধ্যমে ইহার জাগরণ ছাড়া বিকল্প নাই ;
    একজন আত্বার জাগরিত ব্যাক্তি কখনোই অসৎ কাজ করিতে পারে না,তাঁর জীবনে
    লক্ষ থাকে যে,যাহা সত্য-সাম্য ,নীতিগত,এবং সর্বশক্তিমান
    ” আল্লাহ ” প্রদত্ত-বিধান মেনে তাঁর জীবন পরিচালনা করা ।

    আত্বার-জাগরণের কিছু উৎস নিম্নে বর্ণিত করা হলো।

    ১ .প্রতিটি-জিনিস নিয়ে চিন্তা-চেতনা সৃষ্টি করা।
    ২.প্রতিটি-মূহুর্তে যা-ঘটে তা নিয়ে ভাবনার আকাশ তৈরী করা।
    ৩.আমি কি ,আমি কে,আমি কার,কেন আমি পৃথিবীতে এলাম তা গভীরভাবে উপলব্ধি করা।
    ৪.যাদের কষ্ট-সাধনার ফলে আমি এলাম,এবং তাদের-যথাযত সম্মান-ভালোবাসা এবং
    তাদের উপর অর্পিত দ্বায় ভার পালন করা।
    ৫.দেশ-জাতি ও সমাজের জন্যে কি করতে পারি ?
    ৬.জীবন-মরনের মাঝে – কি  থেকে যায় তা খুজে বের করা এবং তা কাজে লাগানো।
    ৭.সকল চিন্তা-ভাবনা ও চেতনার প্রান্ত-গুলো লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ করা।
    উপরিউক্ত সবগুলোর মাঝেই আত্বার জাগরণের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে এটাই আশা করি।

    আত্বাহীনতার  অভাবে যা হয় ,তার ফলাফল দুটি অংশে তুলে ধরা হলো :

    ১।আত্বহীনতায় পশুত্বের মৌনতা  :

    একজন ব্যাক্তি বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করে,এবং তাহার স্ত্রী ও
    এক-কোম্পানীতে চাকুরী করে।
    ছেয়েলেমেয়ের খবর রাখার মত তাদের যেন সময় হয়্না।যা পায় তা রাত ১০ টার পরে,
    দুজনেই বাসায় ফিরে।তাদের এক ছেলে এবং এক মেয়ে।
    ছেলে ৯বম শ্রেনীতে এবং মেয়েটি দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ে।শহরের একটি নামিদামি
    কলেজেই তার লেখাপড়া।তার অনেক বন্ধু-বান্ধব রয়েছে।কিন্তু বাজে বন্ধু
    পাল্লায় পড়ে সে মাদকাশক্ত হয়ে যায়।
    এখন সে প্রতিনিয়তই রাত ১০ টার পরে বাসায় আশা শুরু করে।
    এবং মাঝে মাঝে বাসায় রাত-জুড়ে বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিতে শুরু করে ।বাবার
    টাকার অভাব নাই যা চায় তাই পেত সে।আদরের-দুলালী বলা যায় যাকে। এভাবেই
    কিছুদিন যাবার পর মেয়েটির “মা” তাকে শাষন করতে লাগলো।সঠিক রাস্তায়
    ফিরাবার জন্যে। কিন্তু মেয়েটি যেন মায়ের প্রতি হিংস্র হতে লাগলো।
    এভাবে-এক পর্যায়ে মেয়েটিকে বন্দী করে রাখা হয় ।এবং তার মোবাইলটিও মা
    বন্ধ করে রাখে।তারপর,সে-তার মা-বাবার প্রতি ক্ষিপ্ত প্রায়।
    সে-তার বন্ধুদের নিয়ে ,তার মা-বাবাকে হত্যা করার পরিকল্পনা
    করে।এক-রাত্রীতে মেয়েটি ২০ টি ঘুমের বড়ি মিশিয়ে দুই-কাপ কফি
    বানায়।তারপর সে সে তার মা-বাবার রূমে নিয়ে যায়।মা-বাবা খুভ খুশি
    আজ।তাদের মেয়ে যেন আজ চাঁদকন্যা হয়ে গেল। তাদের সব কষ্ট যেন সফল।আদর
    করে দেখো আমাদের জন্য কফি নিয়ে আসছে।”দে মা দে”,তারপর মেয়েটি তার
    মা-বাবার হাতে কফি তুলে দেয়।কি-বিষ জানে না মা-বাবা।নিজের জান্নাত কে
    এভাবে কেহ মাটি দিতে পারে ?
    কফি খাওয়ার সাথে সাথেই তার মা-বাবা ঘুমিয়ে গেলো।তারপর সে তার বন্ধুদের
    নিয়ে আসে।সবাই মিলে ছুরি ,দা,দিয়ে ইচ্ছেমত কুপাতে থাকে।অবশেষে মা-বাবার
    মৃত্যু হয় সন্তানের হাতে।
    এই ঘটনা থেকে কি বোঝা যায় ?

    ২।রঙ্গ- করা কথায় যেন,বন্ধুর হাতে মরণ :
    দুই-জন ঘনিষ্ট বন্ধু ছিল।বন্ধু বলতে আমরা বিশ্বস্থ কাউকেই বুঝে
    থাকি।এক-বন্ধু থাকে শহরে।আরেক বন্ধু থাকে গ্রামে । একদিন দুই বন্ধু
    চায়ের দোকানে বসে গল্প করছিল।শহরের বন্ধুটি হঠাৎ বললো যে,এ এসব ২ ,৩ লাখ
    টাকা তার বিছানার নিচে প্রতিদিনই থাকে । তখন গ্রামের বন্ধুটি -টাকার
    প্রতি লোভনীয় হয় যায় ।এর-পরের দিন শহরের বন্ধুটি শহরে চলে আসে । কিছু
    দিন পর গ্রামের বন্ধুটি শহরে আসে।
    তখন সে তার শহরের বন্ধুর বাসায় উঠে।রাতে খাবার খেয়ে যখন সবাই ঘুমিয়ে
    গেলো তখন, গ্রামের বন্ধুটি শহরের বন্ধুটিকে বালিশ দিয়ে চেপে ধরে ।এবং
    ছুরি দিয়ে কুপাতে থাকে।এভাবে সে তাকে হত্যা করে ।পরে বিছানা উল্টিয়ে
    কিছুই পেল না।
    শুধু একটি মোবাইল ছাড়া ।

    এই ঘটনাটিতে কি বোঝা গেল ?

    প্রথম অংশটিতে :
    মেয়েটির অর্থ-শিক্ষার কোনটাতেই তার অভাব ছিল না।ছিল শুধু
    বিবেক,মনুষ্যত্ব এবং আত্বার জাগরণের অভাব।তাই সে মাদকতায় আসক্ত হয়ে
    পশুর রূপ ধারণ করে এবং নিজের হাতেই মা-বাবাকে হত্যা করে।
    দ্বিতীয় অংশে  :
    গ্রামের বন্ধুটি ছিল অভাবি এবং লোভী।তার মাঝে কোন শিক্ষাই ছিল না,আর
    আত্বার কোন সংস্পর্শে সে যেতে পারে নাই।তাই সে তার বন্ধুর কথায় লোভিষ্ট
    হয়ে তাকে হত্যা করে টাকার জন্যে।
    কিন্তু বিনিময়ে কিছুই পায়নি মোবাইল ছাড়া ।
    ফলে তাদের দুজনেরই জেলের ভিতর হলো আবাসন।
    আত্বার-আত্বাহীনতার অভাবে সমাজে প্রতিনিয়তই অঘটন বয়ে যাচ্ছে ।
    দেশে অবিরত খুন,হত্যা,ছিনতাই চলছে যাত্রাবাড়ীর ট্রেনের মত।
    ঘরে ফেরা না পর্যন্ত মা-বাবার চিন্তার অন্ত নেই।
    কখন যে কি হয়ে যায়।আবার আমরা সবাই গলা ফাটিয়ে বলি ২১ শতকের আধূনিক
    যুগের মানুষ।তবে কেন হচ্ছে এসব ফানুষ ?
    মধ্যযুগের ব্যাক্তিদের সাথে  তুলনা করলে,  আমরা এক বিন্ধু সমতুল্য হতে
    পারি নাই।হতে পারবো কিনা তা নিয়েও আছে হাজার বিস্ময়।
    মানবতার শীর্ষে গমন করিতে ,নিজেকে আধূনিক বলে মনে করতে হলে,নিজেকে
    সর্বোকৃষ্ট
    যোগ্য-ভাবতে হলে,একটাই কাজ আত্বার-সাধন খুজিতে হবে ।এবং তা তা গ্রহণের
    দ্বারা সমাজে ,কর্মে প্রয়োগ করিতে হইবে।
    যুগে যুগে বিশ্বে কত না গুণী
    যাদের কেহ আজো ভুলেনি,
    আত্বার-সাধনে তাঁরা হলেন অমর
    শান্তির মালায়ে গড়ে যেন আত্বার সবর ।
    দেশ,মাটি,মা ও দেশের প্রতিটি মানুষ ও জীবজন্তু কে ভালোবাসার মাধ্যমে
    যেমন,আত্বার জাগরণ করা যেতে পারে।
    তেমনি দেশ ও উন্নতির শিহরণে পৌছতে পারে ।
    আমাদের সবারই-উচিৎ আত্বার সাধনে শান্তির তরে অবত্দান রাখা ।
    ঝড়ে পড়ুক বরষার বৃষ্টি
    আত্বার জাগরণে বয়ে যাক
    মহানতার সৃষ্টি ।