আজ ১৫ আগস্ট,জাতীয় শোক দিবস

    0
    360

    আমার সিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,১৫আগস্ট,ডেস্ক নিউজঃ  আজ বাঙ্গালী জাতির এক কলংকময় ইতিহাসের দিন, আর দিনের স্মরণে পালিত হচ্ছে “জাতীয় শোক দিবস”। কেন এই শোক? বিংশ শতাব্দীর ৭০ দশকের মধ্যপর্বে  আজকের এই দিনে ১৫ আগস্ট ভোররাত, ১৯৭৫ সাল) এদেশের জাতীয় ইতিহাস দ্বিতীয়বার রক্তাক্ত হলো বিপুল বিস্ময় আর ধিক্কারে। কারণ, স্বাধীনতা-পূর্বকালে এদেশের আপামর মানুষের ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় সিক্ত বঙ্গবন্ধু আর স্বাধীনতা-উত্তরকালে সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স’পতি বাঙ্গালী জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান একদল সেনারূপী এদেশীয় বিশ্বাসঘাতকের গুলিতে ধানমণ্ডির বাসভবনে শাহাদাত বরণ করেন। সেই ইতিহাস অত্যন্ত বেদনাবিধুর ও শোকাবহ। তারও চেয়ে সত্য, কালের পরিক্রমায় সপরিবারে জাতির পিতাকে হত্যার ওই ঘৃণিত উদ্দেশ্যের সমস্ত ডালপালা চিরতরে নস্যাৎ হয়ে গেছে বাংলার বুক থেকে।

    ঘাতক-কুলাঙ্গারদের একাংশ জাতির অপরিমেয় তিরস্কার আর অভিশাপে লোকচক্ষুর আড়ালে পশু-পাখির মতো মৃত্যুবরণ করেছে। আরেক অংশ পালিয়ে থাকা জীবন থেকে এসে স্বদেশেই ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলে সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেছে।
    জাতির পিতা এদেশবাসীকে কি দিয়ে গেছেন তাঁর সংগ্রামী জীবনকালে? ১৯৪৭ সালে ভারতভাগের পর ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত ২৪ বছরের ইতিহাসের ১২ বছরই তাঁকে পাকিস্তানি উপনিবেশের কারাগারে কাটাতে হয়েছে এদেশের মানুষের রাজনৈতিক মুক্তির কথা বলার ‘অপরাধে’! ধর্মবর্ণ-গোত্র-সম্প্রদায় নির্বিশেষে এদেশের মানুষকে জাতীয় মুক্তির মন্ত্রে উজ্জীবিত করে অসাম্প্রদায়িক মন ও মননের আলোকে আলোকিত করেছিলেন।

    স্বাধীনতা অর্জনের পর নতুন দেশ ও জাতির প্রয়োজনে অগ্রবর্তী চিন্তার আকর নব্যকালের সংবিধান উপহার দিয়েছিলেন। দিয়েছিলেন জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র অর্থে যাবতীয় শোষণ থেকে বেরিয়ে আসার দীক্ষা। শুধু তাই নয়, নতুন বিশ্বব্যবস’া ও ধর্মীয় মূল্যবোধের আলোকে মুসলিম বিশ্বের সংগে গড়ে তুলছিলেন মৈত্রীর বন্ধন। নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে তাঁর বৈশ্বিক অগ্রযাত্রার প্রস্তু’তি শংকিত করেছিল তাদের, যারা স্বাধীন রাষ্ট্র বিনির্মাণে তাঁর সাফল্যকে বক্র চোখেই দেখে আসছিল বরাবর। ভারতীয় উপমহাদেশের চিরলাঞ্ছিত বাঙালি জাতির এই অনন্যসাধারণ রাজনৈতিক প্রজ্ঞাবান সন্তানকে ঘরের-বাইরের শত্রুরা শারীরিকভাবে পৃথিবীর বুক থেকে সরিয়ে দিতে সক্ষম হলেও তাঁর বীজমন্ত্র জেগে ওঠেছে সহস্র মহীরুহ হয়ে বাংলাদেশের প্রত্যেক লোকালয়ে, জনপদের পথে-প্রান্তরে।

    বঙ্গবন্ধু আর জাতির পিতার বলিষ্ঠ সম্বোধন আর প্রিয় স্মৃতির লালনে দিন দিন তাঁর অমর আত্মার জাগরণ ঘটছে। তিনিই এখন বাংলার বিরাট, পরিপূর্ণ সোনালী আকাশ। তাঁকে স্মরণ করেই সোনার বাংলার দুর্বার স্বপ্নগাঁথা রচিত হচ্ছে দিকে-দিকে। তিনিই এখন সকল বিভেদের জাল ছিঁড়ে ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠছেন। শোক এখানে উজ্জ্বল উদ্ধার জাতির উন্নয়নের প্রতিজ্ঞায়। শোকাবৃত বাঙালি জাগছে নতুন শতাব্দীর সোনালি সূর্যোদয়ে।
    কঠিন উপনিবেশ ভাঙা জাতির পিতার শক্তিমন্ত নতুন আহ্বান ছড়িয়ে পড়ছে আকাশে-বাতাসে * ভায়েরা আমার, জাগো!