আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

    0
    394
    আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস
    আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস

    ঢাকা, ১৭ এপ্রিল : আজ ১৭ এপ্রিল বুধবার ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনন্য এক দিন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এদিনে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলার আম্রকাননে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে শপথগ্রহণ করে। পরে এ বৈদ্যনাথতলাকেই ঐতিহাসিক মুজিবনগর হিসেবে নামকরণ করা হয়। অস্থায়ী সরকারের নেতৃত্বে ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এডভোকেট ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ পৃথক বাণী দিয়েছেন।
    অন্যান্য বছরের মতো এবারও যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতি ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উদযাপন করবে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর বর্বরোচিত হামলা চালানোর পর একই বছরের ১০ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র রূপে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা ঘোষণা করা হয়। এ দিন ঘোষিত ঘোষণাপত্রে ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণাকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন ও অনুমোদন করা হয়।
    ঘোষণাপত্রে সংবিধান প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি ও সৈয়দ নজরুল ইসলামকে প্রজাতন্ত্রের উপ-রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করা হয়। এছাড়াও তাজউদ্দিন আহমেদ অস্থায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী, খন্দকার মোশতাক আহমেদ পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ক্যাপ্টেন মুহাম্মদ মনসুর আলী অর্থমন্ত্রী এবং এ এইচ এম কামারুজ্জামান স্বরাষ্ট্র, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রী নিযুক্ত হন। পক্ষান্তরে জেনারেল আতাউল গনি ওসমানী অস্থায়ী সরকারের মুক্তিবাহিনীর প্রধান কমান্ডার এবং মেজর জেনারেল আবদুর রব চীফ অব স্টাফ নিযুক্ত হন।
    ১৯৭১ সালের ১১ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ দেশবাসীর উদ্দেশে বেতার ভাষণ দেন, যা আকাশবাণী থেকে একাধিকবার প্রচারিত হয়। সে ভাষণের মধ্যদিয়েই দেশ বিদেশের মানুষ জানতে পারে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রাম পরিচালনার লক্ষ্যে একটি সরকার গঠিত হয়েছে। ১৭ এপ্রিল সকালে মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথগ্রহণের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রতিষ্ঠা লাভ করে। পরের দিন দেশ বিদেশের পত্র পত্রিকা এবং সংবাদ মাধ্যমে ১৭ এপ্রিল শপথগ্রহণের এ সংবাদ ফলাও করে ছাপা হয়। বাংলাদেশ সরকারের আনুষ্ঠানিক সূচনা বা আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ হিসেবে এ দিনটির তাৎপর্য ছিল বিশাল।

    কর্মসূচী: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যথাযোগ্য মর্যাদায় মুজিবনগর দিবস পালনের জন্য দু’দিনব্যাপী ঢাকায় ও মুজিবনগরে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বুধবার ভোর ৬টায় বঙ্গবন্ধু ভবন এবং দেশের সকল জেলা কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৭টায় বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং সকাল ৭টা ৩০মিনিটে বনানী কবরস্থানে ও রাজশাহীতে শহীদ জাতীয় নেতাদের মাজারে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ।
    এছাড়াও মুজিবনগরের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ভোর ৬টায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১১টায় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ, ১১টা ১৫ মিনিটে গার্ড অব অনার প্রদান ও সাড়ে ১১টায় মুজিবনগর দিবসের তাৎপর্য ব্যাখা করে শেখ হাসিনা মঞ্চে আলোচনা সভা। এতে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মুজিবনগর দিবস উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নাসিম ও প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন, সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এছাড়াও মেহেরপুরের অনুষ্ঠানমালায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করবেন।
    অপরদিকে মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য দলের নেতা কর্মী ও সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।