অস্ত্র ত্যাগ করলে ক্ষমাঃকিয়েভের হুমকির মুখে পুতিনের সাহায্য

    0
    222

    আমারসিলেট24ডটকম,১১এপ্রিলঃ পূর্ব ইউক্রেনের লুহানস্কে সরকারি ভবন দখল করে রাখা রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে সাহায্য কামনা করেছে। ইউক্রেন সরকার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সঙ্কট সমাধানে আলোচনায় না বসলে তাদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের আল্টিমেটাম দেয়ার পর তারা এ সাহায্য চাইল। তবে বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অস্ত্র ত্যাগ করলে তাদের ক্ষমা করার প্রস্তাব দিয়েছে কিয়েভ। পূর্বাঞ্চলের দুটি শহরেই রুশপন্থী বিক্ষোভকারীরা অস্ত্র ত্যাগ করলে তাদের সাধারণ ক্ষমার ঘোষণা দিয়েছেন ইউক্রেইনের অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট অলেক্সান্ডার তুর্কিনোভ। তবে শক্তি প্রয়োগ করা হলে লুহানস্ক ও ডোনেস্ক অঞ্চলের বিদ্রোহীরা রাশিয়ার হস্তক্ষেপ চাইবে বলে হুঁশিয়ার করেছে।

    বৃহস্পতিবার বিবিসির খবরে বলা হয়, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা লুহানস্ক ও ডোনেস্ক শহরের সরকারি ভবনগুলো দখল করে আছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযান চললে তা ইউক্রেইনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কিয়েভ প্রশাসন। রাশিয়া ইউক্রেইনের পূর্বাঞ্চলে অস্থিতিশীলতায় ইন্ধন দিচ্ছে বলে কিয়েভের নতুন প্রশাসন অভিযোগ করলেও মস্কো তা অস্বীকার করেছে। বিবিসি, এপি, এএফপি, রয়টার্স ও ওয়েবসাইট।ওদিকে, আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে রাশিয়া পূর্ব ইউরোপে ৪০ হাজার সেনা মোতায়েন করে রেখেছে বলে পশ্চিমা দেশগুলোর অভিযোগও অস্বীকার করছে রুশ কর্তৃপক্ষ। বুধবার ইউক্রেইনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল, পূর্বাঞ্চলের বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান’ চালিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওই এলাকার অচলাবস্থার অবসান ঘটানো হবে। তবে ওই আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার আগেই গত বৃহস্পতিবার তুর্কিনোভ পার্লামেন্টে বলেন, বিদ্রোহীদের মধ্যে যারা অস্ত্র ত্যাগ করে সরকারি ভবনগুলো ছেড়ে যাবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ফৌজদারি অভিযোগ গঠন করা হবে না। প্রেসিডেন্টের অধ্যাদেশের মাধ্যমে তিনি এই কাজটি করতে চান বলেও জানান। কিন্তু স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে সরকারি ভবনের দখল নেয়া রুশপন্থীরা কিয়েভ প্রশাসনের আল্টিমেটাম শোনার পর থেকেই পুতিনের সাহায্য চেয়ে স্লোগান দিচ্ছে।

    লুহানস্ক শহরে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীর একটি ভবনে অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঘেরাও জোরদার করেছে তারা। গত বৃহস্পতিবারও লুহানস্ক শহরে ইউক্রেনের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যালয়ে ঘিরে বিক্ষোভ চলছিল। ভাসিলিয়ে নামের ছদ্মবেশী এক বিক্ষোভকারী রয়টার্সকে বলেন, আমরা অবশ্যই রাশিয়ার কাছে সাহায্য চাইব, কারণ তাছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প নেই। গত বুধবার দখলকৃত ভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন ভেলারি বলিকভ নামের একজন যিনি নিজেকে ওই ভবনেরই একজন প্রতিনিধি বলে পরিচয় দেন। কিয়েভ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় কোনো ভালো ফল আসেনি বলেও সাংবাদিকদের জানান বলিকভ। তিনি বলেন, কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে, কিছু সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে আরো কিছু বিষয় আছে যা কোনো যৌক্তিক সমাধানের কাছাকাছি আসেনি।

    সংবাদ সম্মেলন চলাকালে বাইরে বিক্ষোভকারীরা রাশিয়ার সঙ্গে যোগ দেয়ার পক্ষে স্লোগান দিচ্ছিল। ইউক্রেনে প্রাদেশিক সরকার পদ্ধতি চালু করে লুহানস্কে স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে গণভোট আয়োজনের আগে বিক্ষোভকারীরা পিছু হটবে না বলে জানান বলিকভ। সংবাদ সম্মেলনের বাইরে ভবনের বারান্দায় মুখোশ পরা কিছু লোক কালাশনিকভ, পিস্তল ও রাইফেল নিয়ে ঘোরাফেরা করছিল। কয়েকদিন আগে বিদ্রোহীরা একটি অস্ত্রাগার থেকে ২০০/৩০০ অস্ত্র লুট করার পর পূর্ব ইউক্রেনে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের তৎপরতা বেড়ে যায়।