অর্থনীতির অনুকূল পরিবেশ তৈরির পরামর্শঃসিপিডি

    0
    230

    ”বৈদেশিক লেনদেনের উদ্ধৃত্ত্ব ভারসাম্যসহ সামষ্টিক অর্থনীতি বেশ ভাল আছে”

    আমারসিলেট24ডটকম,২৫জানুয়ারীঃ গত কয়েক মাসের সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে চলতি ২০১৩-১৪ অর্থবছর শেষে ৫ দশমিক ৬ থেকে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ অর্জিত হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।তবে জোরালো প্রবৃদ্ধি অর্জনে জরুরিভিত্তিতে দেশে অর্থনীতির অনুকূল পরিবেশ তৈরির পরামর্শ দিয়ে সংস্থাটি বলেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে সমঝোতার ভিত্তিতে তা দূর করতে হবে। তা না হলে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ ও ব্যবসায় আস্থা ফিরে আসবে না।

    আজ শনিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চলতি অর্থবছরে অর্থনীতির দ্বিতীয় অন্তর্বর্তীকালীন পর্যালোচনা তুলে ধরে সিপিডি এই পূর্বাভাস দেয়।সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান সংস্থার পক্ষ থেকে গবেষণা বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেন।এ সময় সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্ষ, গবেষণা পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন ও অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. গোলাম মোয়াজ্জেম উপস্থিত ছিলেন।ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ”গত ৬ মাসের সংঘাতময় রাজনৈতিক পরিস্থিতি পেরিয়ে দেশে বর্তমানে অর্থনীতির অনুকুল পরিবেশ আবারো ফিরে এসেছে। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে বছরশেষে জিডিপি ৫ দশমিক ৬ থেকে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে। তবে গত কয়েক বছরে দেশের প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে যে ত্বরণ সৃষ্টি হয়েছিল সংঘাতময় রাজনীতির কারনে আমরা তা হারিয়ে ফেলেছি।”
    এ প্রসঙ্গে জোরালো প্রবৃদ্ধি অর্জনে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্ষ বলেন, দেশে জররিভিত্তিতে অর্থনীতির অনুকূল পরিবেশ তৈরী করতে হবে। এ জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে বিদ্যমান সংঘাতময় সম্পর্কের অবসান ঘটাতে সমঝোতায় আসতে হবে। তা না হলে দেশে দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগ ও ব্যবসায় আস্থা ফিরে আসবে না।সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত চলতি অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৮ শতাংশের নিচে হবে না বলে দাবী করেন।সিপিডি পর্যালোচনা তুলে ধরে জানায়, গত ছয় মাসের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় অর্থনীতির চারটি খাত মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো হলো- গ্রামীণ অর্থনীতির কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য, রফতানিমুখী পোশাক খাত, পরিবহন এবং পর্যটন খাত।দেবপ্রিয় বলেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার নেতিবাচক প্রভাবে বছরের প্রথম ছয় মাসে সরকারের রাজস্ব আয় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা কম হয়েছে। বছর শেষে এর পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়াতে পারে। এছাড়া কর-বহির্ভূত আয় এবং বৈদেশিক আয়ও কমে গেছে।

    এই পরিস্থিতি থেকে উত্তোরণে তিনি সরকারের আয়-ব্যয় কাঠামো পুনঃনির্ধারণ করার পরামর্শ দেন। দেবপ্রিয় বলেন, যেহেতু আয় কম হয়েছে, তাই ব্যয় সংকোচন করা অবধারিত। তবে ব্যয় সংকোচনের ক্ষেত্রে সরকার স্বস্থিদায়ক অবস্থায় আছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সারের দাম কমে যাওয়ায় ভর্তুকি ব্যয় কম হবে। এছাড়া গত ৬ মাসে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড কম হওয়ায় জ্বালানি তেলের পেছনে ব্যয় হ্রাস পেয়েছে।তিনি আগামী ছয় মাসে অর্থনীতিকে আবারো শক্তিশালী অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে চলতি বোরো মৌসুমে বিদ্যুৎ, সারসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর সরকারকে নজর দেয়ার পরামর্শ দেন। বলেন, এর পাশাপাশি উচ্চহারে কৃষিঋণ বিতরণ অব্যাহত রাখতে হবে।সিপিডির এই সম্মানিত ফেলো বলেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পখাতের জন্য বিশেষ প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করতে হবে। এই প্রনোদনা প্যাকেজ যেন কেবলমাত্র ব্যাংকিং খাতের ওপর চাপ সৃষ্টি না করে। এতে অর্থনীতির অন্যান্য খাত ক্ষতিগ্রস্ত হবে।তিনি শিল্পখাতের ন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করতেও প্রণোদনা সুবিধা দেয়ার পরামর্শ দেন।সিপিডি জানায়, বৈদেশিক লেনদেনের উদ্ধৃত্ত্ব ভারসাম্যসহ সামষ্টিক অর্থনীতি বেশ ভাল আছে।