শ্রীমঙ্গল আবাসিক হোটেলে ধর্ষণের অভিযোগে হাসান কারাগারে

    0
    278

    নিজস্ব প্রতিনিধিঃ  অবশেষে ধরা পড়লেন শ্রীমঙ্গল আবাসিক হোটেলে ধর্ষণের অভিযোগে ধর্ষক হাসান মিয়া (২১) পিতা মোঃ হাকিম মিয়া গ্রাম দিলবরনগর।মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাধানগরের হাসান ট্রেইলারের মালিক মোঃ হাসান মিয়া নামের এই ব্যক্তি তার প্রেমিকাকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে গাজীপুর থেকে নিয়ে আসা খুলনার বিশোর্ধ এক নারী জেমির (ছদ্মনাম) অভিযোগের ভিত্তিতে বারবার অভিযান চালানোর এক পর্যায়ে মোবাইল ট্রাকিং এর মাধ্যমে ১৬ নভেম্বর সোমবার দিবাগত গভীররাতে তাকে গ্রেফতার করে স্থানীয় থানার পুলিশ।

    পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তির পরে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে আসামী হাসান মিয়াকে।
    জানা যায়, গতরাতে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আব্দুল ছালিক দুলাল এর নির্দেশনায় এসআই রুকন,এসআই আলামিন ও এসআই তিথঙ্করসহ পুলিশের একটি টিম অভিযান চালিয়ে রাধানগর এলাকার একটি পাহাড়ি ঢিলা থেকে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।

    ঘটনার বিবরণে জানা যায়,খুলনা জেলার লবণচোরা জিন্নাপাড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ওই নারী (ছদ্মনাম জেমি) গাজীপুরে থাকতেন। শ্রীমঙ্গল উপজেলার দিল্বরনগর গ্রামে বসবাস কারী ও রাধানগর এলাকায় দর্জির দোকানদার প্রেমিক হাসানের বিয়ের আশ্বাসে “শ্রীমঙ্গলে শহরের মৌলভীবাজার রোডস্থ আবাসিক একটি হোটেলে নিয়ে এসে এখানে কয়েকদিন থাকার কথা বলে প্রেমিক হাসান।এ সময় হোটেল রেজিস্টারে নাম উঠানো লাগবেনা বলে হোটেলে কর্মরত এক মহিলা কর্মী জানান বলে ভিকটিম জেমি (ছদ্মনাম) এ প্রতিনিধিকে জানান। জেমি আরও জানান, দু দিনে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ বার থাকে অনৈতিক কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে। একপর্যায়ে “অন্য পুরুষের হাতে তুলে দিতে চেষ্টা করলে আমি আপত্তি জানাই পরে আমাকে একা রেখে হোটেল থেকে পালিয়ে যায় হাসান।তাকে খুঁজে না পেয়ে তার এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের কাছে অভিযোগ করলে কয়েকজন আমাকে থানায় নিয়ে আসে এবং এক পর্যায়ে থানায় আমাকে রেখে ওরাও চলে যায়।” কথা বলার সময় ওই নারীকে কিছুটা অস্বাভাবিক অবস্থায় দেখা যায়। এ প্রতিনিধির সাথে ঘটনার দিন তারিখ এমনকি যেদিন মামলা করতে এসেছে ওই দিনটিতে কি বার ছিল তাও সে বলতে পারেনি।

    তিনি এ প্রতিনিধিকে আরও বলেন, “নিরুপায় হয়ে হাসানকে খুঁজতে অটোরিকশা নিয়ে আবারও তার দোকানে (হাসান ট্রেইলারস) যাওয়ার সময় শ্রীমঙ্গলের ভানুগাছ রোডের রাবার বাগানের পাশে আমাকে আটকিয়ে মারপিঠ করে নির্যাতন করে গুরুতর আহত করে প্রায় ১৬ হাজার টাকা,মোবাইল,ভ্যানিটি ব্যাগ,কাপর চোপর সব নিয়ে যায়। পরে আহতাবস্থায় পথচারীদের সহযোগিতায় শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত শনিবার সন্ধ্যায় ভর্তি হয়ে চিকিৎসারত ছিলাম রোববার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে সশরীরে এসে শ্রীমঙ্গল থানায় অভিযোগ দ্বায়ের করেন ধর্ষিত নারী জেমি (ছদ্মনাম)। কথা বলার সময় জেমি বারবার সিসিটিভি চেক করে তার বিচারের ব্যবস্থা করার জন্য কাঁদতে থাকেন এবং বলতে থাকে হোটেল রেজিস্টারে তার কোন দস্তখত নেওয়া হয়নি সিসিটিভি দেখলেই সব পাওয়া যাবে, সিসিটিভি কেউ দেখতে চাইনা” বলে বারবার অভিযোগ করেন।

    পরে হাসপাতাল থেকে থানায় এসে ওই নারী বিয়ের প্রলোভনে প্রতারণা করে ধর্ষণ, নির্যাতন, টাকা-পয়সা (প্রায় ১৬ হাজার টাকা ) ও এন্ডড্রইয়েট মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন।

    অভিযোগের ভিত্তিতে শ্রীমঙ্গল থানার কর্মকর্তা ওসি আব্দুস ছালিকের নির্দেশক্রমে এস আই তিথঙ্কর দাস পুলিশ সদস্যদের সহযোগিতায় আহত নারীকে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য প্রেরণ করেন। এখনো তিনি পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।

    এ ব্যাপারে মামলার আইও তিথংকর দাসের সাথে কথা হলে তিনি বলেন “আমরা মেয়েটিকে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠিয়েছি।পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা যাবে। অপরদিকে ঘটনার বর্ণনায় যে তারিখ মামলায় ব্যবহার করেছে সে তারিখ অনুযায়ী সিসিটিভি চেক করা হয়েছে তাতে তার উপস্থিতি পাওয়া যায়নি যতটুকু পাওয়া গেছে ঘটনার পরবর্তীর ফুটেজ।”

    ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে ওসি আব্দুস ছালিক দুলাল বলেন, “মেয়েটির অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে চিকিৎসা ও পরীক্ষার জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে,অভিযোগের পর থেকে আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে শেষ পর্যায়ে রাধা নগর এলাকার একটি পাহাড়ের চূড়া থেকে তাকে বিশেষ কৌশলে আটক করতে সক্ষম হয়েছি, এবং বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।পরবর্তীতে সেক্সুয়াল অ্যাসল্ট এর রিপোর্ট ও বিজ্ঞ আদালতের দেওয়া নির্দেশ মতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

    পূর্বের নিউজ এর লিঙ্ক

    বিয়ের প্রলোভনে শ্রীমঙ্গল আবাসিক হোটেলে ধর্ষণের অভিযোগ