অন্যের সম্পর্কে কথা বলতে একটু মেপে বলবেন:সংসদে মতিয়া

    0
    230

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,১৫জুন,ডেস্ক নিউজঃ   কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেছেন, “বাজেটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের গণতন্ত্রের দর্শনের প্রতিফলন ঘটেছে।”
    তিনি বলেন, “বর্তমান সরকারের গত ৯ বছরে বাজেটের আকার কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ সময়ে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার বেড়েছে সাড়ে ৩ গুণেরও বেশি। পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে সরকার সাফল্যের সাথে বাজেট বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে উন্নয়নের কাঙ্খিত জায়গায় নিয়ে যেতে সম্ভব হয়েছে। এ বাজেটও সফলভাবে বাস্তবায়িত হবে।”
    বৃহস্পতিবার সংসদে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন।
    স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সকাল ১১টা ০৩মিনিটে অধিবেশনের শুরুতে মন্ত্রীদের জন্য প্রশ্ন-জিজ্ঞাসা-উত্তর টেবিলে উপস্থাপন শেষে ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর আলোচনা শুরু হয়।
    গত ১ জুন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ২৬৬ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন।
    ২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেট আলোচনার ৭ম দিনে আজ কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ, সরকারি দলের মীর শওকত আলী বাদশা, মৃনাল কান্তি দাস, নুরুল ইসলাম সুজন, গোলাম মোস্তফা (নীলফামারী-৩), আবদুল মজিদ মন্ডল, জয়া সেন গুপ্ত, দিলারা বেগম, গোলাম মোস্তফা (গাইবান্ধা-১), স্বতন্ত্র সদস্য মোঃ আব্দুল মতিন, জাতীয় পার্টির বেগম রওশন আরা মান্নান, শাহানারা বেগম, জাসদের নাজমুল হক প্রধান ও ওয়ার্কার্স পার্টির ফজলে হোসেন বাদশা আলোচনায় অংশ নেন।
    আলোচনায় অংশ নিয়ে কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী বলেন, “গত নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বিএনপি দেশে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। তারা ধ্বংসযজ্ঞ না চালালে প্রবৃদ্ধি অনেক আগেই ৭ এর ঘরে পৌঁছাতো। এরপরও বর্তমান সরকারের সময় দেশ উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে সক্ষম হয়েছে এবং বিগত ৯ বছরে বাংলাদেশ উন্নয়নের মহাসড়কে উপনীত হয়েছে। এই সরকারের সময়ই ডাবল ডিজিটে প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হবে। তবে এরজন্য প্রয়োজন দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা।”
    তিনি বলেন, “শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই গতিতে যদি দেশ চলে তাহলে ২০৪১ সালের অনেক আগেই বাংলাদেশ বিশ্বে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ হবে।”
    মতিয়া চৌধুরী বলেন, “কৃষক এবং কৃষি বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে দরদ তা বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কোন রাষ্ট্র নায়কের নেই। প্রধানমন্ত্রী উত্তরাধিকার সূত্রে পিতার কাছ থেকে এই বিরল গুণটি অর্জন করেছেন। তাঁর উদার ভর্তুকি নীতি, সার-বীজের সহজপ্রাপ্যতা, বিদ্যুতের ব্যবস্থা, দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশের কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।”
    তিনি বলেন, “বিএনপির আমলের মতো কৃষককে সারের জন্য গুলি খেয়ে মরতে হয় না। সারই কৃষকের পেছনে এখন ধাবমান। এর ফলে বিগত ৮/৯ বছরে খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে ৫০ লাখ মেট্রিক টন। সরকার এখন খাদ্য উৎপাদনে বিশ্বে দশম, সব্জিতে দ্বিতীয়, আমে সপ্তম ও পেয়ারায় অষ্টম।”
    তিনি প্রস্তাবিত বাজেটে কৃষি মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ বৃদ্ধি করায় ধন্যবাদ জানান। ট্রাক্টরের ওপর কর প্রস্তাবকে মরার ওপর খাড়ার ঘা উল্লেখ করে কৃষিমন্ত্রী এর ওপর থেকে প্রস্তাবিত কর প্রত্যাহার, ব্যাংক আমানতের ওপর থেকে আবগারী শুল্ক প্রস্তাব পুনর্বিবেচনা করাসহ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার না কমানোর আহবান জানান।
    প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে খালেদা জিয়ার সমালোচনার জবাবে মতিয়া বলেন, “বেগম সাহেব, লুটপাট কত প্রকার, কি কি তা উদাহরণসহ যদি বলতে হয় তাহলে আপনার পুত্র এবং পার্টির নামটাই আসবে। আপনার দুই পুত্রতো লাগেস পার্টি হিসেবে পরিচিত। আপনি অন্যের সম্পর্কে কথা বলতে একটু মেপে বলবেন।”
    মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম মেহের আফরোজ বলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এমডিজি বাস্তবায়নে অনেক দূর এগিয়েছে। পাশাপাশি এসডিজি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নিয়ে সরকার কাজ করছে।

    তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন ও অগ্রগতির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ইতিহাসে সবচেয়ে সফলতম সময় অতিবাহিত করছে। নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকার নারীর অর্থনৈতিক মুক্তি, তাদের আইনি সহায়তা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও তাদের জীবনমানের উন্নয়নসহ দারিদ্র্যতা দূরীকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।
    প্রতিমন্ত্রী বলেন, “নারীর দারিদ্র্যতা দূরীকরণে ভিজিডির মাধ্যমে ১ লাখের স্থলে বর্তমানে ১০ লাখ নারীকে ২ বছর ধরে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হবে। আইসিভিজিডি’র মাধ্যমে ১৫ হাজার টাকা করে ১০ হাজার হতদরিদ্র নারীকে থোক বরাদ্দ হিসেবে দেয়া হচ্ছে। ১ লাখের স্থলে এখন ৬ লাখ নারীকে মাতৃত্বকালীন ভাতা দেয়া হবে। ল্যাকটেটিং মায়ের ভাতা ৫শ’ জনের স্থলে এখন ২ লাখ মাকে দেয়া হচ্ছে। এই ভাতা দেয়ার পাশাপাশি তাদের আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।”
    তিনি বলেন, “শিশুদের বিশেষ করে হতদরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের জন্য বিভিন্ন শেল্টার হোম তৈরি করা হচ্ছে। শিশুদের জন্য এবারও বাজেটে বরাদ্দ বেড়েছে।”
    তিনি ব্যাংক সঞ্চয় থেকে আবগারী শুল্ক আরোপের প্রস্তাব প্রত্যাহারের আহবান জানান।
    ওয়ার্কার্স পার্টির সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ব্যাংক আমানতের ওপর থেকে আবগারী শুল্ক প্রত্যাহারের আহবান জানান।
    তিনি বলেন, অর্থনীতিতে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে না পারলে কাঙ্খিত সাফল্য অর্জন সম্ভব নয়। বাসস।