ঢাকা, ১৯ মে : আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন অন্তবর্তীকালীন সরকারের অধীনেই অনুষ্ঠিত হবে। আর এ সরকারের প্রধান কে হবেন তা আলোচনার মাধ্যমে তা নির্ধারণ করা হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে আর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার অর্থাৎ ১/১১ পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি হতে দেয়া হবে না। যে কোন মূল্যে সংবিধান সমুন্নত রাখা হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে কোন অসাংবিধানিক ব্যবস্থা বাংলাদেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আজ রবিবার আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সংবিধানে যা আছে, সেটাই যদি স্থির থাকত, তাহলেতো আর আলোচনার কোন প্রয়োজন হতো না। তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নামে কোনো অসাংবিধানিক ব্যবস্থা বাংলাদেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের অধীনেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব বলেও জানান তিনি। সংলাপের আহ্বান জানিয়ে বিরোধী দলকে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি দেয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে বিরোধী দলকে প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছেন। সংসদে এসে তিনি তাদের দাবি পেশ করার কথা বলেছেন।
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে সভা সমাবেশের ওপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মাসের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে সৈয়দ আশরাফ বলেন, সব সময় সাংবিধানিক অধিকার বাস্তবায়ন হয় না। মহাসেনের প্রভাবে মৃত্যুর হার বেশি না হলেও অনেক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। সেখানে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশে একটি স্বাভাবিক পরিস্থিতি প্রয়োজন। এ জন্য এক মাস সভাসমাবেশ করতে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তিনি বলেন, এটি শুধু বিরোধী দলের ওপর নয়, সরকারি দলের ওপরও কার্যকর হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য নুহউল আলম লেনিন, যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক এমপি, আ ফ ম বাহউদ্দিন নাছিম, আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন, উপদফতর সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাস ও কার্যনির্বাহী সদস্য সুজিত রায় নন্দী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
গত ১৭ মে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বর্ধিত সভায় গৃহীত রাজনৈতিক প্রস্তাব ও সিদ্ধান্ত তুলে ধরার জন্য আজ ও সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকীকে প্রধান করে একটি ত্রাণ ও দুর্যোগ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি উপকূলীয় এলাকায় দুর্গত মানুষের মধ্যে ত্রাণ কার্যক্রম চালাবে বলেও উল্লেখ করেন সৈয়দ আশরাফ।
বেগম জিয়া আলোচনার বিষয়টিকে কখনো গুরুত্ব দেননি অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, হেফাজতকে কোটি কোটি টাকা দিয়ে সরকার উৎখাতের জন্য মাঠে নামানো হয়েছিল। কিন্তু বেগম জিয়া কোন ষড়যন্ত্র করেই সফল হননি। আল্টিমেটামের সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্রাচীনকালের ডাকাতের মত দিন ক্ষণ ঠিক করে দেয়ার এ প্রচেষ্টা জনগণ গ্রহণ করেনি।
জাতীয় স্মৃতিসৌধে আলোচনায় বসার আহ্বান সংক্রান্ত বক্তব্যের সমালোচনা করে সৈয়দ আশরাফ বলেন, আলোচনা কোথায় হবে তা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে। জাতীয় স্মৃতিসৌধে কোন আশ্রয় কেন্দ্র কিংবা আলোচনার স্থান নেই। আলোচনার জন্য সংসদই প্রকৃত স্থান।