আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,০৯মে,শাব্বির এলাহী,কমলগঞ্জঃ মাত্র ১২ দিন আগে বাবাকে কবর দিয়ে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিলো খাদিজা বেগম। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের দঃ গোলেরহাওর গ্রামের অভাগী খাদিজা বেগমের বাবা দিনমজুর জামাল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে কিডনি সহ নানা জটিল রোগে ভূগছিলেন। স্থানীয় পদ্মা মেমোরিয়েল পাবিলিক উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী খাদিজা দিনরাত অসুস্থ’ বাবার সেবা শুশ্রষা শেষে সময় বের করে গভীর রাতে কুপির আলোয় লেখাপড়া করতো।
পিএসসি ও জেএসসিতে বৃত্তিপ্রাপ্ত মেধাবী খাদিজা বাবার মৃত্যুর ১২দিন পর বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ৪.৮৯ পেয়ে উর্ত্তীণ হয়। শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট ও কোচিং না করেই তার এ ফলাফল হরিষে বিষাদ বটে। ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম বরাববর ক্লাস পরীক্ষায় ১ম স্থান অধিকারী খাদিজারা দুই বোন। বড় বোনের বিয়ে হয়েছে অনেক আগে।মা আয়াতুন বেগমের অনত্র বিয়ে হয়ে যাওয়ায় অসাথ এ কিশোরী জীর্ণ কুঁড়েঘরে একাকীই বসবাস করছে। একটু সুযোগ পেলে খাদিজা জিপিএ-৫ লাভ করতো নিঃসন্দেহে।
তার স্কুলের শিক্ষক ধীরেন্দ্র কুমার সিংহ জানান, সে সিলেবাসভূক্ত পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি সহ পাঠক্রমিক ও সৃজনশীল নানা বিষয়ে খাদিজার দক্ষতার সাথে অংশগ্রহণ ছিলো উল্লেখ করার মতো। তার কোন ভাই না থাকায় সংসারে একা এ মেয়েটির দু‘বেলা খাবারটাও নিজেকেই যোগাড় করতে হয়। সব শিক্ষার্থীরাই এসএসসি উর্ত্তীণের পর কোন না কোন কলেজে ভর্তি হয়ে উ”চশিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন দেখে। খাদিজাও সে স্বপ্ন অবশ্যই দেখে। কিন্ত তার চিন্তা আদৌ কি সে কোন কলেজে ভর্তি হতে পারবে ? কলেজে যাতায়াত,বইপত্রসহ ন্যূনতম আনুষাঙ্গিক ব্যয় নির্বাহই বা করবে কি করে।
এতোদিন স্কুলের লেখাপড়া চালাতে ও বাবার চিকিৎসার্থে অনেকেই সহযোগীতা করেছিলেন । তারাই বা আর কতো করবে ? এতো বিষাদের মাঝেও তার চোখে মুখে প্রত্যাশার ঝিলিক পাহাড় সম বাধা ডিঙ্গিয়ে এত পথ পাড়ি দিতে পেরেছে যখন পরম করুণাময়ের অশেষ করুণা তার সাথে নিশ্চয়ই ছিলো ।
হয়তো তিনি তার উচ্চশিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন পূরনে তার পাশে এখনো থাকবেন হয়তো মানুষরূপী কোনো স্বর্গের দুত পাঠাবেন তার কাছে। আমরাও খাদিজার মতো বুক ভরা আশায় আশায় পথ চেয়ে আছি সে মহত প্রান মানুষের।অদম্য খাদিজার স্বপ্ন কি ভেসে যাবে চোখের লোনা জলে ?