অগ্নিদগ্ধ স্ত্রীকে হাসপাতালে রেখে পালিয়েছে স্বামীঃবিত্তবানদের

    0
    254

    প্রতি নবীগঞ্জের লাভলীর চিকিৎসায় এগিয়ে আসার আহবান

    আমার সিলেট টুয়েন্টি ফোর ডটকম,২১অক্টোবর,স্টাফ রিপোর্টারঃনবীগঞ্জের এক অগ্নিদগ্ধ স্ত্রীকে মাধবপুর হাসপাতালে রেখে পালিয়েছে স্বামী। দেড় বছরের শিশু সন্তান দিয়ে দিশেহারা লাভলী। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন অনেক টাকা। ঘটনার শুরু হয়েছে প্রায় ৩ থেকে ৪ মাস আগে।  বর্তমানে লাভলী বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছটপট করছে। বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানানো হয়েছে।

    মেয়েটার নাম লাভলী আক্তার। বয়স অনুমান ২৫ বছর হবে। সে নবীগঞ্জ সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের গুজাখাইর গ্রামের মৃত আজম উল্লা‘র মেয়ে। লাভলীর পিতা মারা যান প্রায় ৭ পূর্বে। ঘরের আছেন গর্ভধারনী মা, কিন্তু মাও পঙ্গু। লাভলীর কোন ভাই বোন না থাকায় তার পঙ্গু মাকেই ভিক্ষা করে চালাতে হতো সংসার। এক পর্যায়ে এক লোকের মাধ্যমে চাকুরীর সুযোগ পায় লাভলী। অতঃপর গার্মেন্টেসে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলো। এমনতাবস্থায় প্রায় আড়াই বছর আগে বিয়ের পিড়িতে বসার সিদ্ধান্ত নেয়। শেষে বিয়ে হয় মাধবপুর উপজেলার হেলাল মিয়া নামের এক লোকের সাথে। বিয়ের পর তাদের ঔরসে জন্ম নেয় এক ছেলে সন্তান। তার বয়স বর্তমানে দেড় বছর। বিয়ের পরও লাভলী আক্তার বহাল তাকে গার্মেন্টেসের চাকুরীতে। এতে সুখেই চলছিল তাদের সংসার।

    হঠাৎ একদিন রান্না করতে গিয়ে আগুন লেগে যায় লাভলীর শরীরে। এতে ঝলসে যায় শরীরের অনেক অংশ। আর এই আগুনই যেন কাল হয়ে দাড়ায় তার জীবনে। অগ্নিদগ্ধ লাভলীকে তাৎক্ষনিকভাবে মাধবপুরের একটি হাসপাতালে টিকই নিয়ে যায়, ভর্তিও করে। যখন চিকিৎসক বললো তার অপরাশেন করতে হবে, এবং প্রয়োজন হবে প্রচুর পরিমান টাকার। টিক তখনই আসছি বলে স্ত্রীকে রেখে পালিয়ে যায় হেলাল। আর আসেনি ফিরে, স্ত্রী কিনবা সন্তানের নেয়নি কোন খোঁজ খবর। পরে লাভলী চলে আসে বাবার বাড়ি নবীগঞ্জে। হেলালের এহেন কান্ডে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে একেমন মানুষ রূপি পশু।

    একটি নির্ভরযোগ্য সুত্রে হেলাল আরেকটি বিয়ে করেছে এবং নতুন স্ত্রী নিয়ে সুখে শান্তিতেই দিন কাল কাটাচ্ছে। এদিকে অগ্নিদগ্ধ শরীর নিয়ে যন্ত্রনায় ছটপট করছে লাভলী বেগম। প্রায় মাসকানেক আগে লাভলী বেগম একটি সেলাই মেশিনের জন্য আসে উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগমের কাছে। এ প্রসঙ্গে নাজমা বেগম তার নিজ ফেইসবুক আইডিতে লিখেছেন “একদিন লাভলী আমার কাছে আসে একটি সেলাই মেশিনের জন্য। তার অবস্থা দেখে আমার খুব খারাপ লাগলো। আমি তাকে পরের দিন অফিসে আসার জন্য বললাম।

    ও চলে যাবার পর রাতে আমি ঘুমাতে পারিনি! সারাক্ষণ শুধু ওর নিরহ চেহারাটা আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল। পরের দিন ও যথারীতি মেশিনের জন্য দরখাস্ত নিয়ে আসলো ।ওর জন্য তাৎক্ষণিক ভাবে কি করা যায় তা চিন্তা করে সবার কাছ থেকে (এমপি মহোদয়, উপজলো চেয়ারম্যান, ইউএনও এসল্যিান্ড, আমি, ওসিসহ সবার কাছ থেকে মোট প্রায় আট হাজার টাকা ওর হাতে তুলে দেই।’’

    এর পর এই মেয়েকে কিভাবে আরো সাহায্য করা যায় এমন চিন্তা করেন নাজমা বেগম। এনিয়ে আলোচনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জীতেন্দ্র কুমার নাথের সাথে। সহকারী কমিশনারের প্লান মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে “এসিল্যান্ড নবীগঞ্জ” আইডি থেকে পোষ্ট করা হয় লাভলীর ছবিসহকারে বিত্তবানদের প্রতি একটি মানবিক সাহায্যের জন্য জানানো হয় আহবান। আর এই পোষ্টটি শেয়ার করেন ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগম। সাথে সাথেই ছড়িয়ে যায় দেশ বিদেশে। এগিয়ে আসেন আসেন বিত্তবানরা। লাভলীকে সুস্থ্য করতে অনেকেই বাড়ান সাহায্যের হাত।

    আগামী রবিবার হতে পারে লাভলীর অপারেশন। কিন্তু এখনো অনেক টাকার প্রয়োজন। তবে প্রজন্ম নামের একটি রক্ত দান সংস্থা তাকে প্রয়োজন মতো রক্ত দেবে বলে জানিয়েছে। লাভলী বর্তমানে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ৪র্থ তালার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি আছে। কেউ আর্থিক সাহায্যের জন্য লাভলীর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন। মোবাইল নং- ০১৭০৮-০২৩৩৩৭। এই নাম্বারে বিকাশ একাউন্টও আছে। লাভলীর বর্তমান অবস্থা বা অন্য কোন তথ্যর জন্য ভাইস চেয়ারম্যান নাজমা বেগমের সাথেও যোগাযোগ করতে পারেন মোবাইল নং- ০১৭১৭-৯০৭৯৫৬।