‌বাজারে চামড়ার মুল্যে ধস পাচার রোধে সীমান্তে সতর্ক বিজিব

    0
    337

    আমারসিলেট টুয়েন্টিফোর ডটকম,০৩সেপ্টেম্বর,এম ওসমান,বেনাপোল প্রতিনিধি : চাহিদা ও সুবিধামত দাম না পাওয়ায় এ বছর যশোরা লের অধিকাংশ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা তাদের ক্রয় করা চামড়া বাজারে তুলতে পারেননি। চামড়া বাজারে অর্ধেক চামড়ার উপস্থিতিও দেখা মিলছে না। বেচাকেনাতেও ধস নেমে এসেছে। ফলে চামড়ার দামের এ ভয়াবহ অধঃপতনের কারণে চামড়া পাচারের আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠেছে। এ সুযোগে সক্রিয় হয়ে উঠছে সীমান্তের চামড়া পাচারকারী সিন্ডিকেটগুলো। এজন্য পাচাররোধে সরকারকে আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই চামড়ার দাম পুনঃনির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। যদিও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলছেন, চামড়া পাচারের আশঙ্কা নেই।
    সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবছর ট্যানারির মালিকরা সিন্ডিকেট করে চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করায় খুচরা ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া কিনে মজুদ করে রেখেছেন। তারা স্থানীয় বাজারে চামড়া না তুলে নিজস্ব কায়দায় তা সংরক্ষণ করে রেখেছেন। স্থানীয় ভাবে নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে তারা চামড়া কেনার ব্যাপক প্রস্তুুতি নিয়েছেন। ফলে স্থানীয় ভাবে মজুদ করা এসব চামড়া দেশে ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েবে বলে ব্যবসায়ী আশঙ্কা করছেন।
    চামড়া ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী দেশে চামড়ার দাম বেশি। বাংলাদেশ থেকে কম দামে চামড়া কিনে সীমান্ত পার করলেই বেশি দামে বিক্রিতে কোনো সমস্যা হবে না। এ লক্ষ্যে উভয় দেশের সীমান্তে পাচারকারীদের চক্রগুলো ইতিমধ্যেই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। তারা সুযোগ বুঝে এসব চামড়া ভারতে পাচার করে দেয়ার পরিকল্পনায় রয়েছে।
    জানা গেছে, দেশের চাহিদার মোট চামড়ার মধ্যে কোরবানি ঈদে ৪০ শতাংশ সংগ্রহ করা হয়। বাকি ৬০ শতাংশ কাঁচা চামড়া সংগ্রহ হয় বছরজুড়ে। চামড়ার ব্যবসায়ীদের মতে, পার্শ্ববর্তী দেশের চেয়ে বাংলাদেশের চামড়ার গুণগত মান উন্নত। প্রতিবেশী দেশের পশুর চামড়া নি¤œমানের বিধায় এদেশীয় চামড়ার সঙ্গে মিশিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি করা হয়। চোরাকারবারীরা প্রতিবেশী দেশে চামড়া পাচার করে ওই অর্থ দিয়ে ভারত থেকে অন্যান্য মালামাল ক্রয় করে এনে থাকে। যশোর সীমান্তবর্তী অ ল হওয়ায় এখান থেকে খুব সহজে ভারতে চামড়া পাচার করা যায়।
    নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক চামড়া ব্যবসায়ী এক নেতা জানান, যশোর ও তার আশপাশের কোন কোন সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচার হতে পারে সেসব স্থানের মধ্যে বেনাপোল, শার্শা, ঝিকরগাছা, সাতক্ষীরা ও কলারোয়া সীমান্ত পথ দিয়ে পাচারের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, চামড়ার দাম সঠিক ভাবে নির্ধারণ করলে ব্যবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি থাকে। ফলে পাচার হওয়ার আর সম্ভাবনা থাকেনা। তিনি চামড়ার সঠিক দাম নির্ধারণের জন্য ট্যানারি মালিকদের প্রতি আহবান জানান।
    বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র যশোর-২৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল আরিফুল হক বলেন, চামড়া পাচার প্রতিরোধে সীমান্তে কড়া সতর্ক অবস্থায় রাখা হয়েছে বিজিবিকে। ফলে পাচারকারীরা সুবিধা করতে পারবে না। তিনি আরও বলেন, চামড়া যাতে পাচার না হতে পারে সেজন্য প্রতি হাট বিজিবির পক্ষ থেকে কড়া নজরদারিতে রাখা হয়েছে। চামড়ার হাটগুলো থেকে ব্যবসায়ীরা যাতে চামড়া ফেরত নিয়ে আসতে না পারে সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। প্রধান সড়ক ছাড়া কোন আ লিক সড়ক দিয়ে যাতে চামড়া আনা-নেয়া না করতে পারে সেজন্য বিজিবি সতর্ক রয়েছে।