৫২টি তাজা বোমা উদ্ধারসহ কারখানার সন্ধান

    1
    639

    আমারসিলেট 24ডটকম , ২২সেপ্টেম্বর  : রাজধানীর হাজারীবাগে ইসলামী  ছাত্র শিবিরের গোপন আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বোমা তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছেন পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা। অভিযান চলা কালে শিবিরের বোমা হামলায় পুলিশের এক উপ-পরিদর্শকসহ (এসআই) ৩ সদস্য আহত হয়েছেনবলে খবরে জানা যায় । তাদের  কারখানা থেকে ৫২টি তাজা বোমা, বিপুল পরিমাণ গান পাউডার ও বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ আব্দুল মালেক (২৫) নামে এক শিবির কর্মীকে আহত অবস্থায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ওই অভিযান চালানো হয়েছে। আহত পুলিশ সদস্য হাজারীবাগ থানার এসআই আব্দুর রহিম, কনস্টেবল রাশেদুল ও আনসার বিল্লালকে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদিকে আহত শিবিরকর্মীকে পুলিশ প্রহরায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

    অন্য খবরে, গত কাল সন্ধ্যায় অপর এক অভিযানে রাজধানীর মালিবাগের একটি বাসা থেকে ১০টি হাতবোমাসহ ১২ শিবিরকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে শাহজাহানপুর থানা পুলিশ।গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে হাজারীবাগ থানাধীন চরকঘাটার ৩/ক নম্বর ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে একটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। বিকট শব্দে বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এলাকাবাসী তখন বাইরে বেরিয়ে এসে ওই ভবনটি ঘিরে ফেলে এবং ঘটনাটি

    হাজারীবাগ থানা পুলিশকে অবহিত করে। খবর পেয়ে পুলিশ ও র‌্যাবের পৃথক টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে চারদিক থেকে ওই ভবনটি ঘিরে ফেলে। ফ্ল্যাটের ভেতরে থাকা শিবিরকর্মীরা তখন নিচে অবস্থানরত পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে একটি হাতবোমা নিক্ষেপ করে। এতে হাজারীবাগ থানার এসআই আব্দুর রহিম ও কনস্টেবল রিয়াদুল ও আনসার বিল্লাল আহত হন। সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে  উদ্ধার করে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

    ঘটনাস্তলে অতিরিক্ত র‌্যাব ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়। র‌্যাব-২ এর মেজর রাকিবুল ইসলাম ও হাজারীবাগ থানার ওসি মাইনুল ইসলামের নেতৃত্বে ওই ফ্ল্যাটে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ফ্ল্যাটের ভেতর থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় শিবিরকর্মী আব্দুল মালেককে গ্রেপ্তার করা হয়। তার অন্য সহযোগীরা আগেই লোকজনের ভিড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। ফ্ল্যাটের  ভেতরে বিস্ফোরিত বোমায় মালেক আহত হয়। তার ডান পা হাঁটুর নিচ থেকে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল চিকিৎসকরা। তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলায়। তার পিতার নাম শাহ আলম।

    পরে ফ্ল্যাটটিতে তল্লাশি চালিয়ে ৫২টি বোমা, বিপুল পরিমাণ গান পাউডার ও বোমা তৈরির সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয় বলে খবরে জানা যায় ।

    র‌্যাব-২ এর মেজর রাকিবুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, বোমা বিস্ফোরণের খবর পেয়ে র‌্যাবের বোমা ডিসপোজেবল ইউনিটসহ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান চালায়। ওই ফ্ল্যাটটি শিবিরের একটি গোপন ঘাঁটি ছিল। তারা ফ্ল্যাটের ভেতরে বসে বোমা তৈরি করে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে শিবিরের ক্যাডারদের কাছে সাপ্লাই করতো বলে ধারণা করা হচ্ছে।

    অভিযানের পর বাড়ির মালিক ও আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। উদ্ধারকৃত বোমাগুলো হরতালসহ জামাত-শিবিরের আন্দোলনে নাশকতা চালানোর জন্য তৈরি করা হয়েছিল। আহত শিবিরকর্মী আব্দুল মালেককে পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সুস্থ হলেই তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মালেকের সহযোগীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।

    এদিকে গতকাল সন্ধ্যায়  মালিবাগের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ১০টি তাজা বোমাসহ ১২ শিবিরকর্মীকে আটক করেছে শাহজাহানপুর থানা পুলিশ। সোয়া ৬টার দিকে ৭৩ নম্বর মালিবাগের বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয় দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করে।

    নাশকতার পরিকল্পনা করার জন্য কয়েক যুবক বৈঠক করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে মালিবাগের ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে ১২ যুবককে আটক করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে ১০টি তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় আটককৃতরা সবাই ইসলামী  ছাত্র শিবিরের সক্রিয় সদস্য। আটককৃতরা কী ধরনের নাশকতার পরিকল্পনা করছিল ও বোমাগুলো কোথা থেকে এনেছে সে বিষয়ে জিজ্ঞসাবাদ চলছে। তবে আকটকৃতদের নাম এখনও জানা যায় নি ।