৪র্থ বারের মতো উপজেলা নির্বাচনের আজ প্রথম দিন

    0
    214

    আমারসিলেট24ডটকম,ফেব্রুয়ারীঃ আজ বুধবার ৪র্থ বারের মতো উপজেলা নির্বাচনের প্রথম দফা ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আজ ৩৪ জেলায় ৯৭টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। সকালে ভোটারের উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটারও বাড়ছে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীন ভোটগ্রহণ করা হবে।

    এদিকে নির্বাচনে সহিংসতা এড়াতে ভোটের দুদিন আগেই মাঠে রয়েছে সেনাবাহিনী। প্রতি উপজেলায় এক প্লাটুন করে সেনা সদস্য টহল দিচ্ছেন। তারা ভোটের পরের দুই দিন পর্যন্ত মাঠে অবস্থান থাকবেন। এ ছাড়া নিয়মিত বাহিনী হিসেবে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার থাকবে। ভোট শান্তিপূর্ণ করতে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে একজন পুলিশসহ ১৪ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন।

    এ ছাড়া ১৭ জন করে দায়িত্ব পালন করছেন পার্বত্য এলাকায়। শান্তিপূর্ণ ভোট করতে ইসি বদ্ধপরিকর। সে লক্ষে  নির্বাচনী অপরাধের তাৎক্ষণিক বিচারের জন্য ৩৮৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পাশাপাশি ৯৭ জন বিচারিক হাকিমও রয়েছেন।
    এরআগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এবার সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। মোবাইল ফোর্স হিসেবে পর্যাপ্ত সংখ্যক র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে। প্রতি ভোটকেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে একজন করে পুলিশ (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার একজন (অস্ত্রসহ), অঙ্গীভূত আনসার ১০ (মহিলা-৪, পুরুষ-৬ জন) এবং আনসার একজন (লাঠিসহ) ও গ্রামপুলিশ একজন করে থাকবে। পার্বত্য ও হাওর এলাকা এবং দ্বীপাঞ্চলে শুধু পুলিশের ক্ষেত্রে এ সংখ্যা দুজন হবে।
    নির্বাচন কমিশন সচিবালয় (ইসি) প্রথম ধাপে ১০২টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তফসিল ঘোষণা করেছিল। এর মধ্যে সীমানা জটিলতার কারণে রংপুর সদর, পীরগাছা, গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া উপজেলার নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এ ছাড়া পীরগঞ্জ উপজেলার ভোট গ্রহণের দিন ২৪ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়।
    একনজরে ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে যে ৯৭টি উপজেলায়: পঞ্চগড়ের সদর, দেবীগঞ্জ, বোদা, আটোয়ারী, দিনাজপুরের কাহারোল, খানসামা উপজেলা, নিলফামারীর ডিমলা, সৈয়দপুর ও জলঢাকা উপজেলা,  তারাগঞ্জ, মিঠাপুকুর ও উপজেলা।
    ঢাকার  দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলা, নরসিংদীর পলাশ ও বেলাবো উপজেলা, রাজবাড়ীর সদর, বালিয়কান্দি ও পাংশা উপজেলা, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী ও মকসুদপুর উপজেলা, মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা, শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ, জজিরা, ডামুড্যা, গোসাইরহাট উপজেলা, সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, দোয়রাবাজার ও ছাতক উপজেলা।
    কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী ও উলিপুর ও ভুরুংগামারী, উপজেলা, গাইবন্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও সাঘাটা উপজেলা, বগুড়ার দুপচাচিয়া, সারিয়াকান্দি, ধুনট, নন্দীগ্রাম, শেরপুর ও সোনাতলা উপজেলা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, নওগাঁর মহাদেবপুর, রাজশাহীর মোহনপুর, নাটোরের সিংড়া, সিরাজগঞ্জের সদর, রায়গঞ্জ, উল্লাপাড়া, কাজীপুর, পাবনার সাথিয়া, আটঘড়িয়া ও সুজানগর, মেহেরপুরের সদর উপজেলা, কুষ্টিয়া সদর, ভেড়ামারা উপজেলা।
    ঝিনাইদহ সদর, কালিগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও শৈলকুপা উপজেলা, যশোরের অভয়নগর উপজেলা, মাগুরার শ্রীপুর ও সদর উপজেলা, নড়াইলের কালিয়া, খুলনার দিঘলিয়া ও কয়রা উপজেলা, সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা, ভোলার লালমোহন উপজেলা, বরিশালের গৌরনদী ও বাকেরগঞ্জ উপজেলা, জামালপুরের সদর ও সরিষাবাড়ী উপজেলা, নেত্রকোনার দুর্গাপুর ও কেন্দুয়া উপজেলা, কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের বাজিতপুর ও নিকলী উপজেলা, মানিকগঞ্জের দৌলতপুর, সিংগাইর, সাটুরিয়া ও শিবালয় উপজেলা।
    সিলেটের বিশ্বনাথ, জকিগঞ্জ, কোম্পানীগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, গোয়াইনহাট ও জৈয়ন্তাপুর, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা, হবিগঞ্জের বাহুবল ও মাধবপুর উপজেলা, চট্টগ্রামের  মিরশরাই ও হাটহাজারী উপজেলা, খাগড়াছড়ি সদর, মাটিরাংগা, মহালছড়ি, পানছড়ি ও মানিকছড়ি উপজেলার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।
    প্রথম দফার নির্বাচনে মোট ১ হাজার ২৭৪ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাদের মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৪৩২, ভাইস-চেয়ারম্যান ৫১৩ এবং ভাইস-চেয়ারম্যান (মহিলা) প্রার্থী ৩২৯ জন। এসব এলাকায় মোট ভোটার ১ কোটি ৬৪ লাখ ৭৮ হাজার ১৭২ জন। তাদের মধ্যে পুরুষ ৮১ লাখ ৯১ হাজার ৫৩৭ জন ও নারী ৮২ লাখ ৮৬ হাজার ৬৩৫ জন। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা হচ্ছে ৬ হাজার ৯৯৫টি এবং ভোটকক্ষ ৪৩ হাজার ২৯০টি। প্রতি ভোটকেন্দ্রের জন্য একজন করে মোট ৬ হাজার ৯৯৫ প্রিজাইডিং অফিসার ও প্রতি ভোটকক্ষে এক জন করে মোট ৪৩ হাজার ২৯০ সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং মোট ৮৬ হাজার ৫৮০ জন পোলিং অফিসার নির্বাচনী দায়িত্ব পালন করবেন।

    উল্লেখ্য,ভোট জালিয়াতির অভিযোগে ৪ উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী ও এক উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন। উপজেলাগুলো হলো- পাবনার সুজানগর, বরিশালের গৌরনদী, ভোলার লালমোহন, ঝিনাইদহের শৈলকুপা ও সিরাজগঞ্জের কাজীপুর।পাবনার সুজানগরের বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করে বৃহস্পতিবার হরতালের ডাক দিয়েছেন। ভোটবর্জনের ঘোষণা দিয়ে প্রার্থীরা অভিযোগ করেছেন, সরকার দলের ক্যাডার বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের এজেন্টদের বের করে দিয়ে একতরফা সিল মারছেন। বিভিন্ন কেন্দ্রে  ব্যালট পেপার ছিনতাই ও এজেন্টদের  মারধর করা হয়েছে। ভোটকেন্দ্রে যেতে ভোটারদের বাধা দিচ্ছেন সরকার সমর্থিত প্রার্থীর লোকজন বলে অভিযোগ করছেন তারা।