আমারসিলেট 24ডটকম , ১১সেপ্টেম্বর : এবার খোদ জাতিসংঘের এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, এশীয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ তরুণ কখনো না কখনো ধর্ষণ করেছেন। এ অঞ্চলের ছয়টি দেশ- ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, চীন, পাপুয়া নিউগিনি, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কায় এ জরিপ চালানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ অঞ্চলের ১৮ থেকে ৪৯ বছর বয়সী ১০ হাজারেরও বেশি তরুণের ওপর এ জরিপটি চালানো হয়েছে। প্রসঙ্গত জাতিসংঘের অধীনে এটিই এ অঞ্চলের দেশগুলোতে চালানো প্রথম জরিপ। এসব দেশের নারীরা ধর্ষণ ছাড়াও নানা ধরনের সহিংসতার শিকার হন বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের অনলাইন সংস্করনে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে জাতিসংঘের নারীবিষয়ক অধিদপ্তর এ জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাতিসংঘের নারীবিষয়ক অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক রবার্ট ক্লার্ক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উল্লেখিত দেশগুলোর শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ পুরুষ কখনো না কখনো ধর্ষণ করেছেন। জাতিসংঘের পরিচালিত এ জরিপ বলছে, এসব ধর্ষক অনেক সময় তাঁদের স্ত্রী বা সাথিদেরও ধর্ষণ করেছেন।
কারও অসম্মতিতে বা জোর করে কাউকে যৌনকর্মে বাধ্য করাকে ধর্ষণের ভিত্তি ধরে পরিচালিত গবেষণাটি বলছে, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের শতকরা ১১ জন তাদের স্ত্রী নন এমন নারীদের ধর্ষণ করেছেন। তবে স্ত্রীদের এ তালিকায় যুক্ত করলে অংশগ্রহণকারীদের ২৪ শতাংশ ধর্ষণ করেছেন। তবে, ধর্ষণ করেছেন এমন পুরুষের ৪৫ শতাংশ বলেছেন, তারা একজনের বেশি নারীকে ধর্ষণ করেছেন।
আশঙ্কার ব্যাপার হলো, ধর্ষণ করেছেন এমন ব্যক্তিদের অর্ধেকের বেশি জানিয়েছেন, তারা বয়ঃসন্ধিক্ষণে এবং ১২ শতাংশ ১৫ বছরের কম বয়সে ওই কাজ করেছেন। অধিকাংশ পুরুষ বলেন, এ কাজের জন্য তাদের কোনো আইনি ব্যবস্থার সম্মুখীন হতে হয়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়, পাপুয়া নিউগিনির প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়া এলাকার ৪৯ শতাংশ এবং রাজধানী জাকার্তার ২৬ শতাংশ পুরুষ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। চীনে এই হার ২২ এবং কম্বোডিয়ায় ২০ শতাংশ।
সবচেয়ে বেশি ধর্ষক মিলেছে পাপুয়া নিউগিনিতে। এ দেশের বোগেনভিল এলাকার ৬২ শতাংশই ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। সম্ভবত বহু বছরের গৃহযুদ্ধ ও দারিদ্র্যের কারণে দেশটির এ পরিস্থিতি। ১৯৯৮ সালে দেশটিতে যুদ্ধ শেষ হয়। তবে এখনো আইনি ব্যবস্থার চেয়ে সামাজিক সালিস-ব্যবস্থাকেই বেশি গুরুত্ব দেন দেশবাসী।
রবার্ট ক্লার্ক বলেন, অনেক নারীর জন্যই সহিংসতা এক বীভৎস বাস্তবতা। যে সংস্কৃতি পুরুষকে নারীদের ওপরে খবরদারি চালানোর সুযোগ করে দেয়, সেটিকে অবশ্যই বদলে দিতে হবে। জাতিসংঘ বলছে, অবশ্য ধর্ষণের প্রবণতা স্থানভেদে হেরফের হয়, তাই যেসব এলাকায় তা পরিচালিত হয়েছে, সেগুলো পুরো দেশের সম্পূর্ণ পরিস্থিতির প্রতিনিধিত্ব করে না।