হেফাজত ও বিএনপি জোটের তিন দিনের হরতাল প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে ১৪ দল

    0
    422

    হেফাজতে ইসলাম ও বিএনপি জোটের তিন দিনের হরতাল প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে ১৪ দল। গতকাল রোববার রাজধানীতে ১৪ দলের পৃথক তিনটি প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
    দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা এবং সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে ধানমন্ডি, মিরপুর ১০ নম্বর ও ডেমরার মৃধাবাড়ীতে এ সমাবেশ হয়। এসব সমাবেশে বক্তারা বলেন, হেফাজতকে গণজাগরণ মঞ্চের প্রতিপক্ষ বানাতে তাদের দিয়ে ঢাকায় সমাবেশ করানো হয়েছে। হেফাজত ঢাকায় এসে বিএনপি-জামায়াতের স্বার্থ রক্ষা করেছে। এ জন্য বিরাট অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে। বক্তারা হরতাল প্রতিহত করতে জোটের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
    জাসদের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, মতিঝিলের সমাবেশ এককভাবে হেফাজতের ছিল না। এর সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতও ছিল। তারা ১৩ দফা দাবি দিয়ে জাতিকে মধ্যযুগে ঠেলে দিতে চায়।
    গণ-আজাদী লীগের সভাপতি আবদুস সামাদ বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারকাজ বাধাগ্রস্ত করতে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে হেফাজতে ইসলামকে ডাকা হয়েছে। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জাতিকে সতর্ক থাকতে হবে।

    মিরপুরের সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী হেফাজতে ইসলামের উদ্দেশে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু এ দেশে মদ নিষিদ্ধ করেছিলেন। জিয়াউর রহমান এসে মদ ব্যবসায়ীদের ৩৬০টি মদের লাইসেন্স দিয়েছিলেন। রেসকোর্স ময়দানের ঘোড়দৌড় নিয়ে জুয়া খেলা হতো। বঙ্গবন্ধু সব ধরনের জুয়া নিষিদ্ধ করেছিলেন। জিয়াউর রহমান এসে জুয়াও হালাল করলেন। সেদিন আপনারা একটি শব্দও করলেন না। এবার আপনাদের সমাবেশে একবারও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাওয়া হয়নি। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলার সময় আপনি এসে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে হাত মেলালেন। কেইসটা কী?’ তিনি গত শনিবার নারী সাংবাদিককে মারধরের তীব্র সমালোচনা করেন।
    সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য খলিলুর রহমান, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য কামরুল ইসলাম প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সাংসদ কামাল আহমেদ মজুমদার।
    ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের পূর্ব পাশে অনুষ্ঠিত অপর সমাবেশে হেফাজতের হরতাল প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘মনে রাখবেন, শেখ হাসিনা না থাকলে কেউ বাঁচতে পারবেন না। রক্ত দিয়ে হলেও খালেদা জিয়া ক্ষমতা দখল করতে চান। তাই রাস্তায় বেরিয়ে এসে ওদের রুখতে হবে।’
    হেফাজতে ইসলামকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘আপনাদের মধ্যে জামায়াত-বিএনপি ঢুকে গেছে। যত কথাই বলেন, আমরা পাকিস্তানে ফিরে যেতে পারব না।’
    সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক ও শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, স্থানীয় সাংসদ শেখ ফজলে নূর তাপস, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের আহ্বায়ক ওয়াজেদুল ইসলাম, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুর রহমান সেলিম, জাসদের শিরীন আখতার প্রমুখ।
    মৃধাবাড়ীর সমাবেশে জাসদের সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, স্থানীয় সাংসদ হাবিবুর রহমান মোল্লা প্রমুখ বক্তব্য দেন।