হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের মতবিনিময়

    0
    245

    আমারসিলেটটোয়েন্টিফোর,০৬ সেপ্টেম্বর  : গতকাল সন্ধ্যায় ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সাথে মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওয়ার্কার্স পর্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিক মতকিনিময় সভায় ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রাণা দাস গুপ্ত তার সূচনা বক্তব্যে বিদ্যমান রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অবস্থা তুলে ধরেন।

    তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক রাজনীতির ভিত্তিকে প্রতিষ্ঠা করতে হলে ’৭২ সালের সংবিধানের সঙ্গে পঞ্চদশ সংশোধনীর সাংঘার্ষিক দিকগুলি বাদ দিয়ে ’৭২ সালের সংবিধানকে পূন: প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি বলেন, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হবে এ ভেবে আমরা ওই ( ৭২ সালে) সময়ে সংসদে সংখ্যালুদের প্রতিনিধিত্বের প্রশ্নটি তুলে দেয়ার প্রস্তাব করি। কিন্তু পরিবর্র্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা এখন পার্লমেন্টে ৬০ টি আসনের অংশিদারিত্ব দাবি তুলে ধরছি। যেহেতু সংখ্যালঘুদের অংশিদারিত্বের প্রশ্নটি আজ আর নাই তাই এটাকে পূন: প্রতিষ্ঠা করা হোক।

    তিনি আরও বলেন, আজ দেশে সংখ্যালঘুরা আস্থা ও নিরাপত্তার সঙ্কটের মধ্যে বসবাস করছে। এই পরিস্থিতি বিবেচনা করে সংখ্যালঘুদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় থাকা অতীব প্রয়োজন বলে মনে করি। একই সঙ্গে মানবাধিকার সংরক্ষণের জন্য সংখ্যালঘুদের কমিশন গঠন করারও দাবি করছি।

    জাতীয় কনভেনশন করে আমরা অর্পিত সম্পত্তি সম্পর্কে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরেছিলাম। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলছি সে বক্তব্য গৃহীত হয়নি। কনভেনশনে আমাদের বক্তব্য ছিল অর্পিত সম্পত্তি এবং মালিকহীন সম্পত্তি এক নয়। কিন্তু তা কর্নপাত করা হয়নি। অর্পিত সম্পত্তি সম্পর্কে (ক) ও (খ) তালিকা করা হয়েছে, যার ফলে কোর্টে ৬ লক্ষের বেশি মামলা চলছে। আমাদের দাবি (খ) তালিকা বাতিল করতে হবে।

    একই সঙ্গে দেবত্তর সম্পত্তির আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে দেবত্তর সম্পত্তি বেদখল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অর্পিত সম্পত্তি, দেবত্তর সম্পত্তি আইনের ব্যাপারে ঐক্য পরিষদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরা হল। আপনাদের এবং মহাজোটের নিকট আশ্বাস চাই বিশেষ করে মেনন ভাইয়ের নিকট প্রতিশ্রুতি চাই আমাদের এই বিষয় সমুহ নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং জাতীয় সংসদে তুলে ধরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ে মধ্যে ক্ষোভ ও আস্থার সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসন করার ব্যাপারে ভূমিকা পালন করবেন।

    ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দের আলোচনা শেষে কমরেড রাশেদ খান মেনন বলেন, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এদেশে যদি শূণ্য হয়ে যায় তবে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি শেষ হয়ে যাবে। এই বিষয়টি অসম্প্রদায়িক সকল শক্তিকে ভাবতে হবে।

    বাম প্রগতিশীলদের শক্তিহীনতার কারণে আমরা ভূমিকা যথার্থভাবে নিতে পারছিনা। তবে আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে যতটা ভূমিকা পালন করা সম্ভব তা আমরা পালন করছি। আপনাদের তুলে ধরা প্রতিটি প্রস্তাবের ব্যাপারে আমাদের তেমন কোন আপত্তি নেই। তবে এই বিষয়গুলো নিয়ে প্রধান মন্ত্রীর সঙ্গে দ্রুত আলোচনা হওয়া দরকার। তিনি বলেন, একটা সহজ বিষয়কে জটিল করে তোলার ক্ষেত্রে আমাদের ভূমি মন্ত্রণালয় পারদর্শী। প্রায় সকল ক্ষেত্রেই তারা হীন উদ্দেশ্যে এটা ঘটাচ্ছে। সরকারের অভ্যন্তরে অনেকেই আছেন, স্লোগানে অসাম্প্রদায়িক, বাস্তবে তাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ সাম্প্রদায়িক শক্তি লাভবান হচ্ছে। সরকারকেও ভাবতে হবে আপোষকামী চিন্তা অগ্রযাত্রাকে এগিয়ে দেয়না, বরং তা পিছিয়ে দেয়।

    মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট রাণা দাশ গুপ্ত, সিনিয়র সভাপতি ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, কাজল দেবনাথ, জয়ন্ত কুমার দেব, নির্মল রোজারিও, বাসুদেব ধর, মিলন কান্তি দত্ত, জয়ন্ত সেন দীপু, হিউর্বাট গমেজ, সুব্রত চৌধুরী, সখেন্দ্র শেখর বৌদ্ধ, দীপঙ্কর ঘোষ, এ্যাডভোকেট তাপস পাল প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন পার্টির সভাপতি কমরেড রাশেদ খান মেনন এমপি, সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান মল্লিক ও পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড বিমল বিশ্বাস। প্রেস বিজ্ঞপ্তি