হরতালের সহিংসতায় পাঁচজনের মৃত্যুর খবর

    0
    226

    আমার সিলেট  24 ডটকম,অক্টোবর১৮ দলীয় জোটের ডাকা হরতালের প্রথম দিনে সারা দেশে  সহিংসতায় পাঁচ জেলায় পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ, হরতাল সমর্থকসহ আহত হয়েছে বহু মানুষ। যশোরের অভয়নগর উপজেলায় যুবলীগ নেতা, পিরোজপুরে যুবলীগের এক কর্মী, ফরিদপুরে স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতা, ঈশ্বরদীতে জামায়াত নেতা এবং বগুড়ায় বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন।

    জয়পুরহাটে রূপসা ও রকেট মেইল নামে দুটি ট্রেন ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করেছে হরতাল সমর্থকরা। এ ঘটনায় কমপক্ষে ৮০ জন যাত্রী আহত হয়েছে।প্রাণ ভয়ে অভয়নগর উপজেলার নওয়াপাড়ায় হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ভেতরে আশ্রয় নেওয়া যুবলীগের নেতা আলমগীর হোসেন ওরফে শিমুলকে (৩৮) সকাল সাড়ে আটটার দিকে কুপিয়ে হত্যা করে হরতালকারীরা। তিনি উপজেলার নওয়াপাড়া পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ সময় আহত হয়েছেন অন্তত চারজন।অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী আবদুস সালেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
    পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলার সন্যাসী রাস্তায় সকালে হরতালের সমর্থনে জামায়াত-শিবির কর্মীরা রাস্তায় গাছ ফেলে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ সময় তাঁরা বালিপাড়া ইউনিয়নের বালিপাড়া বাজারে কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করে। পরে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে  যুবলীগ কর্মী স্বপন শীলকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরে তিনি মারা যান।জিয়ানগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিউর রহমান জানান, জামায়াত শিবিরের হামলায় যুবলীগ সদস্য স্বপন শীল নিহত হয়েছে।

    ফরিদপুর জেলার নগরকান্দায় হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংর্ঘষে  সকাল পৌনে আটটার দিকে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি মারুফ মাতুব্বর (১৯) গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।নগরকান্দা বিএনপির সভাপতি লিয়াকত হোসেন  করেন, পুলিশ বিনা প্ররোচনায় বিএনপির শান্তিপূর্ণ পিকেটিংয়ে গুলি করে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা মারুফকে হত্যা করেছে।নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ করিম বলেন, পিকেটাররা পুলিশকে ঘিরে তাঁদের ওপর হামলা চালায়। পরে পুলিশ আত্মরক্ষার্থে প্রথমে কাঁদানে গ্যাস, পরে রাবার বুলেট ও সবশেষে শটগানের ফাকা গুলি ছুড়তে বাধ্য হয়।
    ঈশ্বরদীর মুলাডুলিতে আওয়ামী লীগ ও জামায়াতের মধ্যে সংঘর্ষ, বোমাবাজি ও গোলাগুলির ঘটনায় জুলহাস হোসেন মুন্নাফ (৩০) নামের জামায়াতের একজন কর্মী নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন।জামায়াতের সেক্রেটারি আবু তালেব মণ্ডল  অভিযোগ করেন, সকালে দলীয় নেতা-কর্মীরা দাশুড়িয়া থেকে মুলাডুলি যাওয়ার পথে মুলাডুলি ইক্ষু খামারের কাছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের ওপর বোমাহামলা ও গুলি চালান। এ সময় ঘটনাস্থলে তাঁদের দলীয় কর্মী জুলহাস হোসেন নিহত হন।তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন অভিযোগ করেন, জামায়াত-শিবিরের তৈরি বোমার আঘাতেই তাঁদের কর্মী নিহত হয়েছেন।
    এদিকে দলীয় কর্মী নিহত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে মুলাডুলি বাজার, শেখপাড়া, সড়াইকান্দিসহ বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। উভয় পক্ষ গুলি ও বোমা হামলা চালায়। ঈশ্বরদী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শাহ নূর আলম পাটোয়ারী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

    বগুড়া গাবতলীতে হরতালের সমর্থনে মিছিল করাকে কেন্দ্র করে দুপুর একটার দিকে বিএনপি সমর্থিত পৌর মেয়র মোরশেদ মিলটন এবং উপজেলা চেয়ারম্যানের জাহিদুল ইসলামের সমর্থক দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় মেয়র পক্ষের ছুরির আঘাতে প্রতিপক্ষের শাহজাহান আলী (৪২) নামের এক ব্যক্তি নিহত হন।গাবতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লুত্ফর রহমান জানান, দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত একজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা গেছে।