স্ত্রীর গলা কেটে হত্যার অভিযোগে ঘাতক স্বামী গ্রেফতার

0
527
স্ত্রীর গলা কেটে হত্যার অভিযোগে ঘাতক স্বামী গ্রেফতার
স্ত্রীর গলা কেটে হত্যা মামলার পলাতক আসামী ঘাতক স্বামী গ্রেফতার



নূরুজ্জামান ফারুকী,বিশেষ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানার চাঞ্চল্যকর ও আলোচিত রাজনা বেগম হত্যা মামলার প্রধান  আসামিকে মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানা এলাকা হতে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৯।

গত ৩১ জানুয়ারি তারিখে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানার ভাড়া বাসা থেকে রাজনা বেগম (১৯) নামের এক গৃহবধূর গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়।

উক্ত ঘটনায় নিহত রাজনা বেগমের ভাই সুফি মিয়া হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ থানায় ৫ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং- ০৪, তারিখ-০২ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ইং, ধারা- ১১(ক)/৩০; ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী/২০০৩)। ইতোমধ্যে সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রচারে হত্যাকান্ডটি সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
      
এই মামলার মূল রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতারের লক্ষ্যে র‌্যাব-৯ গোয়েন্দা নজরদারীর পাশাপাশি ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে উক্ত হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত প্রধান আসামি ভিকটিমের স্বামী- জাকারিয়া, পিতা- সবুজ মিয়া, গ্রাম-বড় আলীপুর, উপজেলা- নবীগঞ্জ, জেলা-হবিগঞ্জ’কে গত ৩ ফেব্রুয়ারি তারিখ সন্ধ্যা ৬টা হতে রাত ১১ টা পর্যন্ত মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করে।  
    
গ্রেফতারকৃত আসামী জাকারিয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে তার হত্যার দায় স্বীকার করে। সে পেশায় একজন সিএনজি চালক এবং ভিকটিমের সাথে ৪ বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর গত বছর পারিবারিক সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সিএনজি কেনার কথা বলে যৌতুকের টাকার জন্য আসামী ভিকটিম এবং ভিকটিমের পরিবারকে বিভিন্ন ভাবে চাপ দিয়ে আসছিল। এরই ধারাবাহিককতায় ঘটনার দিন আনুমানিক বিকাল ৪ টায় যৌতুকের টাকার জন্য প্রথমে সে তার স্ত্রীর হাত-পা ওড়না দিয়ে বেঁধে ফেলে; ভয়-ভীতি দেখায় এবং শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। পরবর্তীতে সে তার শ্বশুর বাড়িতে ফোন দিয়ে টাকা দাবি করে এবং সিএনজি কেনা বাবদ টাকা না দিলে সে তার স্ত্রীকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করে। শ্বশুর বাড়ির লোকজন টাকা দিতে রাজী না হওয়ায়; হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সে তার স্ত্রীর মুখ ওড়না দিয়ে বেঁধে ফেলে; যাতে চিৎকার করতে না পারে এবং রান্না ঘরের ধারালো বটি-দা দিয়ে স্ত্রীর গলা কেটে হত্যা করে ঘরের বাইরে থেকে তালা দিয়ে চলে যায়। গত ১ ফেব্রুয়ারি  মধ্যরাতের দিকে বাসযোগে রওনা হয়ে ঢাকায় চলে যায়। ঢাকায় নিরাপদ আশ্রয় না পেয়ে সে তার একসময়কার কর্মস্থল মুন্সিগঞ্জের লতব্দী এলাকার ইট ভাটায় আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে গমন করে। অতঃপর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ৩ ফেব্রুয়ারি  আনুমানিক রাত ১১ টায় তাকে মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান থানার লতব্দী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়।